যশোরে আবু সাঈদ নামের এক যুবককে আটক করে থানার ভেতর ঝুলিয়ে পেটানোর অভিযোগ তদন্তে একটি বিভাগীয় কমিটি গঠন করেছে পুলিশ। গণমাধ্যমে এ-সংক্রান্ত ছবি ও খবর প্রকাশের পর গতকাল শুক্রবার এই কমিটি গঠন করা হয়। যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শহীদ মো. আবু সরোয়ারের নেতৃত্বে দুই সদস্যের তদন্ত কমিটির অপর সদস্য সহকারী পুলিশ সুপার (ক সার্কেল) নাঈমুর রহমান। এ ব্যাপারে মো. আবু সরোয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘অভিযোগ তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ইতিমধ্যে ঘটনার শিকার আবু সাঈদ ও তাঁর পরিবার নির্যাতনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।’ গত বৃহস্পতিবার সাঈদের এক স্বজন সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, সাঈদকে বুধবার রাতে আটক করে নিয়ে যান যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) নাজমুল ও সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হাদিবুর রহমান। পরে তাঁরা দুই লাখ টাকা চান। টাকা দিতে অস্বীকার করায় সাঈদকে হাতকড়া পরিয়ে থানায় ঝুলিয়ে পেটানো হয়। শেষমেশ ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তাঁকে ছাড়িয়ে আনা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক থানার এক পুলিশ সদস্য ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তবে সাঈদ ও তাঁর স্বজনেরা গতকাল দুপুরে যশোর প্রেসক্লাবে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, সাদাপোশাকে একদল পুলিশ বুধবার সাঈদকে যশোর সদর উপজেলার তালবাড়িয়া গ্রামের বাড়িসংলগ্ন এলাকা থেকে আটক করে নিয়ে যায়। তবে পুলিশ তাঁকে নির্যাতন করেনি। এর আগে সকাল নয়টার দিকে সাঈদের বাড়িতে স্থানীয় সাংবাদিকেরা গেলে তাঁর বাবা নুরুল হক বলেন, ‘সাদাপোশাকের পুলিশ আমার ছেলেকে বাড়ির পাশ থেকে ধরে নিয়ে যায়। সেই থেকে সে বাড়িতে ফেরেনি।’ তবে বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ সাঈদকে তাঁদের বাড়ি সামনে দেখা যায়। তখন সাঈদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘পুলিশ আমাকে ধরে নিয়ে হাজতে ২৪ ঘণ্টা আটকে রাখে। মা আর ভাই তদবির করে আমাকে ছাড়িয়ে নিয়ে আসে। পুলিশকে টাকাপয়সা দিয়েছে কি না, আমি জানি না।’ পুলিশ তাঁকে নির্যাতন করেনি এবং গণমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিটি তাঁর নয় বলে তিনি দাবি করেন। প্রকৃত ঘটনার ব্যাপারে জানতে চাইলে সাঈদের মা রোমেছা বেগম ও ভাই আশিকুর বলেন, টাকাপয়সা লেনদেন বা মারধরের কোনো ঘটনা ঘটেনি। এমনিতেই পুলিশ তাঁকে ছেড়ে দিয়েছে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.