বয়ঃসন্ধিকাল শৈশব ও কৈশোরের মধ্যবর্তী একটি মানসিক ও সামাজিক ক্রান্তিকাল। এসময় কিশোর-কিশোরীরা শরীরের ভেতরকার পরিবর্তনকে একটু একটু করে উপলব্ধি করতে শেখে। নিজের মধ্যে বাস করা আরও একটি সত্তার অস্তিত্ব আবিষ্কার করে। শুধু তাই নয়, এসময় তাদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশও ঘটে
বিশেষজ্ঞদের মতে, বয়ঃসন্ধিকালের এ সময়ে ছেলেমেয়েদের একটি বড় ধরনের আচরণীয় পরিবর্তন ঘটে হরমোনজনিত এবং শারীরিক পরিবর্তনের কারণে।
কয়েক বছর ধরে চলা puberty-এর সময়কালে ব্যাপক হারে দৈহিক বৃদ্ধি ও দ্রুত মানসিক পরিবর্তন ঘটে। এভাবে (ছেলেদের জন্য ১২/১৩, মেয়েদের ১০/১১ বছর শেষে) চূড়ান্ত পর্যাপ্ত যৌনতার বিকাশ ঘটে। তাদের মধ্যে যৌনকৌতূহল শুরু হয়। শৈশবে এ কৌতূহলের কোনো বিশেষত্ব নেই। এটা তার সাধারণ কৌতূহলের অন্তর্গত।
সন্তানের এসময়টা বাবা-ময়ের জন্য আনন্দদায়ক হলেও তদের আচরণগত পরিবর্তন অনেক সময় কষ্টকর ও যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠতে পারে। সন্তানের সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা ও তাদের আচরণ সামলাতে অনেকটা বেগও পেতে হয় তাদের। এ নিয়ে চিন্তায় পড়েন প্রতিটি বাবা-মা।
তবে সন্তানদের সঠিকভাবে লালন-পালন করতে চাইলে অবিভাবকদের একটু কৌশলী হতে হবে। প্রথাগত কিছু পন্থার সহায়তায় তাদের সঠিকভাবে সামলানোই তো হলো আদর্শ বাবা মায়ের কাজ। তাই তো বয়ঃসন্ধিকালের এ সময়টায় সন্তানের আগে নিজেদের আচরণের পরিবর্তন জরুরি। আসুন জেনে নিই সন্তানের বয়ঃসন্ধিকালে আমাদের কী করতে হবে?
* ‘আমাকে খবরদার অমান্য করবে না’, ‘আমি যা বলছি তাই কর’ এ রকম আচরণ আপনার সবে মাত্র কৈশোরে পা দেয়া সন্তান একদম পছন্দ করবে না। এটা বাবা মাই হোক বা অন্য কেউ হোক না কেন? তাই প্রথমে এ ধরনের আচরণ পরিহার করুন।
* অনেক সময় বাবা-মা নিজের বাচ্চার সঙ্গে অন্যর বাচ্চার অকারণ তুলনা করেন। তারা ভুলেই যান তাদের সন্তান যেরকম সেইভাবেই সে সুন্দর। বরং অন্যদের সঙ্গে তুলনা করলে আপনার প্রতি সন্তানের একটা খারাপ ধারণা তৈরি হবে।
* কখনও সন্তানদের ওপর অকারণে চাপ সৃষ্টি করবেন না, বিশেষ করে আপনার সন্তান যদি কৈশোরে পা দিয়ে থাকে। এর ফলস্বরূপ বাচ্চারা অকারণ ভুল কাজে জড়িয়ে পড়বে। যেমন মিথ্যে কথা বলা, ধোঁকা দেয়া ইত্যাদি। তাদের আশা আকাঙ্খায় অকারণ চাপ সৃষ্টি করবেন না।
* কোনও ব্যপারে সন্তানকে যদি সন্দেহ করেন, কখনও প্রকাশ করবেন না। আপনি তাদের পিছনে গোয়েন্দা গিরি করুন কিন্ত খুব বেশি করবেন না। কারণ কিশোর/কিশোরীরা খুব তাড়াতাড়ি ধারণা ও সিদ্ধান্ত নিয়ে নেয়। তাই বাবা মা হিসেবে তাদের কখনই সরাসরি এটা বুঝতে দেবেন না যে তাদের ব্যবহার আপনাদের কাছে সন্দেহজনক লাগছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.