দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ চৌধুরী শুধু একটি নাম নয় একটি ইতিহাস। একাধারে বহুধা গুনে গুনান্বিত ছিলেন তিনি। দেশের যে কয়েকজন খ্যাতিমান সিংহ পুরুষ ছিলেন তাদেরই একজন দেওয়ান আজরফ চৌধুরী। কালের গর্বে সব হারিয়ে গেলেও কিছু মানুষের সুমহান কৃতিকর্ম এখনো ইতিহাসের পাতায় চির স্মরণীয় হয়ে আছে। সুনামগঞ্জের প্রখ্যাত মরমী সাধক জমিদার দেওয়ান হাছন রাজা চৌধুরীর দৌহিত্র ছিলেন জাতীয় অধ্যাপক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ চৌধুরী। জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার দোহালিয়ায় অবস্থিত দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ চৌধুরী ও তার পূর্ব পুরুষদের স্মৃতিবিজড়িত শতবর্ষী জমিদার বাড়িটি এখন শুধু কালের সাক্ষী হয়ে স্বগৌরবে দাড়িয়ে গৌরবোজ্জ্বল অতীতকে জানান দিচ্ছে। সুষ্ঠু তদারকি ও সংস্কারের অভাবে দার্শনিক দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ চৌধুরীর শেষ স্মৃতিটুকুও এখন বিলুপ্তির পথে।
তিনি ছিলেন তৎকালীন আসাম উচ্চ পরিষদের এম.এল.এ(এম.পি)-১৯৪৬ ইং এবং ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠন তমুদ্দুন মজলিসের প্রতিষ্ঠাতাদের একজন। সরকারি ভাবে সংস্কার কাজ ও সুষ্ঠু তদারকির উদ্যোগ নিলে উনার পারিবারিক বাসভবনটি একটি সম্ভাবনাময় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠবে বলে এলাকার স্থানীয় ও শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিত্বদের ধারণা। কিন্তু দুঃখজনক কয়েক যুগ ধরে উক্ত ঐতিহাসিক স্থাপনা অবহেলায় পড়ে থাকলেও এখনো পর্যন্ত এগুলো রক্ষায় কেউ এগিয়ে আসেনি। ভূমিখেকুদের হাত থেকে দখল মুক্ত হয়নি বেদখলীয় জমি। এমনকি প্রশাসনও আজ অবধি পর্যন্ত কোনো ধরনের উদ্যোগ গ্রহন করেনি। এভাবে চলতে থাকলে আর কয়েক বছর পরে হয়তো দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ চৌধুরীর শেষ স্মৃতি চিহ্ন টুকুও অবশিষ্ট থাকবেনা। স্থানীয় এলাকাবাসী ও উনার জীবিত উত্তরসূরিদের প্রানের দাবি অবিলম্বে উক্ত ঐতিহাসিক সম্পদ গুলো রক্ষায় প্রশাসনের দ্রুত কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহন করা হোক এবং দেওয়ান মোহাম্মদ আজরফ চৌধুরীর স্মৃতি ধরে রাখতে আগামী প্রজন্ম যাতে সঠিক ইতিহাস জানতে পারে সেই লক্ষ্যে এখানে সরকারি ভাবে জাদুঘর নির্মাণ করা হোক।
এব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাইফুল ইসলাম জানান, বিষয়টি প্রশাসনের নজরে এসেছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরকে শিগ্রই এ বিষয়টি জানানো হবে যাতে সরকারি ভাবে উক্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সম্বলিত এলাকাটি সংরক্ষণের আওতায় আনা যায়। এছাড়া স্থানীয় ভাবে যাতে আশু পদক্ষেপ গ্রহন করা যায় এজন্য উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও এমপি মহোদয়কে বিষয়টি অবহিত করা হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.