অস্টিওপোরোসিস বা হাড়ের ভঙ্গুরতা সম্পর্কে মানুষের সচেতনতা আজকাল বেড়েছে। এই সমস্যায় হাড়ের ঘনত্ব যায় কমে, ফলে সহজেই ভেঙে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশ্বব্যাপী বয়স্ক মানুষজনের হাড় ভেঙে শয্যাশায়ী দশা এবং এ-সংক্রান্ত জটিলতায় মৃত্যুর অন্যতম কারণ অস্টিওপোরোসিস। এতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি পুরুষদের চেয়ে নারীদেরই বেশি। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সবারই হাড়ের ঘনত্ব ও শক্তি কমতে থাকে। কিন্তু এই সমস্যা তাঁদেরই বেশি হয়, যাঁদের কম বয়সে হাড়ের শক্তি ও ঘনত্ব ঠিকমতো বাড়েনি বা সঠিক মাত্রায় পৌঁছায়নি। তাই অল্প বয়সেই হাড়ের সর্বোচ্চ শক্তি ও ঘনত্ব অর্জন করার লক্ষ্যে সচেতন হতে হবে। নইলে বেশি বয়সে হাড় ভাঙার জটিলতা থেকে রেহাই মিলবে না। কিন্তু কীভাবে অস্টিওপোরোসিস এড়াতে পারেন? ছোটবেলা থেকেই পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি-সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। গর্ভাবস্থায়, স্তন্যপান করানোর সময় এবং মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর নারীদের প্রতিদিন ১ হাজার ২০০ মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালসিয়াম খেতে হবে। পাশাপাশি এ সময় প্রয়োজনে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ডি বড়ি খেতে হবে। ধূমপান বর্জন করতে হবে। এ ছাড়া কৈশোর থেকে নিয়মিত ব্যায়াম করা চাই। এতে হাড়ের শক্তি বাড়বে। মনে রাখবেন, আপনার হাড়ের ঘনত্ব কিন্তু নির্ধারিত হয়ে যায় ২০ বছর বা তার একটু বেশি বয়সেই। তাই হাড়ের যত্ন নিতে হবে তরুণ বয়সেই। অস্টিওপোরোসিস বা হাড় ভঙ্গুর হয়ে পড়ছে কি না, তা কোনো উপসর্গ বা লক্ষণ দেখে বোঝা যায় না। এটি নীরবেই হতে থাকে। হাড় যখন ভেঙে যায়, তখনই রোগটা প্রকাশ পায়। তাই ঝুঁকি বিবেচনা করে রোগ নির্ণয়ের জন্য হাড়ের ঘনত্ব বা বোন মিনারেল ডেনসিটি পরীক্ষা করতে হয়। বৃদ্ধ বয়স, দীর্ঘমেয়াদি স্টেরয়েড-জাতীয় ওষুধ সেবন, ধূমপান, মাদকাসক্তি, ভগ্নস্বাস্থ্য, আগেও অল্প আঘাতে হাড় ভাঙার ইতিহাস ইত্যাদি হলো ঝুঁকি। রোগ শনাক্ত হলে হাড়ের ঘনত্ব বাড়ানোর চিকিৎসা নেওয়া যেতে পারে। তবে এর চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই অধিক কার্যকর। তাই নিজের হাড়কে ভালোবাসুন, ভবিষ্যৎকে মজবুত করুন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.