দলের ঘোর বিপর্যয়ে ব্যাট হাতে ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস খেললেন উভয়ে। আর ইনিংস শেষে তারা গড়লেন আসরের ইতিহাসে অষ্টম উইকেটে সর্বোচ্চ রানের জুটি। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লীগে (বিপিএল) গতকাল রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে অষ্টম উইকেটে ৬৪ বলে ৮৫ রানের জুটি গড়েন মেহেদী হাসান মিরাজ ও ফরহাদ রেজা। এতে লড়াইয়ের পুঁজি পায় রাজশাহী কিংস। ইনিংস শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ পৌঁছে ১২৮/৭-এ। অথচ ইনিংসের মাঝপথে দর্শকদের নজরটা ছিল আসরের সর্বনিম্ন দলীয় স্কোরের দিকে। মিরপুর শেরে বাংলামাঠে ইনিংসের অর্ধেকটা না ফুরাতেই ৭ উইকেট খুইয়ে বসে রাজশাহী কিংস। রাজশাহীর ৬ ব্যাটসম্যান সাজঘরে ফেরেন ব্যক্তিগত এক অঙ্কের রানে। উইকেট দেয়ার আগে কেবল সাব্বির রহমান করেন ১৬ রান। এতে ৯.২ ওভার শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪২/৭-এ। চলতি আসরে সর্বনিম্ন ৪৪ রানের রেকর্ড খুলনা টাইটান্সের, রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষেই। গতকাল টস জিতে ব্যাটিং বেছে নেন রাজশাহী অধিনায়ক ড্যারেন স্যামি। ইনিংসের প্রথম ওভারটি ছিল সোহাগ গাজীর মেডেন। আর দ্বিতীয় ওভারেই বল হাতে আঘাত হানেন রংপুর রাইডার্সের স্বদেশি পেসার রুবেল হোসেন। ব্যক্তিগত ২ রানে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন রাজশাহী কিংস ওপেনার জুনাইদ সিদ্দিকী। আর ইনিংসের পঞ্চম ওভারে জোড়া আঘাত হানেন আরাফাত সানি। নিজের ডেলিভারিতে দারুণ এক ক্যাচে রাজশাহীর অপর ওপেনার মুমিনুল হককে সাজঘরে ফেরান রংপুরের এ বাঁ-হাতি স্পিনার। একই ওভারে ব্যক্তিগত ২ রানে সানিকে উইকেট দেন সামিত প্যাটেল। অল্পতে উইকেট খোয়ান রাজশাহীর আগের দুই ম্যাচের জয়ের নায়ক ড্যারেন স্যামি। স্বদেশি স্পিনার শহীদ আফ্রিদির ডেলিভারিতে পরিষ্কার বোল্ড হয়ে যান পাকিস্তানি ব্যাটসম্যান উমর আকমলও। আর আসরের তৃতীয় সর্বাধিক ২৭৩ রানের তারকা সাব্বির রহমানের বিদায়ে ৯.২ ওভার শেষে রাজশাহীর সংগ্রহ দাঁড়ায় ৪৩/৭-এ। তবে ইনিংসকে টেনে নিয়ে যান মিরাজ-ফরহাদ। শেষ পর্যন্ত ফরহাদ ৪৪ মিরাজ অপরাজিত থাকেন ৪১ রানে। ৬৭ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারে ফরহাদের আগের সর্বোচ্চ ইনিংসটি ছিল ৪৩ রানের। আর ক্যারিয়ারে ৮ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে মিরাজের সর্বোচ্চ ছিল ৬*। গতকাল ৮৫ রানের জুটিতে ফরহাদ দুই বাউন্ডারি, দুই ছক্কা ও মিরাজ হাঁকান তিন বাউন্ডারি, এক ছক্কা। বিপিএল ইতিহাসে সপ্তম উইকেটে জুটিতে সর্বোচ্চ ৭১ রানের রেকর্ড ক্রিস গেইল ও মাশরাফি বিন মুর্তজার। ২০১৩ সালে সিলেট রয়্যালসের বিপক্ষে ঢাকা গ্ল্যাডিয়েটর্সের ব্যাট হাতে এ রেকর্ড গড়েন গেইল-মাশরাফি জুটি। আর আসরের ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ডটি মিসবাহ উল হক-থিসারা পেরেরা জুটির। গত বছর চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষে তার এ রেকর্ড গড়েন রংপুর রাইডার্সের ব্যাট হাতে। গতকাল রংপুরের বল হাতে ৪ ওভারের স্পেলে ৩১ রানে তিন উইকেট নেন বাঁ-হাতি স্পিনার আরাফাত সানি। আর পাকিস্তানি লেগ স্পিনার শহীদ আফ্রিদি ৪ ওভারের স্পেলে ১০ রানে নেন দুই উইকেট। ৮ ম্যাচে ১৪ উইকেট নিয়ে তালিকার চতুর্থ স্থানে উঠে এলেন আফ্রিদি। আসরে সর্বাধিক ১৬ উইকেট শিকার খুলনা টাইটান্সের স্বদেশি পেসার শফিউল ইসলাম ও চিটাগং ভাইকিংসের আফগান অফস্পিনার মোহাম্মদ নবি। ঢাকা ডায়নামাইটস পেসার মোহাম্মদ শহীদের রয়েছে ১৫ উইকেট। আসরে সর্বাধিক ৩০৩ রান সংগ্রহ বরিশাল বুলসের মুশফিকুর রহীমের। চিটাগং অধিনায়ক তামিম ইকবালের সংগ্রহ দ্বিতীয় সর্বাধিক ২৮৫ রান।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.