কাল দুপুরে নেপিয়ারে পৌঁছানোর পর বিকেলে খেলোয়াড়দের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। এরপর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শ্রীলঙ্কান এই কোচ দিয়েছেন অনেক কিছুর ব্যাখ্যাও—
ওয়ানডে সিরিজে ৩-০-তে হার
৩-০-তে হারা সব সময়ই হতাশার। একটু বেশি অভিজ্ঞতা থাকলে আর প্রয়োজনের সময় একটু ভালো সিদ্ধান্ত নিতে পারলে আমরা আরও ভালো করতাম।
মুশফিকের অনুপস্থিতি ও এক ম্যাচে তিন পরিবর্তন
*মুশফিকের চোট দুর্ভাগ্যজনক। ও ভালো ফর্মে ছিল, প্রথম ম্যাচে রান করেছে। তার চোট বড় ধাক্কা। তবে নুরুল হাসান এসে ভালো খেলেছে। দ্বিতীয় ম্যাচে তিনটি পরিবর্তনের আরেকটিও বাধ্য হয়েই। মোস্তাফিজকে বিশ্রাম দিতে হয়েছে। ফিজিও বলেছে, চোট কাটিয়ে সাত মাস পর ফিরেছে সে। তাকে ছয় দিনের মধ্যে তিনটি ম্যাচ খেলানো যাবে না।
তানভীর হায়দারের অন্তর্ভুক্তি
*আমরা দেখতে চেয়েছি, সে লেগ স্পিন কেমন করে। সে অনুশীলনে ভালো বোলিং করেছে। সিডনিতে এবং এখানেও নেটে ভালো বল করেছে। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি ও ইংল্যান্ড বিশ্বকাপের কথা ভেবে আমরা একজন লেগ স্পিনারের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।
তানভীরকে নিয়ে হিতে বিপরীত হয়েছে কি না
*অবশ্যই সেটা হয়নি। একজন এসেই দুই ম্যাচে ভালো করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করে ফেলবে, এটা সব সময় হয় না। শেন ওয়ার্ন সর্বকালের সেরা স্পিনার। সেও প্রথম দুই ম্যাচে কিছুই করেনি। তানভীর সিরিজের প্রথম ম্যাচে খারাপ খেলেনি। আর দ্বিতীয় ম্যাচে আমাদের কোনো স্পিনারই ভালো করেনি। তবে আমি কখনোই দু-এক ম্যাচ দেখে কোনো ক্রিকেটারকে বিচার করি না। ওর মধ্যে কিছু আছে বলেই ওকে দলে নেওয়া হয়েছে। নির্বাচকেরা তাকে দলে নিয়েছে একজন লেগ স্পিনিং অলরাউন্ডার হিসেবে। আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই একজন লেগ স্পিনার খুঁজে আসছি। যার মধ্যে শুরুতে সম্ভাবনা দেখেছিলাম, দুর্ভাগ্যজনকভাবে সে বিভিন্ন কারণে ভালো করতে পারেনি। তানভীরকে আমরা ভেবেছি দ্বিতীয় সেরা। সেই কারণেই সে এখানে।
প্রায় সব ম্যাচেই ব্যাটিং ব্যর্থতা
*এটা আসলেই হতাশার। তবে আমরা বিদেশের মাটিতে খেলছি অনেক দিন পর, এটাও মনে রাখতে হবে। যারা শুরুতে আউট হয়েছে, তাদের নিয়ে আমার দুঃখ নেই। কিন্তু যারা থিতু হয়েও বড় কিছু করতে পারল না, তাদের নিয়ে বেশি হতাশ। এই সিরিজে দুই দলের পার্থক্যই ছিল এটা। ওরা আমাদের ব্যাটসম্যানদের বিপক্ষে পরিকল্পনা ঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছে এবং ফিল্ডিং দিয়ে চাপে রেখেছে। আর আমরা তাদের সামনে ভেঙে পড়েছি।
সৌম্যকে এক ম্যাচ খেলানো
*অবশ্যই ওর প্রতি সিদ্ধান্তটা কঠিন হয়ে গেছে। তবে পরিবর্তনগুলো কৌশলগত কারণেই আনতে হয়েছে। উইকেট দেখার পর মনে হয়েছিল, আরেকজন স্পিনার প্রয়োজন। মুশফিকের চোটও কম্বিনেশন বদলানোর একটা কারণ। তবে সৌম্য যখনই রান করেছে, আমরা ম্যাচ জিতেছি। এই কারণেই এখনো ওর ওপরে আস্থা রাখছি। এখনো ওর গড় চল্লিশের বেশি, স্ট্রাইক রেট ১০০; বাংলাদেশে এ রকম আর কে আছে? বিশ্ব ক্রিকেটেই কজন আছে? এই ছেলেটা জানে কীভাবে খেলতে হয়। খেয়াল করলে দেখবেন স্মিথ, রুটসহ বিশ্ব ক্রিকেটের এখনকার সেরা ব্যাটসম্যানরা সবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আাসার পর খারাপ সময় কাটিয়েছে, আবার ফিরেও এসেছে। আশা করি, সৌম্যও যতটা সম্ভব দ্রুত নিজেকে ফিরে পাবে।
অভিজ্ঞদের পারফরম্যান্স নিয়ে
*সিনিয়রদের এগিয়ে আসতেই হবে। প্রথম বিদেশ সফরে আসা নতুন ছেলেদের ওপর বেশি ভরসা করা যায় না। সিনিয়ররা যখন ব্যাটিং করবে, শুরুটা ভালো হলে সেটাকে বড় ইনিংসে রূপ দিতেই হবে। বোলিং নিয়েও আমি হতাশ। আমরা নিজেদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারিনি। দ্বিতীয় ম্যাচের কথা যদি ধরি, ওরা ২৫২ রান করতে পারে না। ৮ উইকেটে ২০০ রানের পর খুব বেশি রান দিয়ে ফেলেছি আমরা। প্রথম ম্যাচে ৩৪১ রানও খুব বেশি ছিল। ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডিংয়ে আমরা নিজেদের প্রতিভার প্রতি সুবিচার করিনি।
টি-টোয়েন্টি দলে শুভাগত
*সে তার শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচটি খেলেছে গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে। আমি মনে করি, দল নির্বাচনে আমাদের ধারাবাহিক হতে হবে। সে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছে এবং শেষ দুই ম্যাচে ভালো বোলিংও করেছে। ওর সঙ্গে জায়গা নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে মোসাদ্দেকের। সেও ভালো ক্রিকেটার।
নাসিরকে নিয়ে কী চিন্তা
*ওকে প্রচুর রান করতে হবে এবং উইকেট নিতে হবে। গত দুই বছরে ওর রেকর্ড দেখুন, সব পরিষ্কার হয়ে যাবে। আপনাদের হয়তো ধারণা, আমার এখানে ভূমিকা আছে। মোটেও তা নয়। আমি পরিসংখ্যান ও দলে অবদান দেখে কাজ করি। সে অবদান রাখতে পারেনি। আর এই সিরিজে এই কন্ডিশনে আমরা হয়তো তিনজন সিমার নিয়ে খেলব। স্কোয়াডে একই রকম ক্রিকেটার দুজনের বেশি বয়ে বেড়ানোর দরকার নেই।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.