নোট বাতিলের জেরে কাজ হারান স্বামী শওকত আনসারি। এক পর্যায়ে মুম্বাই থেকে ফিরে আসেন গ্রামে। সংসারের টানাপোড়েন এতটাই যে, দু’দিন ধরে সন্তানদের মুখে এক দানা খাবারও তুলে দিতে পারেননি সওকত-সাবিজান খাতুন দম্পতি।
দুই সন্তানের কষ্ট সইতে না পেরে তাদের কুয়োয় ফেলে দেন মা সাবিজান। পরে সন্তান হত্যার ঘটনায় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে।
কলকাতার গিরিডির নিমিয়াঘাট থানা এলাকার পাতাপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে।
গিরিডির এসপি অখিলেশ সিংহ ভেরিয়র বলেছেন, ‘আট বছরের শেখাওয়াত ও ছয় বছরের সায়রাবানুকে কুয়োয় ফেলে খুনের অভিযোগে মা সাবিজান খাতুনকে বৃহস্পতিবার বিকালে গ্রেফতার করা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘ঘটনার তদন্ত চলছে। আর্থিক সংকট, নাকি এর পেছনে অন্য কোনো কারণ, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’
বছর পঁয়ত্রিশের সাবিজান নিজেই থানায় জবানবন্দিতে বলেছেন, ‘গত নভেম্বর মাস থেকে আর্থিক কষ্টে ভুগছিলেন তারা। দু’দিন ধরে বাড়িতে খাবার ছিল না। তিনি এ কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন।’
শওকতের প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, শওকত মুম্বাইয়ে দিন মজুরের কাজ করত। দিন কয়েক আগে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরেছিল। তারপর থেকে রোজ বাড়িতে হাঁড়ি চড়ত না। কিন্তু তার জেরে সাবিজান যে এই কাণ্ড করে বসবেন তা তারা ভাবতেই পারেননি।
শওকত বলেন, ‘নোট বাতিলের পরে কাজ হারিয়ে গ্রামে ফিরে আসি। ঘরে খাবার ছিল না বলে রোজই স্ত্রীর সঙ্গে খিটমিট চলছিল। কিন্তু তার জেরে যে স্ত্রী এ রকম ঘটনা ঘটাবে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাইনি।’
তিনি জানান, গ্রামের প্রান্তে এক কুয়োয় নিয়ে গিয়ে সাবিজান বাচ্চা দু’টোকে ঠেলে ফেলে দেয়। পরে জানাজানি হতে কুয়ো থেকে তাদের মরদেহ তোলা হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.