ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সিরিজের শেষ টেস্টে অনন্য এক রেকর্ডের সামনে ছিল পাকিস্তান। ক্রিকেট ইতিহাসে কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ এখন পর্যন্ত কোনো দল ৯-০ ব্যবধানে জিততে পারেনি। কিন্তু পাকিস্তান ছিল এমন এক রেকর্ডের সামনে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৩ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারানোর পর ৩ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজও হারায়। এরপর তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম দুটি জেতে তারা। শেষ টেস্ট জিতলেই এই সিরিজ ৯-০ ব্যবধানে জিততে পারতো ছিল পাকিস্তান। কিন্তু সেটা সম্ভব হলো না। জয় দূরে থাক, ড্রও করতে পারেনি তারা। শারজায় সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টেস্ট ৫ উইকেটে জিতে নিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এতে আমিরাতের পুরো সফরটা দুঃস্বপ্নের মধ্য দিয়ে কাটলেও জয়ে শেষ করলো ক্যারিবীয়রা। ২০০৭ সালের পর নিজেদের ও বাংলাদেশের মাটি ছাড়া অন্য কোথাও টেস্ট জিতলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এছাড়া টানা ১৪ টেস্ট পর জয়ের দেখা পেলো তারা। একই সঙ্গে নয়া অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের অধীনে প্রথম জয়ের স্বাদ পেলো ক্যারিবীয়রা। শারজায় টেস্টের প্রথম ইনিংসে পাকিস্তান ২৮১ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৩৩৭ রানে অলআউট হয়। ৫৬ রানে পিছিয়ে থেকে এরপর দ্বিতীয় ইনিংসে ২০৮ রানে অলআউট হয় পাকিস্তান। এতে চতুর্থ ইনিংসে জয়ের জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজের সামনে টার্গেট দাঁড়ায় ১৫৩ রানে। এই রান তাড়া করে পঞ্চম দিনে সকালেই ৫ উইকেটে জয় নিশ্চিত করে ক্যারিবীয়রা। পাকিস্তানের বোলারদের দাপটে চতুর্থ দিন জমে ওঠে ম্যাচ। মামুলি টার্গেট সামনে নিয়ে মাত্র ৬৭ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে ফেলে তারা। পাকিস্তান তখন জয়ের স্বপ্ন দেখছিল। কিন্তু চতুর্থ দিনের শেষ বেলায় তাদের কাছ থেকে স্বপ্ন দূরে নিয়ে যেতে থাকেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই ব্যাটসম্যান ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট ও শন ডরিচ। চতুর্থ দিন তারা যথাক্রমে ৪৪ ও ৩৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। ষষ্ঠ উইকেটে ৪৭ রানে অবিচ্ছিন্ন থাকেন তারা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ১১৪ রান। জয় থেকে তারা তখনো ৩৯ রান দূরে ছিল। পঞ্চম দিন সকালে নাটকীয় কিছু ঘটার অপেক্ষায় ছিল পাকিস্তানের সমর্থকরা। কিন্তু নাটকীয় কিছু হলো না। আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান এদিন ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়েন। সকালে এক ঘণ্টার মধ্যে ৭.২ ওভারেই জয় নিশ্চিত করেন ব্র্যাথওয়েট ও ডরিচ। ষষ্ঠ উইকেটে তারা অবিচ্ছিন্ন থাকেন ৮৭ রানে। উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ব্র্যাথওয়েট ও ডরিচ- দু’জনই অপরাজিত থাকেন ৬০ রানে। ব্র্যাথওয়েট যেখানে একমাত্র
স্পোর্টস ডেস্ক: শারজায় অনন্য এক রেকর্ড গড়েছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট। প্রথম ইনিংসে ১৪২ রানে অপরাজিত থাকার পর দ্বিতীয় ইনিংসেও তিনি ৬০ রানে অপরাজিত থাকেন। ইতিহাসে প্রথম ওপেনার হিসেবে কোনো টেস্টের দুই ইনিংসেই অপরাজিত থাকলেন তিনি। এছাড়া ২০০৪ সালের পর দেশের বাইরে শীর্ষ আট দলের কোনোটির বিপক্ষে ওয়েস্ট ইন্ডিজের উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান দুই ইনিংসের একটিতে সেঞ্চুরি ও অন্যটিতে ফিফটি হাঁকালেন। সেবার সেঞ্চুরিয়নে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ক্রিস গেইল দুই ইনিংসে ৭৭ ও ১০৭ রান করেন। ২৩ বছর বয়সী ব্র্যাথওয়েট শারজাহ্ টেস্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন। শেষ পাঁচ বছরে এই নিয়ে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে সর্বোচ্চ চারবার ম্যাচসেরা খেলোয়াড় হলেন। বাংলাদেশের ক্ষতি
পাকিস্তানের এই হারে ‘ক্ষতি’টা হয়েছে বাংলাদেশের। ওয়েস্ট ইন্ডিজ এই ম্যাচ হারলে বাংলাদেশ টেস্ট র্যাঙ্কিংয়ের অষ্টম স্থানে উঠে যেতো। আর ক্যারিবীয়রা নেমে যেতো নবম স্থানে। কিন্তু ওয়েস্ট ইন্ডিজ জেতায় সেটা আর হলো না। অষ্টম ও নবম স্থানে থাকা যথাক্রমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও বাংলাদেশের রেটিং পয়েন্ট এখন ৬৯ ও ৬৫। সংক্ষিপ্ত স্কোর পাকিস্তান: ২৮১ ও ২০৮ ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৩৩৭ ও ১৫৪/৫ (ব্র্যাথওয়েট ৬০*, জনসন ১২, স্যামুয়েলস ১০, ডরিচ ৬০*, রিয়াজ ২/৪৬, ইয়াসির ৩/৪০) টস: পাকিস্তান (ব্যাটিং) ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৫ উইকেটে জয়ী ম্যাচসেরা: ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ পাকিস্তান ২-১ সিরিজ সেরা: ইয়াসির শাহ
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.