
টঙ্গীর টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেডের বিধ্বস্ত কারখানা ভবনের একাংশ। এখনো ধ্বংসস্তূপ সরানোর কাজ চলছে প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব উদ্যোগে l
শেষ বয়সে পরিবার নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গোবিন্দ চন্দ্র দাস। জীবনভর শ্রমিকের কাজ করে যিনি ছয় সন্তানের পরিবারকে টেনেছেন, সেই তিনিই এখন দুই বেলা খাবার জোটাতে হিমশিম খাচ্ছেন।
টঙ্গীর শিল্পকারখানা টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেডের জ্যেষ্ঠ সহকারী ছিলেন গোবিন্দ। খাদ্য ও কসমেটিক পণ্য মুড়ে রাখার অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল প্রস্তুতকারী এই কারখানা গত ১০ সেপ্টেম্বর সকালে এক ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর আগুনেপুড়ে যায়। এ ঘটনায় ৪২ জন নিহত হয়েছেন, যাঁর মধ্যে কারখানার কর্মী ৩৯ জন। আহত হন কমপক্ষে ৪০ জন।
এ দুর্ঘটনায় পুরো কারখানাটি ধ্বংস হয়ে গেছে। শ্রমিক-কর্মচারী-কর্মকর্তা মিলিয়ে মোট ২৬৪ জন এখন বেকার। পরিবার নিয়ে তাঁরা এখন বিপাকে পড়েছেন।
নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবার এবং বেকার কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দুর্ঘটনার পর টাম্পাকো কর্তৃপক্ষ তাদের কারও পাশে দাঁড়ায়নি। কোনো ধরনের আর্থিক সহায়তা করেনি। এমনকি কোনো খোঁজও নেয়নি।
দুর্ঘটনার পর থেকে মামলার কারণে গ্রেপ্তার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছেন কারখানার মালিকেরা। তবে কারখানা এলাকায় গিয়ে আভাস পাওয়া যায়, আড়ালে থেকে কারখানার ধ্বংসস্তূপ অপসারণের কাজ চালিয়ে নিচ্ছেন তাঁরা। ধ্বংসস্তূপ অপসারণে এরই মধ্যে তাঁরা ঠিকাদার নিয়োগ দিয়েছেন। কারখানারই কিছু কর্মকর্তা সবকিছু তদারক করছেন।
পুলিশ কারখানার মালিক মকবুল হোসেন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহম্মেদসহ কারখানার মোট ১০ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ কয়েকটি অভিযোগে মামলা করে। মকবুল হোসেন সিলেট-৬ আসনের সাবেক সাংসদ। গত এক মাসেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তারা বলছে, আসামির ঠিকানাই তারা জোগাড় করতে পারছেন না।
মামলার অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তদন্তকারী কর্মকর্তা টঙ্গি থানার উপপরিদর্শক সুব্রত ভক্ত বলেন, ‘অভ্যন্তরীণ অগ্রগতি আছে। মামলায় যেহেতু আসামিদের স্থায়ী ঠিকানা নেই এবং আগুনে কারখানার সব কাগজপত্র পুড়ে গেছে, তাই আসামিদের ঠিকানা এখনো জোগাড় করা সম্ভব হয়নি। কারখানার কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ঠিকানা জোগাড়ের চেষ্টা চলছে। ঠিকানা না পাওয়ায় তাঁদের খুঁজেও পাওয়া যাচ্ছে না।’
এক সাবেক সাংসদের ঠিকানা খুঁজে না পাওয়ার কারণ জানতে চাওয়া হলে গাজীপুরের পুলিশ সুপার হারুন অর রশীদ ফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। মামলার তদন্ত কাজও চলছে।
দুর্ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে ফায়ার সার্ভিস, গাজীপুর জেলা প্রশাসক এবং শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে পৃথক তিনটি কমিটি গঠন করা হয়। এর মধ্যে শুধু শিল্প মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটি প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কিন্তু ঘটনার কারণ সম্পর্কে তারা কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
মামলায় হত্যার অভিযোগ
টঙ্গী মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) অজয় কুমার চক্রবর্তী বাদী হয়ে ঘটনার ছয় দিন পর একটি মামলা করেন। এতে কারখানার মালিকের বিরুদ্ধে হত্যাসহ সাত ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, কারখানা ভবনটি চার বছর আগে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে। তাই এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল এবং কারখানার বয়লার বা গ্যাসলাইন ত্রুটিপূর্ণ ছিল। তা জেনেও কারখানার মালিক এবং ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, উপস্থিত শ্রমিক ও সাধারণ লোকজন জানিয়েছেন, কারখানার গ্যাসের পাইপলাইন কয়েক দিন ধরে ফুটো (লিক) ছিল, যা মালিক এবং কর্তৃপক্ষকে বলার পরও মেরামতের কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
বিপাকে কারখানার কর্মীরা
গোবিন্দ চন্দ্র দাস তাঁর পরিবার নিয়ে টঙ্গীর মরকুল পূর্বপাড়া এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকেন। গত বৃহস্পতিবার টাম্পাকো ফয়েলস লিমিটেড থেকে ৩ কিলোমিটার দূরে গোবিন্দের বাসায় গেলে তাঁকে পাওয়া যায়নি। পারিবারিক কাজে ফরিদপুরে তিনি গ্রামের বাড়ি গেছেন। গোবিন্দের স্ত্রী শেফালী রানী দাস বলেন,শ্রমিকের কাজ করেতাঁর স্বামী পাঁচ মেয়ের মধ্যে চারজনের বিয়ে দিয়েছেন। কোনো সঞ্চয় নেই তাঁদের। এক মেয়ে আর এক ছেলে নিয়ে এখন চারজনের পরিবার তাঁদের। স্বামীর কাজ না থাকায় এখন দোকান থেকে বাকিতে জিনিসপত্র কিনছেন। কিন্তু এরই মধ্যে দোকানদারও বকেয়া টাকা চাচ্ছেন।
মুঠোফোনে গোবিন্দ দাস বলেন, গত এক মাসের বাড়ি ভাড়াও তিনি দিতে পারেননি। এই বয়সে কী কাজ খুঁজবেন বুঝে উঠতে পারছেন না। আক্ষেপ করে বলেন, ‘এত বছর কারখানায় কাজ করলাম, কিন্তু ঘটনার পর কেউ এক দিন খোঁজও নিল না।’
দুর্ঘটনায় আহত হয়েছিলেন কারখানার সহকারী অপারেটর মো. সামাদুজ্জামান খান। দুর্ঘটনার আগেই বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক করে ফেলায় ঘটনার পরপরই বিয়ের পিঁড়িতে বসতে হয় তাঁকে। কিন্তু সংসার শুরু করেই থমকে আছে তাঁর সবকিছু। চাকরি না থাকায় কীভাবে সংসার চালাবেন, তা ভেবেই তিনি এখন দিশেহারা। সামাদুজ্জান বলেন, আহত হওয়ায় জেলা প্রশাসন থেকে কেবল ১০ হাজার টাকা সহায়তা পেয়েছেন তিনি। এ ছাড়া আর কোনো সহায়তা পাননি।
বিস্ফোরণের ধাক্কায় আহত হয়েছিলেন মেশিন অপারেটর মো. ফেরদৌস আলম। হঠাৎ বেকার হয়ে যাওয়ায় পরিবার নিয়ে লালমনিরহাটে গ্রামের বাড়ি ফিরে গেছেন।
এই তিনজন ছাড়া আরও আটটি পরিবারের সঙ্গে কথা হয়েছে । তাঁরা প্রত্যেকেই চাকরি হারিয়ে নিজেদের অসহায়ত্বের কথা জানিয়েছেন এই প্রতিবেদককে। বিপর্যয়ে পর কারখানা থেকে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় তাঁরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
নিখোঁজ শ্রমিক ও অশনাক্ত লাশ
টাম্পাকোর দুর্ঘটনায় অন্তত ১০ জন নিখোঁজ বলে তাঁদের পরিবার দাবি করছে। অথচ ধ্বংসস্তূপ থেকে উদ্ধার হওয়া লাশের মধ্যে নয়টি লাশের পরিচয় এখনো পাওয়া যায়নি। অর্থাৎ একটি লাশ এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি।
ঘটনার দিন থেকে নিখোঁজ রয়েছেন কারখানার অপারেটর রফিকুল ইসলাম। গত বৃহস্পতিবার গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে তাঁর স্ত্রী নারগিস আক্তারের সঙ্গে দেখা হয় গাজীপুর প্রতিনিধির। তিনি বলেন, তাঁদের গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর থানার মেছোয়া গ্রামে। স্বামী ও তিন সন্তানকে নিয়ে গাজীপুরের টঙ্গীর মরকুন তিস্তার গেট এলাকায় ভাড়া থাকতেন। তাঁদের সংসারে দুই ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি নিজে অসুস্থ। স্বামী তাঁকে নিয়মিত চিকিৎসা করাতেন। স্বামী না থাকায় এখন চিকিৎসা নিয়ে আর ভাবছেন না।
নারগিস বলেন, ‘ও শেষবার বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় বলেছিলেন, তোমাকে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যাব, তুমি সুস্থ হয়ে যাবে। কিন্তু আমার আর ডাক্তারের কাছে যাওয়া হলো না।’
টঙ্গী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ তালুকদার বলেন, অজ্ঞাত লাশগুলো ও লাশের দাবিদারদের ডিএনএ পরীক্ষা করা হয়েছে। ফলাফল আসতে দুই থেকে আড়াই মাস সময় লাগবে। ফলাফল পাওয়া গেলেই লাশগুলো হস্তান্তর করা হবে।
টাম্পাকোর বর্তমান অবস্থা
দুর্ঘটনার পর সেনাবাহিনীর একটি দল টাম্পাকোর ধ্বংসস্তূপের উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করে। গত ১০ অক্টোবর কারখানায় আর কোনো লাশ না থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ায় ধ্বংসস্তূপ অপসারণ ও উদ্ধার অভিযান শেষ ঘোষণা করে তারা। এরপর ধ্বংসস্তূপ অপসারণের কাজ শুরু করে কারখানা কর্তৃপক্ষ।
গত বৃহস্পতিবার কারখানাটিতে গিয়ে দেখা যায়, ধ্বংসস্তূপ অপসারণে শ্রমিকেরা কাজ করছেন। কারখানার এক কোনার একটি কক্ষ থেকে কিছু জিনিস বের করে নিয়ে যাচ্ছেন কয়েকজন কর্মকর্তা। সেখানে কথা হয় কারখানার উৎপাদন তত্ত্বাবধায়ক হাবিবুর রহমান, মো. আব্দুস সালাম ও মালামাল বিতরণ তত্ত্বাবধায়ক মো. নাজিমউদ্দীনের সঙ্গে।
হাবিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা আদালতের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছি। মালিকসহ যাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে, তাঁরা জামিন পেলে সামনে আসতে পারবেন। তখন আমাদের কর্মসংস্থান হবে বলে আমরা আশা করছি।’
এই তিনজনই দাবি করেন, মালিক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ নেই। নিজ উদ্যোগেই তাঁরা কারখানার দেখাশোনা করছেন।
কারখানার ধ্বংসস্তূপ অপসারণের কাজ করছে ‘মা ট্রেডার্স’ নামে স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির মালিকের ভাই বিল্লাল হোসেনের সঙ্গে কথা হয় সেখানে। তিনি বলেন, আগে কারখানার আবর্জনা অপসারণের কাজ করতেন তাঁরা। ধ্বংসস্তূপ অপসারণের কাজটি কারখানার মালিকই তাঁদের দিয়েছেন।
তিনটি ভবন ধসে গেলেও টাম্পাকোর একটি পাঁচতলা ভবন এখনো দাঁড়িয়ে আছে ধ্বংসস্তূপের মধ্যে। আগুনে ভবনটির সবকিছুই পুড়ে শেষ। এরই দ্বিতীয় তলায় বয়লার কক্ষটিতে এই প্রতিবেদককে নিয়ে যান উৎপাদন তত্ত্বাবধায়ক আবদুস সালাম। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, তিনটি বয়লারের সব কটিই পুড়ে গেছে। তবে কোনোটিই বিস্ফোরিত হয়নি।
এই কর্মকর্তা জানান, মোট ৩০৩ জন শ্রমিক ও কর্মকর্তা কারখানাটিতে কাজ করতেন। ঘটনায় মারা গেছেন ৩৯ জন। বাকি ২৬৪ জনের সবাই এখন বেকার।
দুর্ঘটনার কারণ কী হতে পারে জিজ্ঞেস করলে হাবিবুর রহমান বলেন, কারখানার গ্যাস-সংযোগ ৬ ইঞ্চি একটি পাইপ দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঈদের আগে আশপাশের অনেক কারখানাই বন্ধ হয়ে যায়। তাই গ্যাসলাইনে গ্যাসের চাপ বেশি ছিল। গ্যাস থেকেই কিছু একটা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন।
শ্রমিকদের সহায়তা
দুর্ঘটনার পরপর আহত ও নিহত শ্রমিকদের পরিবারকে সহায়তার আশ্বাস দেয় জেলা প্রশাসন ও শ্রম মন্ত্রণালয়। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসন নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ২০ হাজার ও আহত ব্যক্তিদের ১০ হাজার টাকা করে সহায়তা দিয়েছে।
গাজীপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা শাখার প্রধান সহকারী এস এম সোলায়মান তালুকদার প্রথম আলোকে বলেন, দুর্ঘটনার পর কারখানা চৌহদ্দির ভেতর থেকে মোট ৩৯টি লাশ উদ্ধার করা হয়। একটি লাশ পাওয়া যায়নি। এর মধ্যে ৩১ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। আটজনের লাশ শনাক্ত করতে ডিএনএ টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া আসমা নামে এক পথচারী ও একজন রিকশাওয়ালাও নিহত হয়েছেন।
সোলায়মান বলেন, দুর্ঘটনায় নিহত মোট ৪২ জনের মধ্যে ইতিমধ্যে শনাক্ত হওয়া ৩১ জনের পরিবারকে এবং আহত ৭ জনকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। বাকি আহত ৭ জনের সহায়তা প্রক্রিয়াধীন।
শ্রম মন্ত্রণালয়ের সহায়তার বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের সচিব মিকাইল শিপার বলেন, নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ২ লাখ এবং আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসা খরচ বাবদ সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়া হবে। আমরা এখন পর্যন্ত মাত্র ১৮ জনের তালিকা পেয়েছি। তালিকা পূর্ণাঙ্গ করার কাজ চলছে।
তদন্ত কমিটি কী করছে
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উপপরিচালক (প্রশাসন ও অর্থ) মো. বদিউজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘টাম্পাকোতে বহুমুখী বিপর্যয় হয়েছে। এখানে ভবন ধসে পড়েছে, রাসায়নিক দ্রব্যের বিস্ফোরণ হয়েছে, গ্যাসের সংযোগও ছিল। এ ধরনের ঘটনার প্রকৃত কারণ উদ্ঘাটনের জন্য যে ধরনের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও স্বাবলম্বিতা প্রয়োজন, তা আমাদের নেই। আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন, প্রত্যক্ষদর্শীদের জবানবন্দি নিয়েছি। এ ছাড়া বয়লার অধিদপ্তর, গ্যাস কর্তৃপক্ষ ও বিস্ফোরক পরিদপ্তরসহ আরও অনেকের মতামত চেয়েছি। তাঁদের কেউ কেউ মতামত দিয়েছেন। কেউ কেউ দেননি।’
ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে উপপরিচালক স্পষ্ট কোনো জবাব দেননি। তিনি বলেন, ‘সবার মতামত নিয়ে আমরা একটি প্রতিবেদন তৈরির চেষ্টা করছি, যেখানে ভবিষ্যতে যাতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটে, সে-সংক্রান্ত সুপারিশমালা থাকবে।’
ঘটনার দিনই অর্থাৎ ১০ সেপ্টেম্বর এই কমিটি গঠন করা হয়েছিল এবং তাঁদের ১০ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল। এ সম্পর্কে উপপরিচালক বলেন, ‘১০ কার্যদিবস এখনো শেষ হয়নি। আগামী সপ্তাহেই আমরা প্রতিবেদন দিয়ে দেব।’
শিল্প মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির আহ্বায়ক মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. দাবিরুল ইসলাম বলেন, ‘প্রতিবেদন সচিব মহোদয়ের কাছে জমা দিয়েছি।’ দুর্ঘটনার কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। সময়মতো জানানো হবে।’
দাবিরুল বলেন, ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভা থেকে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সুপারিশমালা তৈরির জন্য তাঁকে প্রধান করে আরেকটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসন কর্তৃক গঠিত তদন্ত কমিটির বিষয়ে জেলা প্রশাসক এস এম আলম বলেন, তদন্ত কমিটির প্রধান জানিয়েছেন, প্রতিবেদনের খসড়া প্রস্তুত হয়েছে। আগামী সপ্তাহেই তিনি জমা দেবেন।