বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন বলেছেন, সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা ও হুমকিকে ইচ্ছাকৃতভাবে তুচ্ছ করেই তাকে ভারতে ফিরতে হবে। কেননা, তার ‘ভারত ছাড়া আর কিছুই নেই’। তিনি এ আশাবাদও ব্যক্ত করেছেন, একদিন হয়তো এটা মুক্তচিন্তাকে উৎসাহিত করবে। তিনি আশা করেন, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলো একসময় ভারতের উদাহরণ থেকেই শিখবে এবং বাকস্বাধীনতার অর্থ জানতে উৎসাহিত হবে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা পিটিআই। খবরে বলা হয়, তসলিমা নাসরিন তার আত্মজীবনীমূলক ‘নির্বাসন’ বইতে এসব চিন্তা প্রকাশ করেছেন। মহার্ঘ্য চক্রবর্তী ‘এক্সাইল’ নামে এই বইয়ের ইংরেজি অনুবাদ করেছেন। পেঙ্গুইন র্যানডম হাউস প্রকাশ করেছে এ বই। তসলিমা পাঁচ বছর আগেই লিখেছেন তার বইটি। এ বইয়ে তুলে ধরেছেন তার নির্বাসিত হওয়ার সময়ের কথা। ওই সময় তাকে যে সংগ্রাম করতে হয়েছে তা উঠে এসেছে এ বইয়ে। তিনি লিখেছেন, ‘ওই সাত মাসে আমাকে পশ্চিমবঙ্গ থেকে বের করে দেয়া হয়। পরে রাজস্থান থেকে এবং শেষ পর্যন্ত ভারত থেকেই বের করে দেয়া হয়। নজরবন্দিকালীন উদ্বেগের ওই সময়ে আমাকে সরকারের নিরাপত্তাভবনে অবস্থান করতে হয়। ধান্ধাবাজ আমলা ও মন্ত্রীরা আমাকে সেখানে থাকতে দিতে চাননি। তা সত্ত্বেও তাদের মধ্যেই আমাকে থাকতে হয়েছে।’ তসলিমা বলেন, ওই সময়ে তিনি গোটা রাষ্ট্রযন্ত্রের বিরুদ্ধে নিঃসঙ্গ, নির্বাচিত ও ভিন্নমতধারী একজন হয়ে ছিলেন। তসলিমা ওই সময়ের কথায় লিখেছেন, ‘দেশ ছাড়তে আমাকে বাধ্য করা সত্ত্বেও সব নিষেধাজ্ঞা ও হুমকিকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে আমি ভারতে ফিরে এসেছি। কারণ, ভারত ছাড়া আমার আর যাওয়ার কোনো জায়গা ছিল না। আমি বিশ্বাস করি, ভারত একদিন সত্যিকারের মুক্তচিন্তাকে উৎসাহিত করবে। ভারতে ফিরে আসার এটাও একটি কারণ।’ তসলিমা আরো লিখেছেন, ‘আমি এই দেশেই থাকতে চাই এবং অন্যদের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ হলেও আমার চিন্তা স্বাধীনভাবে প্রকাশ করতে চাই। আমি আশা করি ভারতের উদাহরণ থেকে একসময় প্রতিবেশী দেশগুলো শিখবে এবং একসময় উৎসাহিত হবে। এসব দেশ এখনো বাকস্বাধীনতার অর্থ জানে না।’ তবে তাই বলে ভারতেও তিনি ভারমুক্ত নন। কারণ, তার বিরুদ্ধে নানা সময় আসা হুমকি এখনো চালু আছে এবং নতুন নতুনরূপে সেগুলোও ফিরে আসছে তার ওপর।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.