নিজেকে ফিট রাখতে চান না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া দায়। তবে এ জন্য চাই কিছু নিয়ম মেনে চলার পাশাপাশি প্রতিদিনকার স্বাস্থ্যসম্মত একটি রুটিন। অবশ্য চিত্রনায়ক ফেরদৌস মনে করেন, সদা হাসি-খুশি থাকলে নিজেকে ফিট রাখা সম্ভব। সাথে ছোট ছোট কিছু ব্যায়াম আর খাবারের মেনু ঠিক থাকলে একজন ব্যক্তি সবসময় সুস্থ থাকবেন।
এর বাইরে পরিবারকে সময় দেয়ার মধ্যেও নিজেকে ফিট রাখার কিছু রহস্য রয়েছে বলে জানান তিনি। চ্যানেল আই অনলাইনকে এ ড্যাসিং হিরো জানালেন নিজেকে ফিট রাখার রহস্য।
নিজেকে কিভাবে ফিট রাখেন? ফেরদৌস: নিজেকে ফিট রাখার জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি হলো মানসিকভাবে মনকে ঠিক রাখা। আমি সবসময় আনন্দে থাকার চেষ্টা করি। বাড়তি কোনো ঝামেলা নিতে একদম পছন্দ করি না। সবকিছুই সহজভাবে নেয়ার চেষ্টা করি। এটা আমাকে মানসিকভাবে ফিট রাখতে সাহায্য করে।
শরীরের প্রয়োজনে কোনো ব্যায়াম করেন? ফেরদৌস: শরীরকে সুস্থ রাখার জন্য আমি কিছু না কিছু ব্যায়াম করে থাকি। হয় সুইমিং করি, না হয় একঘণ্টা হাঁটি। এছাড়াও বাড়িতে কিছু ব্যায়াম করার যন্ত্র আছে সেগুলো ব্যবহার করি। অার খাবার কন্ট্রোলে রাখি। যা ইচ্ছে তাই খাই না।
সকালের নাস্তা কিভাবে সাজান? ফেরদৌস: আমি খুব ভোরে উঠতে চেষ্টা করি। ঘুম থেকেই উঠেই খালি পেটে দু’তিন গ্লাস পানি খাই। ভরপেট পানি খেয়েই হাঁটতে যাই। অার যেদিন হাঁটতে পারি না সেদিন ঘরের মধ্যেই হালকা ব্যায়াম করি। সকালে মোটামুটি ভারি নাস্তা করি। এরপর নিজেকে তৈরি করে বাইরে কাজের উদ্দেশে বের হই।
আমার মনে হয় অনেকেই ভুল করে দিনটি শুরু করেন খালি পেটে। সেটা খুবই খারাপ। সকালে যদি কেউ খালি পেটে বাইরে যান তাহলে সারাদিনে এতোবেশি খেতে হয়; যা শরীরের জন্য মোটেও ভালো নয়। তাই ভালো নাস্তা করে যদি দিনটি শুরু করা যায় সেক্ষেত্রে অনেক বেশি এনার্জি পাওয়া যায়। অনেক বেশি কাজও করা যায়।
দুপুরের মেনুতে কি রাখতে পছন্দ করেন? ফেরদৌস: বর্তমানে অামি একবেলা ভাত খেতে চেষ্টা করি। সেক্ষেত্রে দুপুরবেলায় ভাত বা রুটি খাই। সেসঙ্গে মাছ, সবজি রাখি। মূলত দুপুরে একটু হেভি খাই। তবে তৈলাক্ত খাবার থেকে দূরে থাকি। ব্যক্তিগতভাবে বিরিয়ানি, কাচ্চি, রোস্ট একদম পছন্দ না। সবজি জাতীয় জিনিস খুব ভালো লাগে। এছাড়া ফ্রেশ ফল খেতেও খুব ভালো লাগে।
নিজের পোশাক কি নিজেই ডিজাইন করে বানান? ফেরদৌস: হ্যাঁ আমার পোশাক নির্বাচন করে দেওয়া জন্য কিছু পরিচিত ডিজাইনার রয়েছে। যারা সিনেমার চরিত্র অনুযায়ী পোশাক ডিজাইন করে দেয়। এবং ওদের সাপোর্ট নিয়ে আমি চেষ্টা করি যখন যে দেশে যাই সে দেশ থেকে স্পেশাল কিছু পোশাক নিয়ে আসার। যেগুলো আমি ব্যক্তিগতভাবে ব্যবহার করি। সেসঙ্গে নিজের ইচ্ছেও থাকে তাছাড়া আমার স্ত্রীর খুব ভালো টেস্ট। ও যখন বিদেশে যায় আমার জন্য অনেক কিছু নিয়ে আসে।
পোশাকের ক্ষেত্রে কোনটি আরামদায়ক? ফেরদৌস: হালাকা ধরনের যেকোনো পোশাক আমার জন্য আরামদায়ক। জিন্স, টি-শার্ট খুব পছন্দের।
অবসরে আপনার প্রিয় শখ? ফেরদৌস: বর্তমান সময়ে আমার অবসর কাটে তিনজন মানুষকে নিয়ে একজন আমার মা ও দুই মেয়ে। কর্মব্যস্ততার মধ্যে আমি যতটুকু ফ্রি সময় পাই তাদের সঙ্গে কাটাতে পছন্দ করি। তরপরই নিজের জন্য যে সময়টুকু ব্যয় করি সেটাতে একটু লেখালেখি করি। প্রচুর বই পড়তে ভীষণ পছন্দ করি। সঙ্গে বিভিন্ন ম্যাগাজিন পড়ি। মাঝে মধ্যে ভালো সিনেমা দেখার চেষ্টা করি।
সেই হিসেবে শখ বলতে বর্তমানে কিছু নেই। ছোটবেলায় যেমন স্ট্যাম্প সংগ্রহ করতাম, সানগ্লাস সংগ্রহ করতাম, ঘড়ি জমাতাম ওই ধরনের শখ এখন আর নেই। কারণ ওগুলো এমনেই হয়ে যাচ্ছে। আসলে শখগুলো জীবনযাত্রার সঙ্গে মিশে গেছে।
ঘুরতে কোথায় পছন্দ করেন? ফেরদৌস: দেশ থেকে দেশের বাইরে নিজের মন মতো ঘুরতে পারি। যেহেতু সেলিব্রেটি দর্শক ভালোবেসে ছবি তুলতে আসে কোনো জায়গা নিজের মতো করে ঘোরা যায় না। আর আমার বাচ্চারা ঝামেলা পছন্দ করে না। তাই ওদেরকে নিয়ে সাধারণ বাবা যেমন ঘুরে বেড়াচ্ছে তেমনি ঘুরে বেড়ায়।
দেশের বাইরে কোথায় যেতে পছন্দ করেন? ফেরদৌস: ছুটি পেলেই বছরের এক দু’বার বাচ্চাদের নিয়ে লন্ডন ও আমেরিকায় যায়। তবে আমার বাচ্চাদের লন্ডন খুব পছন্দ।
দেশের বাইরে গেলে পরিবারের জন্য কোন জিনিসটি আনেন? ফেরদৌস: আমি যখনই যেখানে যাই সেখান থেকে ওই দেশের পরিচিত কিছু নিয়ে চেষ্টা করি। যে জিনিসটি আসলে ওই দেশকে পরিচিত করতে সাহায্য করে।
শপিং করতে পছন্দ করেন? ফেরদৌস: আমি প্রচুর শপিং করতে পছন্দ করি। আমার কাছে শপিং করা সেরা সময়। শপিং করতে আমি অনেক ভালোবসি। আমার কাছে শ্রেষ্ঠ বিনোদন শপিং করা। কেউ যদি আমাকে শপিং-এ ছেড়ে দিয়ে বলে তিন চারদিন থাকতে আর সিনেমা দেখতে আমি পারবো। শপিং ঘুরে দেখা, নতুন কি আসলো এটা আমার কাছে বেস্ট টাইম।
শপিংয়ে গিয়ে আমি যেকোনো একটি জিনিসটি কিনে নিয়ে চলে আসবো তা আমার ভালো লাগে না। জুতার দোকানে ঢুকলে ওই শপিং মলের সমস্ত জুতার দোকান ঘুরে দেখি। তাই দেখা যায়, জুতা কিনতে যেয়ে আমি স্যুাট কিনে চলে আসি। যেটা আমার দরকার ছিল না, সেটি কিনে নিয়ে চলে আসি।
তাহলে শপিংয়ে গিয়ে কোন জিনিসটি বেশি কেনা হয়? ফেরদৌস: শপিং-এ গেলে আমার সানগ্লাস কিনতেই হয়। সানগ্লাসের প্রতি আমার ঝোঁকটা একটু বেশি। আমার বাসায় কয়েক’শ সানগ্লাস জমে গেছে।
কোন ব্র্যান্ডের সানগ্লাস পছন্দ আপনার? ফেরদৌস: সানগ্লাসের ক্ষেত্রে রেবন আমার খুব পছন্দের।
শুটিং-এ নায়ক-নায়িকা ভারি খাবার পছন্দ করে, আপনিও কি তাই? ফেরদৌস: প্রথম যখন শুটিং করতাম তখন প্রচুর খেতাম। বাংলাদেশের শুটিং-এ প্রচুর খাবার দেওয়া হয়, ওই খাবার দেখে আমার মনে হতো খাওয়ার জন্যই আমি মনে হয় শুটিং করবো। কিন্তু একটা সময় খেতে খেতে দেখলাম এতো ভারি খাবার খেলে আর বেশিদিন শুটিং করা যাবে না। এখন আমি শুটিং গেলে বাসা থেকে একটু সবজি, ভাত বা রুটি নিয়ে আসি, সেটাই খাই।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.