শিক্ষিত-স্মার্ট-সুন্দরী। এদের ফাঁদে ফেলে কৌশলে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে একটি চক্র। এই চক্রের দুই সদস্যকে আটক করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ফাহাদ ইবনে আব্দুল্লাহ ওরফে রেজভী (২৪) ও শারমিন আক্তার টুম্পা (২১)। গতকাল পিবিআই এ তথ্য জানায়। পিবিআই-এর বিশেষ পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পিবিআই (ঢাকা মেট্রোর) এর একটি বিশেষ টিম অভিযান চালিয়ে বাড্ডা লিংক রোড থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন সেট ও টুম্পার সঙ্গে এক ধনাঢ্য ব্যক্তির আপত্তিকর ৫টি অশ্লীল ছবি উদ্ধার করা হয়। তিনি বলেন, গ্রেপ্তারকৃতরা রাজধানীর বিভিন্ন অভিজাত এলাকার প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও ধনাঢ্য ব্যক্তিদের ফোন নম্বর ও ভিজিটিং কার্ড সংগ্রহ করে। পরে চক্রের পুরুষ সদস্য ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে টার্গেট করা ব্যক্তির সঙ্গে সখ্য গড়ে তুলে। একপর্যায়ে চক্রের সদস্য সুন্দরী নারীকে সহকর্মী পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন নামিদামি রেস্টুরেন্টে চা-কফির অফার করে ও আড্ডা দেয়। এভাবে কিছুদিন চলার পর একপর্যায়ে চক্রের ওই নারী সদস্য ধনাঢ্য ওই ব্যবসায়ীর সঙ্গে বন্ধুত্ব করে। চক্রটি বন্ধুত্বের সুবাদে মেয়েটিকে দিয়ে ব্যবসায়ীর সঙ্গে এককভাবে গোপনে তার অফিস, ফ্ল্যাট বা অন্য কোনো নিরিবিলি গোপনস্থানে পাঠায়। সেখানে গিয়ে শারীরিক সম্পর্ক তৈরি করে ও একপর্যায়ে গোপনে অশ্লীল ছবি ধারণ করে। পরবর্তীতে ওই অশ্লীল ছবির কথা বলে ভুক্তভোগী ব্যক্তির কাছে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করে। তাদের দাবি না মানলে ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া বা পরিবারকে জানিয়ে দেয়ার হুমকি দেয় চক্রের সদস্যরা। কিন্তু এতেও কাজ না হলে চক্রের সদস্যরা বিভিন্ন সময় ধর্ষণ বা ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা দিয়ে অর্থ হাতিয়ে নেয়। পিবিআই’র এ কর্মকর্তা বলেন, রাজধানীর গুলশানের জনৈক একজন বাসিন্দা ও ব্যবসায়ী গ্রেপ্তারকৃতদের প্রতারণার শিকার হন। গত ১২ই জুন ভাটারার অটো মিউজিয়ামে গাড়ি কিনতে যান। সেখানে আটক ফাহাদ ইবনে আব্দুল্লাহর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। ফাহাদ তাকে একাধিক গাড়ির তথ্য দিয়ে নিজেকে একজন গাড়ি ব্যবসায়ী পরিচয়ে সখ্য গড়ে তুলে। একপর্যায়ে ফাহাদ তাকে তার এক নারী বান্ধবীর চাকরির প্রয়োজনের কথা বলে। এরই প্রেক্ষিতে গত ১৫ই আগস্ট রাতে ফাহাদ তার নারী বান্ধবীকে নিয়ে ওই ব্যক্তির উত্তরার অফিসে যায়। সেখানে ফাহাদ নারী বান্ধবীকে ব্যবসায়ীর রুমে দিয়ে কৌশলে সরে গিয়ে গোপনে বিভিন্ন ধরনের আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও তুলে রাখে। পরবর্তীতে গত ১৭ই আগস্ট ব্যবসায়ীর অফিসে গিয়ে আপত্তিকর ছবি ও ভিডিও দেখিয়ে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। অন্যথায় ছবিগুলো ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয়া ও তার পরিবারসহ আত্মীয়-স্বজনদের কাছে পাঠানোর হুমকি দেয়। পরে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী বিষয়টি উল্লেখ করে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এরপর তদন্ত করে প্রতারক চক্রের দুই সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। চক্রের অন্য সদস্যদের আটকের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও পিবিআই কর্মকর্তা জানান।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.