অতীতচারিতা ভুলে আবারো সরকারকে সংলাপে বসার আহ্বান জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, আমরা আবারো বলছি, অতীতচারিতা ভুলে যান। লেট আস ফরগেট অ্যাবাউট দ্য পাস্ট। আসুন আমরা নতুন করে একটা আলোচনা করি, একটা সংলাপ করি। সেই সংলাপের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় শান্তিপূর্ণভাবে কিভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর করা যায়, সেই পথ বের করি। দাম্ভিকতা পরিহার করুন। দেশে বিভক্তি তৈরির চক্রান্ত থেকে বের হয়ে এসে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করুন। গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনের কয়েক ঘণ্টা আগে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে আইনজীবীদের সংগঠন ‘ব্যারিস্টারস ফর চেইঞ্জ’ আয়োজিত ‘বর্তমান আমলে সামপ্রদায়িকতা, উগ্রবাদ ও আইনের শাসন’ শীর্ষক এক আলোচনা সভায় তিনি এ আহ্বান জানান। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার দেয়া নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন প্রস্তাব প্রসঙ্গে মির্জা আলমগীর বলেন, দেশনেত্রী একটা প্রস্তাব দিয়েছেন। যদিও তারা (আওয়ামী লীগ) সঙ্গে সঙ্গে তা রিজেক্ট করেছে। এখনও আমরা আশা করবো। বিএনপি মহাসচিব বলেন, নিরপেক্ষ নির্বাচন দিলে যে ফলাফল হবে, তা মেনে নেবে বিএনপি। এখন যদি সাহস থাকে, জনগণের প্রতি আস্থা থাকে, তাহলে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে, নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিন। যা ফলাফল হয়, তা-ই আমরা মেনে নেবো। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের কবর সরানোর ব্যাপারে গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে মির্জা আলমগীর বলেন, আমাদের দলের প্রতিষ্ঠাতাই শুধু নন, একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বীরোত্তম। যিনি স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা দিয়ে মানুষকে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেছেন। তার মাজার সরিয়ে ফেলার জন্য আপনারা আজকে ষড়যন্ত্র করছেন। বিএনপি মহাসচিব বলেন, কিউবার প্রয়াত নেতা ফিদেল ক্যাস্ত্রোর মতো বাংলাদেশেও জিয়াউর রহমানের নাম কোটি মানুষের হৃদয়ে রয়েছে। আমরা বলতে চাই, দিস ইজ জিয়াউর রহমান। বীর উত্তম জিয়াউর রহমানের মাজার সরানোর ষড়যন্ত্র করছেন। করতেই পারেন। যেহেতু আপনারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় আছেন। আপনাদের হাতে বন্দুক, অস্ত্র আছে, কিন্তু টিকিয়ে রাখা যাবে না। জিয়াউর রহমান পদক কেড়ে নিয়ে তার বিরুদ্ধে অশ্লীল, অশ্রাব্য করে কোনো লাভ হবে না। যদি তার বিরুদ্ধে কিছু করার চেষ্টা করেন, জনগণ তার বিরুদ্ধে দাঁড়াবে। কারণ, জনগণ জিয়াউর রহমানকে হৃদয়ে ধারণ করে নিয়েছেন, জনগণ তাকে মাথার ওপরে রাখবেন। বিনা বিচারে হত্যার সমালোচনা করে মির্জা আলমগীর বলেন, কোনো তদন্ত ছাড়া, বিচার ছাড়া বিচার হয়ে যাচ্ছে। কী নাশকতার চেষ্টা করছিল, সেই খবর পেয়ে নির্মূল করে দিলো। উইদিন ওয়ান মানথ- এক মাসের মধ্যে সব জঙ্গিবাদ শেষ, খতম হয়ে গেছে। কার স্বার্থে তৈরি হয়, কারা তৈরি করে, কিভাবে তৈরি করে, তারাই বলতে পারবেন। কিন্তু আসামি করেন আমাদের দলের নেতাদের। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিয়ে তথ্যমন্ত্রীর বক্তব্যের সমালোচনা করে মির্জা আলমগীর বলেন, মিথ্যা মামলা দিয়ে খালেদা জিয়া হয়রানির মাধ্যমে রাজনীতি থেকে দূরে সরিয়ে রাখার চেষ্টা চলছে। একটি কথা পরিষ্কার, জনগণের জন্য যারা রাজনীতি করেন তাদের হাজারো মিথ্যা মামলা দিয়ে আটকানো যাবে না। তিনি বলেন, মাঝে মধ্যে মনে হয়, কে সরকার, কোথায় সরকার, কে দেশ চালাচ্ছে? সকল কিছুর জবাব একদিন দিতে হবে। আওয়ামী লীগ আইনের শাসনের নামে জনগণের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। সময় এসেছে ঐক্যের মধ্য দিয়ে এ সকল অন্যায় অত্যাচারের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর। সংগঠনের প্রধান সমন্বয়ক ব্যারিস্টার আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে শেখ মোহাম্মদ জাকির হোসেনের পরিচালনায় আলোচনা সভায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নাল আবেদীন, বিএনপির ভাইস চেয়ার?ম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, ব্যারিস্টার জিয়াউর রহমান, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুবউদ্দিন খোকন, সাবেক সম্পাদক বদরুদ্দোজা বাদল, বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক সানাউল্লাহ মিয়া, প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এবিএম মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম রাজা, ব্যারিস্টার রাশেদ হোসেন মামুন ও ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম বক্তব্য দেন।
সূত্র : ইন্টারনেট
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.