পাঁচটি সরকারি অফিসে কয়েক মাস ফাইল চালাচালির পর অবশেষে হরিণের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। জাতীয় চিড়িয়াখানা থেকে এ দামে যে কেউ কিনতে পারবেন চিত্রল হরিণ। কিছুদিন আগেও হরিণের দাম ছিল ৩৫ হাজার টাকা। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় কর্তৃপক্ষ দাম বাড়িয়ে নতুন মূল্য নির্ধারণ করেছে। একইসঙ্গে কর্তৃপক্ষ এক জোড়া ময়ূরের নতুন দাম নির্ধারণ করেছে ৫০ হাজার টাকা। সম্প্রতি মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় সংসদীয় কমিটিকে এ নিয়ে একটি রিপোর্ট উপস্থাপন করে। ওই রিপোর্টে বলা হয়, প্রথমে জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ হরিণের দাম প্রস্তাব করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে পাঠায়। সেখান থেকে ফাইল যায় মন্ত্রণালয়ে। পরে মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয় অর্থ বিভাগে। তারা পাঠায় অর্থ মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়ে দাম নির্ধারণ করে। সংশ্লিষ্টরা জানান, বাণিজ্যিক ভিত্তিতে দেশে সরকারি ও বেসরকারিভাবে হরিণের খামার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। বর্তমানে দেশে বেসরকারিভাবে বেশকিছু সৌখিন হরিণের খামার স্থাপিত হয়েছে। তবে সরকারিভাবে শুধুমাত্র চিড়িয়াখানায় হরিণ লালনপালন করা হয়ে থাকে। সেখান থেকে বেসরকারি উদ্যোক্তাদের কাছে হরিণ বিক্রি করা হয়। বাণিজ্যিক ভিত্তিতে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে হরিণের খামার প্রতিষ্ঠার জন্য পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন বন অধিদপ্তরে বাংলাদেশ চিত্রল হরিণ লালনপালন সংক্রান্ত নীতিমালা-২০০৯ রয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা (ঢাকা) থেকে ব্যক্তি এবং খামারি পর্যায়ে হরিণ বিক্রি করা হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গত ২০শে এপ্রিল বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার উপদেষ্টা কমিটির ১১তম সভায় প্রতিটি হরিণের বিক্রি মূল্য ৭০ হাজার টাকা নির্ধারণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়াধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর থেকে প্রস্তাব প্রণয়ন করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। গত ২৮শে সেপ্টেম্বর জাতীয় চিড়িয়াখানার চিত্রা হরিণ ও ময়ূরের বিক্রি মূল্য নির্ধারণ ও পুনঃনির্ধারণে সম্মতি দেয়ার লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগে প্রস্তাব পাঠানো হয়। পরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের গত ১০ই অক্টোবর জাতীয় চিড়িয়াখানার চিত্রা হরিণ (প্রতিটি) প্রস্তাবিত বিক্রি মূল্য ৭০ হাজার টাকা এবং ময়ূর (প্রতি জোড়া) ৫০ হাজার টাকা মূল্যে নির্ধারণ ও পুনঃনির্ধারণে সম্মতি দেয়। মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগে প্রতিটি হরিণের সরকার নির্ধারিত মূল্য ছিল ৩৫ হাজার টাকা। বাংলাদেশ চিত্রল হরিণ লালনপালন সংক্রান্ত নীতিমালা-২০০৯ এর আলোকে হরিণ ক্রয়কারীর আবেদনপত্র এবং বনবিভাগ কর্তৃক অনাপত্তিপত্র দাখিল সাপেক্ষে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত মূল্য নগদ পরিশোধ করে চিড়িয়াখানা থেকে হরিণ কেনার রসিদ সংগ্রহ করতে হয়। হরিণ ক্রয়কারী এই রসিদ বন বিভাগে দাখিল করে ব্যক্তি/খামার পর্যায়ে হরিণ পালনের লাইসেন্স এবং পজেশন সার্টিফিকেট গ্রহণ করেন। এই লাইসেন্স এবং পজেশন সার্টিফিকেট চিড়িয়াখানায় উপস্থাপনের পর ক্রয়কারীর কাছে হরিণ হস্তান্তর করা হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.