মালয়েশিয়া বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার। দেশটির বিভিন্ন সেক্টরে বাংলাদেশের বিপুলসংখ্যক কর্মী কাজ করছে। মঙ্গলবার রাজধানীর একটি হোটেলে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী এবং বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রীর এক বৈঠকে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশী কর্মী নিয়োগের বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। ওই বৈঠকে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদমন্ত্রী বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন খাতে শ্রমিক নেয়ার ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। প্রাথমিকভাবে দেশটি নির্মাণ, প্লান্টেশন ও ম্যানুফ্যাকচার খাতে কর্মী নেবে। বৈঠক শেষে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী জানিয়েছেন, মালয়েশিয়ার জনশক্তি রফতানির ব্যাপারে গুটিকয়েক এজেন্সিকে সুযোগ না দিয়ে অধিকসংখ্যক অভিজ্ঞ ও স্বনামধন্য রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ নিশ্চিত করা হবে। এতে অভিবাসন ব্যয় কমবে এবং সরকার নির্ধারিত ব্যয়ে কর্মী পাঠানো যাবে। উল্লেখ্য, এ বছরের ফেব্র“য়ারিতে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে জি-টু-জি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী নেয়ার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। এ পদ্ধতিতে বাংলাদেশের কর্মীরা তুলনামূলক কম খরচে মালয়েশিয়া যেতে পারবে। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সৌদি আরবের শ্রমবাজার বাংলাদেশের কর্মীদের জন্য পুনরায় উন্মুক্ত হয়েছে। সম্প্রতি সৌদি মন্ত্রিপরিষদের এক বৈঠকে বাংলাদেশে থেকে গৃহকর্মী নেয়ার বিষয়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে হওয়া চুক্তির আওতায় দেশটিতে কর্মী নিয়োগ করা হবে। সৌদি আরবে বিভিন্ন খাতে যেসব কর্মী নিয়োগের সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে, সেসব ক্ষেত্রে আমাদের দেশের কর্মীরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে বিদেশ গমনের চেষ্টা করলে লাভবান হবেন। কিছু রিক্রুটিং এজেন্সি কর্তৃক বিদেশ গমন প্রত্যাশীদের হয়রানির বিষয়টি বহুল আলোচিত। কাজেই কোনো দেশে গমনের ক্ষেত্রে বিভ্রান্ত না হয়ে সরকার নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবে। এক্ষেত্রে সতর্ক না থাকলে কর্মীদের প্রতারিত হওয়ার আশংকা থাকে। বিভিন্ন দেশে যেতে আগ্রহী কর্মীদের বর্তমানে সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে। এতে কর্মীরা বিদেশে গিয়ে প্রত্যাশিত বেতনে চাকরির সুযোগ পাবেন। আমরা আশা করব, বিদেশ গমন প্রত্যাশী কর্মীদের প্রশিক্ষণের সুযোগ আরও বাড়ানো হবে। এতে প্রবাসী কর্মীদের অপেক্ষাকৃত বেশি বেতন প্রাপ্তির সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। আগামীতে বিভিন্ন দেশে অদক্ষ কর্মীদের শ্রমবাজার আরও সংকুচিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। কাজেই বিদেশে গমন প্রত্যাশী সব কর্মীকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিভিন্ন ভাষায় দক্ষ করে তোলার জন্যও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।
সম্প্রতি রাশিয়াসহ কয়েকটি দেশে বাংলাদেশের নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি হয়েছে। নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টির বিষয়ে কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি তৎপর হতে হবে। কোনো দেশে শ্রমবাজার সম্প্রসারিত হলে কিংবা নতুন শ্রমবাজার সৃষ্টি হলে গুজব ছড়িয়ে বিদেশে যেতে আগ্রহীদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা লক্ষ করা যায়। এ ধরনের অপপ্রচারে বিভ্রান্ত না হয়ে কর্মীদের বিদেশে গমনের সর্বশেষ তথ্য সংগ্রহ করতে হবে। এতে তাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশংকা কমবে। যারা এ ধরনের গুজব ছড়িয়ে ফায়দা নেয়ার চেষ্টা করে, তাদের বিরুদ্ধে সরকারকে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.