টেস্ট ক্রিকেটে ব্যাটিং বিপর্যয় হরহামেশাই হয়ে থাকে। তবে এমন ব্যাটিং বিপর্যয় খুব কমই দেখেছে ক্রিকেট দুনিয়া। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনে শুরুটা দারুণ করলে শেষটা একেবারেই বাজে হয়েছে বাংলাদেশের। ১ উইকেটে ১৭১ রান করার পর পরের ৪৯ রান করতেই শেষ নয় উইকেট হাওয়া স্বাগতিকদের। টেস্টে ৩৩ বার ১০০ রানের নিচে বাংলাদেশের শেষ ৯ উইকেট পড়েছিল। সে হিসাবে এমন ধস নতুন কিছু নয়। তবে ১ উইকেটে ১৭১ রানের মতো বড় পুঁজি নিয়ে এভাবে গুটিয়ে যাওয়ার ঘটনা খুব বেশি ঘটেওনি। বাংলাদেশের বেলায়তো নয়ই। অবস্থানের দিক থেকে বিচার করলে টেস্টে ক্রিকেটে এটি তৃতীয় ঘটনা। ক্রিকেট বিশ্ব ২০০৯ সালে টেস্ট ক্রিকেটে সবচেয়ে বড় ব্যাটিং বিপর্যয় দেখেছিল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচে পাকিস্তান প্রথমে এক উইকেট হারিয়ে ২৮৫ রান করেছিল। ৩৫ রান তুলতেই বাকি নয় উইকেট হারিয়ে বসে তারা। টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসে এমন ধস ক্রিকেট দুনিয়া প্রথম দেখেছিল ১৯৬০ সালে। সেটিও অবশ্য পাকিস্তানের। ভারতের বিপক্ষে সে ম্যাচে পাকিস্তান প্রথমে ৩০১ রান করেছিল এক উইকেট হারিয়ে। তারা বাকি নয় উইকেট হারায় ৪৯ রানে। কাল মিরপুরে প্রথম উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা করেছিল ১৭১ রান। সেখান থেকে মাত্র ২২০ রানে অল আউট হয়ে গেলো বাংলাদেশ। মজার বিষয় এই তিনটি চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ের রেকর্ড হয়েছিল এই উপমহাদেশেই। পাকিস্তানের পথ ধরে এবার বাংলাদেশও সেই রেকর্ড গড়লো। টেস্ট ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে শেষ ৯ উইকেট পড়ার সাক্ষী হয়ে আছে ১৮৯৯ সালের কেপটাউন টেস্ট। সেবার ইংল্যান্ডের বিপক্ষে দ্বিতীয় ইনিংসে ভয়াবহ বিপর্যয়ে পড়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। স্বাগতিকেরা মাত্র ১৪ রানে হারিয়ে ফেলেছিল শেষ ৯ উইকেট। অল আউট হয়ে গিয়েছিল ৩৫ রানে। গতকাল ৪১ ওভার বল করে মাত্র একটি উইকেট পেয়েছিল ইংলিশ বোলাররা। তারাই পরের ২৩.৫ ওভারে তুলে নিলো ৯ উইকেট। শেষ ৯ উইকেট পড়েছে মাত্র ৪৯ রানে। টেস্ট অভিষেকের পর এর চেয়ে কম রানে শেষ ৯ ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ফেলার ব্যর্থতায় বাংলাদেশ পড়েছিল মাত্র দুইবার। ২০১৩ সালের হারারে টেস্টে বাংলাদেশের শেষ ৯ উইকেট পড়েছিল মাত্র ৩২ রানে। ১ উইকেটে ১০২, সেখান থেকেই বাংলাদেশ গুটিয়ে গেলো ১৩৪ রানে। ২০০৭ সালে কলম্বো টেস্টেও ভয়াবহ ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়েছিল বাংলাদেশ। ৯ উইকেট পড়েছিল মাত্র ৪৮ রানে। সেবার প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অল আউট হয়েছিল ৬২ করতেই। যেটি এখনও টেস্টে বাংলাদেশের সর্বনিম্ন স্কোর। বাংলাদেশ আর কখনই ৫০ রানের কমে শেষ ৯ ব্যাটসম্যান হারায়নি। তবে ২০০৫ সালে কলম্বোতেই ৫১ রানের মধ্যে শেষ ৯ জনের সাজঘরে ফেরার সাক্ষী হতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। শতাধিক রানের জুটির পর দ্রুত নয় উইকেট পতন দেশ প্রতিপক্ষ ১উইকেটে রান অলআউট ৯ উইকেটে রান পাকিস্তান শ্রীলঙ্কা ২৮৫ ৩২০ ৩৫ পাকিস্তান ভারত ৩০১ ৩৫০ ৪৯ বাংলাদেশ ইংল্যান্ড ১৭১ ২২০ ৪৯ স্কোর কার্ড (প্রথম দিন) বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড দ্বিতীয় টেস্ট শেরেবাংলা স্টেডিয়াম, মিরপুর টস: বাংলাদেশ (ব্যাটিং) বাংলাদেশ ১ম ইনিংস খেলোয়াড় রান বল ৪ ৬ তামিম এলবি মঈন ১০৪ ১৪৭ ১২ ০ ইমরুল ক ডাকেট ব ওকস ১ ৩ ০ ০ মুমিনুল ব মঈন ৬৬ ১১১ ১০ ০ মাহমুদুল্লাহ ক কুক ব স্টোকস ১৩ ২৬ ১ ১ সাকিব ক বেয়ারস্টো ব ওকস ১০ ৩২ ০ ০ মুশফিক ক কুক ব মঈন ৪ ১২ ০ ০ সাব্বির ক বেয়ারস্টো ব স্টোকস ০ ৬ ০ ০ শুভাগত ক বেয়ারস্টো ব স্টোকস ৬ ১৮ ১ ০ মিরাজ এলবি মঈন ১ ৬ ০ ০ তাইজুল অপরাজতি ৫ ১২ ১ ০ কামরুল ক রুট ব মঈন ০ ১০ ০ ০ অতিরিক্ত: (ব ১, লব ৯) ১০ মোট: (৬৩.৫ অলআউট) ২২০ উইকেট পতন: ১-১ (ইমরুল), ২-১৭১ (তামিম), ৩-১৯০ (মুমিনুল), ৪-১৯ (মাহমুদুল্লাহ), ৫-২০১ (মুশফিক), ৬-২০২ (সাব্বির), ৭-২১২ (শুভাগত), ৮-২১৩ (মিরাজ), ৯-২১৫ (সাকিব), ১০-২২০ (কামরুল)। বোলিং: ওকস ৯-৩-৩০-১, ফিন ৮-১-৩০-০, মঈন ১৯.৫-৫-৫৭-৫, আনসারি ৬-০-৩৬-০, স্টোকস ১১-৫-১৩-২, আদিল ১০-০-৪৪-১০। ইংল্যান্ড ১ম ইনিংস কুক এলবি মিরাজ ১৪ ১২ ৩ ০ ডাকেট ক মুশফিক ব সাকিব ৭ ৫ ০ ১ রুট অপরাজিত ১৫ ৩৩ ২ ০ ব্যালান্স ক মুশফিক ব মিরাজ ৯ ১৮ ২ ০ মঈন অপরাজিত ২ ৭ ০ ০ অতিরিক্ত: (ব ১, লব ২) ৩ মোট: (৩ উইকেট, ১২.৩ ওভার) ৫০ উইকেট পতন: ১-১০ (ডাকেট), ২-২৪ (কুক), ৩-৪২(ব্যালান্স) বোলিং: মিরাজ ৬.৩-১-২৬-২, সাকিব ৬-২-২১-১ অবস্থা: ৭ উইকেট হাতে নিয়ে ১৭০ রানে পিছিয়ে ইংল্যান্ড অভিষেক: জাফর আনসারি (ইংল্যান্ড)
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.