হিলারি ক্লিনটন শিবিরের ইমেইল ফাঁস করেছে উইকিলিকস। এর মধ্যে কিছু তার নিজের ইমেইল। আর কিছু তার মিত্র ও সহযোগীদের। এসব ইমেইল থেকে বেরিয়ে এসেছে অনেক কিছুই। জন্ম নিয়েছে অনেক সমালোচনা আর বিতর্কের। তবে এসব ইমেইল থেকে হাফিংটন পোস্টের এক প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে এমন কিছু ইমেইল, যেখানে হিলারির এক মানবিক রূপই প্রকাশ পায়। একটি ইমেইলে দেখা যায়, পররাষ্ট্রমন্ত্রী থাকাকালে হিলারি ১০ বছর বয়সী এক ইয়েমেনি মেয়েকে সাহায্যের চেষ্টা করছেন। তিনি নিজে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তাকে ইমেইলে লিখেন: ‘তুমি কি নুরি আলির কথা মনে করতে পারো? ১০ বছর বছর বয়সী মেয়েটা যে নিজেই বিবাহ বিচ্ছেদ করেছিল। তার সঙ্গে গত বছর গ্ল্যামার অ্যাওয়ার্ডসে আমার দেখা হয়েছিল। গত কয়েক দিন ধরে সিএনএন-এ একটা প্রতিবেদন চলছে তাকে নিয়ে। সেখানে দেখানো হচ্ছে, সে কতটা অসুখী। এখনও সে নিজের ঘরে বসবাস করছে। স্কুলেও পড়ছে না। আর সে বেশ রাগান্বিত যে তার জীবনের উন্নতি হয়নি এতটুকু। তাকে সাহায্য করার কি কোন উপায় আছে আমাদের? আমরা কি তাকে যুক্তরাষ্ট্রে আনতে পারি কাউন্সেলিং আর শিক্ষার জন্য?’ আরেকটি ইমেইলে দেখা যায় হাইতিতে ভূমিকম্পের পর সেখানকার ডাক্তারদের জন্য মেডিকেল সামগ্রী জোগাড়ের চেষ্টা করছেন তিনি। হুমা আবেদিন ও আরেক সহযোগিকে লেখা এক ইমেইলে তিনি লিখেন, ‘মার্ক, জরুরী বিভাগের ডাক্তার পল ফার্মার। তার স্ত্রী পিয়ের হলো অর্থোপেডিক সার্জন। তাদেরকে কি যত দ্রুত সম্ভব সাহায্য করার কোন উপায় আছে? এ জিনিসটি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হওয়া উচিৎ। সেখানে থাকা কোন মেডিকেল টিম কি তাদের সাহায্য করতে পারে? জেনারেল কিন বা জাতিসংঘ কি কাল সূর্য ফোটার সঙ্গে সঙ্গে তাদেরকে মেডিকেল সামগ্রী আর বৈদ্যুতিক জেনারেটর সরবরাহ করতে পারবে?’ কিন্তু এতে থেমেই ছিলেন না তিনি। কিছুক্ষণ পর আবার আরেকটি ইমেইল পাঠান। সেখানে লিখেন, ‘আর খাবার আর পানিও (পাঠাতে পারবে)?’ আরেক ইমেইলে দেখা যায় হাইতিতে শিশু পাচারের ব্যাপারে সচেতনতা তৈরিতে সাহায্য করছেন হিলারি। হাইতির শিশু পাচার সম্পর্কিত একটি ইমেইল তার কাছে পাঠায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা। জবাবে হিলারি লিখেন, ‘এটা গুরুত্বপূর্ণ। আমি এ নিয়ে কাজ করবো। বেশ দীর্ঘ তালিকা। জুলিয়ানের কি কোন নির্দিষ্ট পরামর্শ আছে?’ আরেকটি ইমেইলে দেখা যায়, নির্যাতিত আর অবহেলিত তরুণদের সাহায্য করে আসছে, ইলিনয়ের এমন একটি গ্রুপ হোম বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আর তা নিয়ে মন্তব্য করেন হিলারি। তিনি লিখেন, ‘আমাদের এখনকার মূল্যবোধ নিয়ে কী বেদনাদায়ক একটা মন্তব্য কলাম। আমি দিনকে দিন কথা বলতে গিয়ে খিটখিটে হয়ে যাচ্ছি। কিন্তু যেসব জিনিস দরকারি সেদিকে আমাদের নজর ফিরে যাবে, তা দেখতে পাচ্ছি না। বিশেষ করে দরিদ্র শিশুদের বিষয়টা। আমি শুধু আশাই করতে পারি যে, জোয়ার আসবে।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.