দিনের শুরুতে প্রাপ্তি ছিল ৪ ম্যাচ পর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে টস জেতা। তিন ওয়ানডের পর প্রথম টেস্টেও টসে হেরেছিল বাংলাদেশ। তাই টসে জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন মুশফিকুর রহীম। কিন্তু শুরুর আনন্দ মিলিয়ে যায় ইমরুল কায়েসের আউটে। রান তখন সবে ১। সেখানে থেকে তামিম ইকবাল ও মুমিনুল হকের ১৭০ রানের জুটি। তামিম সেঞ্চুরি করে আউট হন। এরপর মুমিনুলও উইকেটে টিকেননি বেশিক্ষণ। টানা ৯ ইনিংসে ফিফটি ঊর্ধ্ব রান করে রেকর্ড গড়া এই ব্যাটসম্যান ফের ফিফটির দেখা পেলেন ৬ ইনিংস পরে। তবে গতবছর পাকিস্তানের বিপক্ষে ৬৮ রানের ইনিংস ছাড়িয়ে জেতে পারলেন না। আউট হলেন ৬৬ রান করে। এই দুজনের দারুণ ব্যাটিংয়ে মনে হচ্ছিল অনায়াসেই বাংলাদেশ দল ৩শ’ ছাড়িয়ে যাবে। কিন্তু তামিমের সেঞ্চুরির উইকেটে এক বিকালে হলো ১২ উইকেটের পতন। ২ উইকেটে ১৯০ রান থেকে ২২০ মাত্র ৩০ রানে গুটিয়ে গেলো বাংলাদেশ। জবাব দিতে নেমে ইংল্যান্ড ৪২ রানে ৩ উইকেট হারায়। দিন শেষে সংবাদ সম্মেলনে তামিম ইকবালের কণ্ঠে ঝরলো আরো ১০০ রানের আক্ষেপ। কারণটাও ব্যাখ্যা দিলেন দিনের সেঞ্চুরিয়ান। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি আরো ১০০টি রান হলে পরিস্থিতি অন্যরকমই থাকতো। আমি বারবার একশ’ রান, একশ’ রান বলছি আসলে উইকেটের কারণেই। আমার ধারণা এই উইকেট আরো খারাপ হবে। যদি দিন শেষে বৃষ্টি না হতো তাহলে ইংল্যান্ডের আর একটি উইকেট হয়তো পড়তো। আমাদের শেষের ব্যাটসম্যানরা যদি ভুল না করতো তাহলে ওদের আরো চাপে রাখা যেত।’ মাত্র ৩০ রানে ৮ উইকেট পতন টেস্ট ক্রিকেটে মেনে নেয়া খুবই কঠিন। এই জন্য অবশ্য ইংল্যান্ডের বোলারদেরও কৃতিত্ব দিলেন তামিম ইকবাল। সেই সঙ্গে নিজেদের ভুল সম্পর্কে তামিম বলেন, ‘আসলে এমন হয়ে যায়। এটি সত্যি যে ইংল্যান্ডের বোলাররাও বেশ ভালো বল করছে। ওদের বোলাররাই আসলে ম্যাচটি ঘুরিয়ে দিয়েছে। তবে আমি বলবো আমাদের আরো একটু সতর্ক থাকা উচিত ছিল।’ নিজের আউট হওয়াটা মেনে নিতে পারছেন না তামিম নিজেও। নিজের ভুল স্বীকার করে নিয়ে বলেন, ‘আসলে এমন তিনটা বল আমি ছেড়ে দিয়েছিলাম। আসলে বলের লাইনে আমি পা নিতে চাচ্ছিলাম না। চলে যাচ্ছিল, কী বলবো আউট হওয়াটা আসলে আমারই ভুল ছিল। আমি যদি শটও খেলতাম তাহলেও আউট হতাম না। আসলে এই ভুলের কোনো ব্যাখ্যা নেই। মুমিনুলের আউটটাও তাই বলবো। আসলে আমরা ৩০টা ওভার খেলে ফেলেছিলাম। আমাদের আসলে আরো ভালো ভাবে খেলা উচিত ছিল।’ ধারণা করা হচ্ছিল ঢাকায় চট্টগ্রামের মতো স্পিন সহায়ক উইকেটই হবে। কিন্তু তামিম-মুমিনুল উইকেটে ব্যাট করার সময় তা মনেই হচ্ছিল না। উইকেট সম্পর্কে তামিম বলেন, ‘আসলে আমরা যখন ব্যাটিং শুরু করেছিলাম তখন উইকেট বেশ কঠিন ছিল। প্রথম ৫-১০টি ওভার খেলা যাচ্ছিল না। কিন্তু ধীরে ধীরে বল ব্যাটে আসতে শুরু করে। আমরা প্রচুর শট খেলতে থাকি। লাঞ্চের পর থেকে আবার উল্টো আচরণ করতে শুরু করে। এর পরই কঠিন হয়ে যায়।’ তবে নিজেদের বাজেভাবে আউট হওয়ার কারণ হিসেবে উইকেটকে অযুহাত করে দাঁড় করাতে চান না তামিম। তিনি বলেন, ‘আসলে এত কম রানে ৭-৮ জন ব্যাটসম্যান আউট হওয়া মেনে নেয়া যায় না। এখানে উইকেটের দোষ দিয়ে লাভ নেই। আমাদের ব্যাটিং ইউনিটেরই ভুল ছিল। এর কোন ব্যাখ্যাও নেই।’ দিন শেষে ইংল্যান্ড এখনও পিছিয়ে আছে ১৭০ রানে। হাতে আছে ৭ উইকেট। এই পরিস্থিতিতে দ্বিতীয় দিন দলের করণীয় নিয়ে তামিম বলেন, ‘যা হওয়ার হয়েছে। এখন আমাদের ২২০ রান নিয়ে লড়াই করতে হবে। আমরা বল হাতে দারুণ শুরু করেছি। যদিও রানটা একটু বেশি হয়ে গেছে। কিন্তু কাল (আজ) সকালে আমাদের লক্ষ্য থাকবে যত দ্রুত সম্ভব ওদের আউট করে ম্যাচে ফিরে আসা।’ সব শেষে নিজের সেঞ্চুরি নিয়ে বলেন, ‘আমার কাছে নিজের সব সেঞ্চুরিই স্পেশাল। কোনোটার চেয়ে কোনোটা কম নয়। তাই তুলনা করতে চাই না।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.