কম খরচে নগরীর একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আলোকিত করার পাশাপাশি সৌন্দর্য বাড়ানোর লক্ষ্যে স্থাপন করা হয় সোলার লাইট। এ প্রকল্পে ব্যয় করা হয় ২ কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার ৬৫০ টাকা। কিন্তু ৬০ ওয়াটের এই সৌরবাতি চাহিদামত আলো দিতে পারছে না। এতে সৌর বিদ্যুৎ নির্ভর এই প্রকল্পে আশাব্যঞ্জক সুফল দেখছে না ডিএসসিসি। এ পর্যায়ে পরীক্ষামূলক এই প্রকল্পের পরিবর্তে কি করা যায় তা নিয়ে ভাবছেন সংশ্লিষ্টরা। ডিএসসিসি সূত্র মতে, বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে সৌরশক্তি ব্যবহার করে রাতে রাজধানীর সড়ক আলোকিত করতে পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হয় কাকরাইল মসজিদ থেকে নটর ডেম কলেজ পর্যন্ত সড়কে। বসানো হয় ৬১টি ল্যাম্পপোস্ট। প্রতিটি পোস্টের ওপর বসানো সাড়ে ৫ ফুটের এক জোড়া সোলার প্যানেল। ৬১টি পোলে মোট ১২২টি বাতির এই প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দ ছিল ৩ কোটি ৯৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা। তবে সর্বনিম্ন দরদাতা ২ কোটি ২৪ লাখ ২১ হাজার ৬৫০ টাকায় এই প্রকল্পের কাজ শেষ করে। কথা ছিল এতে সফলতা এলে পরবর্তীতে রাজধানীর আরামবাগ, বাংলামোটর, গুলশান, হাতিরঝিল, নাবিস্কো এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়ও প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। তবে বাস্তবায়নের কিছুদিন পরই স্পষ্ট হতে থাকে যে ব্যর্থ হতে যাচ্ছে পরীক্ষামূলক প্রকল্পটি। আলোর স্বল্পতায় প্রকল্প এলাকার সড়কগুলো আলোকিত হওয়ার বদলে অন্ধকারে নিমজ্জিত হতে থাকে। এ পর্যায়ে নতুন প্রকল্পের মাধ্যমে ওই সড়কে এলইডি লাইট স্থাপনের উদ্যোগ নেয় ডিএসসিসি। সোয়া দুই কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত প্রকল্পটি অপসারণ করে সেখানে সোডিয়াম বাতির বিদ্যুৎ পোল স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়। এ লক্ষ্যে একটি প্রস্তাবনাও পেশ করা হয়েছে। কিন্তু আইনি জটিলতা ও সরকারের ‘নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ’ প্রকল্পের আপত্তি থাকায় সেদিকে আর অগ্রসর হতে পারছে না ডিএসসিসি। এ বিষয়ে ডিএসসিসি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী (বিদ্যুৎ সার্কেল) মো. জাফর আহম্মেদ বলেন, ‘পরীক্ষামূলকভাবে প্রকল্পটি স্থাপনের পর নানা কারণে এর সুফল পাওয়া যাচ্ছে না। বিশেষ করে সৌর প্যানেলের ওপর ধুলাবালি ও যানবাহনের ধোঁয়ার কারণে প্যানেলগুলোতে ঠিকমতো সূর্যের আলো লাগে না। এতে আলোর চাহিদা পূরণ হচ্ছে না। সংশ্লিষ্টরা জানান, প্রকল্পটি স্থাপনের আগে এসব সড়কের পোলে ১৫০ ওয়াটের বাতি ছিল। কিন্তু সৌর প্রকল্পে লাগানো হয় মাত্র ৬০ ওয়াটের বাতি; যা সড়ক আলোকিত করার জন্য যথেষ্ট নয়। সমপ্রতি সরকারের সাসটেইনেবল অ্যান্ড রিনিউয়েবল এনার্জি ডেভেলপমেন্ট অথরিটি প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করেছে। সংস্থাটি জানিয়েছে, বাস্তবায়ন হওয়া প্রকল্পটি বাতিল করা যাবে না। এর পরিবর্তে অন্য কিছুও স্থাপন করা যাবে না। তবে কিভাবে এটাকে উন্নত করা যায় সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.