চাঁদপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী না থাকলেও মাঠে আছেন দলের চার নেতা। আইনি জটিলতার কারণে দলের মনোনীত প্রার্থী শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে অংশ নিতে পারেননি। দল থেকে নতুন করে কাউকে সমর্থনও দেওয়া হয়নি। দলীয় নেতারা বলছেন, নির্বাচনে যিনি জিতে আসবেন, তিনিই হবেন দলের প্রার্থী। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘোড়া প্রতীক নিয়ে মাঠে নেমেছেন ঢাকা দক্ষিণ আওয়ামী লীগের বর্তমান সহসভাপতি মতলব উত্তরের বাসিন্দা মো. নুরুল আমিন রুহুল। বাকি তিন প্রার্থী চাঁদপুর সদরের বাসিন্দা। তাঁরা হলেন মোবাইল প্রতীক নিয়ে চাঁদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি ওচমান গনি পাটোয়ারী, আনারস প্রতীক নিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি মো. ইউসুফ গাজী ও মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে চাঁদপুর সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ছাত্রজীবন থেকে ঢাকায় আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত মো. নুরুল আমিন। আঞ্চলিকতার কারণে মতলব উত্তর ও দক্ষিণ উপজেলার অধিকাংশ ভোটার তাঁর পক্ষে যেতে পারেন। জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কিছু নেতার কারণে ফরিদগঞ্জ, কচুয়া, হাজীগঞ্জ ও শাহরাস্তি উপজেলার অনেক ভোটারও তাঁকে সমর্থন দিতে পারেন। গত সোমবার প্রতীক বরাদ্দের দিন থেকে মতলব দক্ষিণ উপজেলার চেয়ারম্যান সিরাজুল মোস্তফা তালুকদার মো. নূরুল আমিন রুহুলের হয়ে মাঠে নেমে পড়েন। জানতে চাইলে নুরুল আমিন রুহুল বলেন, ‘মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার আগে আমি দলীয় নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুমতি নিয়েছি। চাঁদপুরের পাঁচ সাংসদসহ জেলার অনেক নেতার সঙ্গে আমি কথা বলেছি, তাঁদের দোয়া নিয়েছি।’ ওচমান গনি পাটোয়ারীর অবস্থানও এসব জায়গায় অনেকটা ভালো বলে দাবি করেন তিনি। নির্বাচনের বেশ কিছুদিন আগ থেকেই নানাভাবে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে প্রচারণা চালিয়েছেন তিনি। চাঁদপুর শহরের অধিকাংশ মোড়ে ওচমান গনির ডিজিটাল ব্যানার, পোস্টার ও বিলবোর্ড এখনো শোভা পাচ্ছে। অনেকের মতে, মো. নূরুল আমিন রুহুলের সঙ্গে ওচমান গনির তীব্র লড়াই হবে। ওচমান গনি বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাদের সঙ্গে কথা বলেই নির্বাচনে নেমেছি। তৃণমূল পর্যায়ে ভোটাররা আমার সবচেয়ে বড় শক্তি। মনোনয়নপত্র জমাদান থেকে শুরু করে আমার সঙ্গে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও অংগসংগঠনের অনেক নেতা-কর্মী নির্বাচনী প্রচারণায় রয়েছেন।’ মো. ইউসুফ গাজী ও মো. নুরুল ইসলাম নাজিম দেওয়ান নির্বাচনে অংশ নিলেও তাঁদের তেমন কোনো প্রচারণা নেই। ইউসুফ গাজী চাঁদপুর পৌরসভার চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ছিলেন। মো. নুরুল ইসলাম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তারপরও তাঁরা আশাবাদী ভোটারদের রায় তাঁদের পক্ষে আসবে। মো. ইউসুফ গাজী বলেন, ‘আমার জনগণই আমার সঙ্গে আছেন। দলকে যাঁরা ভালোবাসেন, তাঁরাই আমাকে ভোট দিবেন এটাই আমার বিশ্বাস। তবে ভোটার অনেক কম হলেও স্থানীয় নেতারা আমার সঙ্গে আছেন। সময়মতো সেটা প্রকাশ পাবে।’ মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এখনো যদি কারও পক্ষে দলীয় সিদ্ধান্ত আসে, তাহলে আমি সেটা মেনে নেব। উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ আমার সঙ্গে আছে।’ জেলা আওয়ামী লীগের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক নেতা বলেন, এভাবে কেন্দ্র থেকে চাঁদপুরে চেয়ারম্যান পদে ‘ওপেন টু অল’ ঘোষণা হওয়ায় শেষ পর্যন্ত চেয়ারম্যান পদটি পেতে টাকার খেলায় মেতে উঠতে পারেন প্রার্থীরা। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. নাছির উদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন্দ্র থেকে কোনো ‘প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন না আসায় আমরাও কারও পক্ষ নেইনি। তবে যিনি জিতে আসবেন, তিনিই হবেন আমদের দলীয় সমর্থিত চেয়ারম্যান।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.