মানুষ দেখে শেখে। সেটা স্বপ্ন হলেও। রোবটও কি স্বপ্ন দেখে? যদি দেখত তবে কী স্বপ্ন দেখত? হয়তো গেম—পুরোনো ধাঁচের গেম।
রাতের ঘুম হোক কিংবা সংক্ষিপ্ত দিবানিদ্রা, স্মৃতি পাকাপোক্ত করতে ঘুম বেশ কাজের। ক্ষণস্থায়ী স্মৃতিগুলোকে দীর্ঘস্থায়ী স্মৃতিতে রূপ দেয়। এ ক্ষেত্রে তিনটি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়—স্থিতিশীল, বর্ধন, একীভূতকরণ। পুরোনো স্মৃতি সহজে ফিরে পেতে সেগুলোকে শ্রেণিবদ্ধ অবস্থায় জমা করে স্থায়ী রূপ দেওয়া হয়। প্রথমে মস্তিষ্ক একটি স্মৃতিকে সংকুচিত করে ৬ মিলি সেকেন্ডে সংরক্ষণ করে। পরবর্তী ধাপে এই সংকুচিত স্মৃতি প্রসারিত করে। এরপরই পুরোনো স্মৃতির সঙ্গে নতুন স্মৃতি সংরক্ষণ করে, অনেকটা আর্কাইভের মতো।
বিশেষজ্ঞরা রোবটের স্মৃতির উন্নয়নে একই প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে চান। স্বপ্ন ‘দেখাতে’ চান রোবটকে। গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রকল্প ডিপমাইন্ডের প্রথম সাফল্য অনেকটা ক্ল্যাসিক ভিডিও গেমের মতো।
ব্রেকআউট কিংবা অ্যাস্টেরয়েডের মতো গেম থেকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) শুধু গেমে প্রতিপক্ষকে হারানোর কৌশলই শেখে না, কীভাবে কিছু শিখতে হয় তাও শেখে। তবে ডিপমাইন্ডের মতো বড় এআই প্রকল্পও মানব প্রতিপক্ষকে হারানোর মতো পর্যায়ে এখনো পৌঁছায়নি। আমরা যেমন বিব্রতকর কিংবা ভয়ের কোনো স্বপ্ন দেখি, এআই–এর স্বপ্ন বড়জোর গেমের পুরো সময়টার পুনরাবৃত্তি করে হারা কিংবা জেতার ধরনটা বুঝতে চেষ্টা করা পর্যন্ত।
ডিপমাইন্ডের লক্ষ্য হলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকেও একইভাবে শেখানো, যেভাবে মানুষ শেখে। আগে রোবটকে শেখানো হতো কাঠামোগত পদ্ধতিতে, যাতে প্রতিটি ধাপ আগে থেকে ঠিক করে দেওয়া হতো। এখন শেখানো হবে এমনভাবে, যেখানে পরবর্তী ধাপ কী হবে তা হয় অনুমান করতে হবে কিংবা উদ্ভূত পরিবর্তিত পরিস্থিতে করণীয় ঠিক করতে হবে। কিন্তু এ ধরনের শিক্ষা পদ্ধতিতে প্রথম পদ্ধতির চেয়ে অনেক বেশি সময় প্রয়োজন। তাই এআইকে শেখানোর জন্য অলস সময়ই আদর্শ। আর শেখান থেকেই স্বপ্ন দেখে শেখার শুরু।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.