জয়ললিতার মৃত্যুর কারণ এবং হাসপাতালে থাকাকালীন তার শারীরিক অবস্থার বিষয়ে বিশদ জানতে চেয়ে আদালতে পিটিশন দাখিল করেছিলেন পিএ যোসেফ নামে এক এআইডিএমকে কর্মী। বৃহস্পতিবার সেই পিটিশনের শুনানিতে বিচারপতি এস বৈদ্যনাথন বলেন, ‘গোটা ঘটনা ঘিরেই রহস্য রয়েছে। দেখা গিয়েছিল জয়ললিতা ধীরে ধীরে সুস্থ হচ্ছেন। তিনি আইসিইউতে খাবার খেতে শুরু করেছিলেন। বেশ কিছু কাগজপত্রে সইও করেছিলেন। এমনকি দলীয় নেতাদের সঙ্গে নাকি বৈঠকও করেছিলেন। তারপর আচমকা তিনি মারা গেলেন।’
আদালতের প্রশ্ন, জয়ললিতার মৃত্যুর এতদিন পরেও কেন তার মেডিকেল রিপোর্ট আদালতে জমা পড়ল না? ঠিক কী কারণে জয়ললিতার মৃত্যু হয়েছিল সেই কারণটা এবার অন্তত স্পষ্ট হওয়া উচিত বলে বিচারপতি বৈদ্যনাথন এদিন মন্তব্য করেছেন। রাজ্য সরকারের তরফে অবশ্য অ্যাডভোকেট জেনারেল মুথুকুমারস্বামী দাবি করেছেন, জয়ললিতার মৃত্যু নিয়ে কোনো রহস্য, সংশয়ের অবকাশই নেই। তবে মুথুকুমারস্বামীর কথায় গুরুত্ব দেননি বিচারপতি। তিনি স্পষ্ট করে বলেন, ‘আমার নিজের মত, সংশয় থাকলে তার দেহ তুলে এনে পরীক্ষার নির্দেশ দিতে পারি।’ তবে এআইডিএমকে দলের মুখপাত্র সিআর সরস্বতীর দাবি, ‘আমরা ৭৫ দিন ধরে মিথ্যা কথা বলতে যাব কেন! হার্ট অ্যাটাক কী আগে থেকে জানিয়ে আসে?’
পিএ যোসেফের পিটিশনে বলা হয়, ২২ সেপ্টেম্বর জয়ললিতার এ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি হওয়া থেকে পরপর ঘটনাবলীর উল্লেখ করে দাবি করা হয়েছে, নেত্রীর মৃত্যুর আগে তাকে ঘিরে ‘চরম গোপনীয়তার আবরণ’ তৈরি হওয়ায় সংশয় ছড়িয়েছে। যেসব প্রশ্ন উঠছে, সেগুলো খতিয়ে দেখতে সুপ্রিমকোর্টের কোনো অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে তদন্ত কমিশন গঠনের দাবিও জানিয়েছেন যোসেফ। এ পিটিশনের পরবর্তী শুনানি হবে আগামী বছরের ৯ জানুয়ারি।
এদিকে বৃহস্পতিবার তামিলনাড়ুর শাসক দল এআইএডিএমকের সাধারণ পরিষদের বৈঠক হয়েছে চেন্নাইতে। দলীয় আইন ভেঙে দিয়ে সেই বৈঠকে এআইএডিএমকে নেতারা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, পরবর্তী সাধারণ সম্পাদক হচ্ছেন জয়ললিতার বান্ধবী শশীকলা নটরাজন। তিনি সাধারণ সম্পাদক পদ গ্রহণে রাজি হয়েছেন বলে মুখ্যমন্ত্রী ও পনীরসেলভম নিজেই জানিয়েছেন।
এআইএডিএমকে সদস্য না হওয়ায় শশীকলা বৈঠকে ছিলেন না। তিনি জয়ললিতার পোয়েস গার্ডেনের বাড়িতেই ছিলেন। বৈঠক শেষ করেই ও পনীরসেলভম ও অন্য এআইএডিএমকে নেতারা সোজা পোয়েস গার্ডেন পৌঁছান। শশীকলাকে দলীয় সিদ্ধান্তের কথা জানান। পরে বাইরে এসে পনীরসেলভম সংবাদ মাধ্যমকে জানান, শশীকলা সাধারণ সম্পাদক পদ গ্রহণ করতে রাজি হয়েছেন। ২ জানুয়ারি দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিতে চলেছেন তিনি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.