চাঁদপুরের কচুয়ায় জমি নিয়ে বিরোধকে কেন্দ্র করে মেয়র ও মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব চলছে। এ নিয়ে গত সোমবার দুপুরে কচুয়ার কিছু মুক্তিযোদ্ধা কচুয়া পৌরসভার মেয়র নাজমুল আলমসহ আট-দশজনের বিরুদ্ধে চাঁদপুরের জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে কচুয়ায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। জানা যায়, কচুয়ার করইশ এলাকায় সরকারি ৪ শতক জমি নিয়ে মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন মানিকের ছোট ভাই মফিজ উদ্দিন ও শাহজাহানদের সঙ্গে প্রতিবেশী মৃত আবদুল মালেকের ছেলে মহিত মজুমদারদের বিরোধ চলছে। এ নিয়ে গত ২৯ নভেম্বর ওই জমিতে নির্মাণাধীন বাড়িঘর ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনা ঘটে। এ বিষয়ে কচুয়া পৌরসভার মেয়রের কাছে খবর এলে তিনি বিষয়টি পুলিশকে জানান। কিন্তু পুলিশ মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিনের পক্ষ নিলে মেয়রের সঙ্গে পুলিশের দ্বন্দ্ব শুরু হয়। এ ছাড়া কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির ও উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিনও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষ নেন। কচুয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজাহান শিশির অভিযোগ করেন, ‘জমি-সংক্রান্ত বিরোধকে কেন্দ্র করে মুক্তিযোদ্ধার পরিবারের ওপর হামলা চালায় কচুয়া পৌরসভার মেয়র ও কচুয়া উপজেলা যুবলীগের সভাপতি নাজমুল আলম। আমরা এ ঘটনায় নিন্দা জানাই।’ এ ব্যাপারে চেষ্টা করেও মেয়রের সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তবে মেয়রের বড় ভাই খোরশেদ আলম জানান, মেয়র অসুস্থ হয়ে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জমি নিয়ে দ্বন্দ্বের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘সরকারি জমি অবৈধভাবে মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন দখল করতে এলে মেয়রের হয়ে আমাদের চাচাতো ভাই সোহেল বাধা দেয়। এ সময় সালাউদ্দিনের লোকজন সোহেলকে ব্যাপক মারধর করে। এ নিয়ে কচুয়া থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।’ তিনি দাবি করেন, ‘আমার ভাইয়ের কোনো দোষ ছিল না। সে পৌর মেয়র হিসাবে দায়িত্ব পালন করে।’ মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিন স্মারকলিপিতে উল্লেখ করেন, কচুয়ার মেয়রসহ আট-দশ ব্যক্তি তাঁর ঘরবাড়ি ভাঙচুর করেন। এ নিয়ে তিনি বাদী হয়ে ৪ ডিসেম্বর কচুয়া থানায় পৌর মেয়রসহ আটজনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। মামলার পর মেয়র ও তাঁর লোকেরা তাঁকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে আসছেন। তাই নিরুপায় হয়ে তিনি জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন। মেয়র নাজমুল আলম তাঁর বিরুদ্ধে মামলা নেওয়ায় কচুয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম ইকবালকেও হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে কচুয়া থানার ওসি জানান, এসব ঘটনায় থানায় দুই পক্ষে দুটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে। পৌর মেয়রের হুমকির বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বিষয়টি আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’ এ বিষয়ে উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আবদুল মবিন খান বলেন, ‘মুক্তিযোদ্ধা সালাউদ্দিনদের পৈতৃক জমি জেলা পরিষদ অ্যাকোয়ার করে নিলেও পরে সেখানে ঘর করে জেলা পরিষদের কাছে তিনি লিজের জন্য আবেদন করেন। তাঁর প্রতিবেশী আবদুল মালেকের পক্ষ নিয়ে পৌর মেয়রের লোকজন তাঁদের ওপর হামলা চালায় ও ভাঙচুর করে। এর প্রতিবাদে আমরা জেলা প্রশাসক বরাবর স্মারকলিপি দিই।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.