প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের সহযোগীদের সঙ্গে রাশিয়ার সম্ভাব্য সম্পর্ক তদন্ত করছে আমেরিকার গোয়েন্দা সংস্থাগুলো। এরই অংশ হিসেবে বিভিন্ন যোগাযোগ ও আর্থিক লেনদেন হস্তগত করা হয়েছে। ৪৫তম মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের শপথ গ্রহণের প্রাক্কালে এ তদন্তের খবর জানিয়েছে নিউ ইয়র্ক টাইমস। পত্রিকাটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অন্যান্য বিষয়ের সঙ্গে তার সাবেক ক্যাম্পেইন ম্যানেজার পল মেনাফোর্টের ব্যবসায়িক লেনদেন তদন্তের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়, অব্যাহত গোয়েন্দা তদন্তের মানে হলো, ট্রাম্প এমন সময় শপথ নিলেন যখন তার কিছু সহযোগী তদন্তাধীন থাকবেন। এর আগে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো উপসংহারে পৌঁছেছিল যে, রাশিয়ান সরকার ট্রাম্পকে বিজয়ী করতে কাজ করেছে। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্প এসব এজেন্সির তত্ত্বাবধানে থাকবেন। সেই হিসেবে এই তদন্তগুলোর অন্তত কয়েকটিকে তিনি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত বা বন্ধ করার ক্ষমতা রাখেন। এতে বলা হয়, আদান-প্রদানকৃত বার্তার সঙ্গে ট্রাম্প শিবিরের বা খোদ ট্রাম্পের কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কি না, তা স্পষ্ট নয়। পাশাপাশি, ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল কমিটির (ডিএনসি) কম্পিউটার হ্যাকিং ও নভেম্বরের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন বিঘ্নিত করতে অন্যান্য প্রচেষ্টার বিষয়ে যে তদন্ত চলছে, তার সঙ্গে এই তদন্তের কোনো যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা-ও পরিষ্কার নয়। আমেরিকান সরকার এই অনুসিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে যে, ডিএনসির বিরুদ্ধে সাইবার হামলাসহ এই কম্পিউটার হ্যাকিং ক্যাম্পেইনের জন্য রাশিয়ার সরকারই দায়ী। বর্তমানে গোয়েন্দা সংস্থাগুলো যেসব তদন্ত করছে তার কিছুটার নজর হলো ট্রাম্পের পূর্ববর্তী ও বর্তমান উপদেষ্টাদের সঙ্গে রাশিয়ার ব্যবসায়িক লেনদেন। প্রেসিডেন্ট-ইলেক্টের সাবেক ক্যাম্পেইন চেয়ারম্যান ম্যানাফোর্ট ইউক্রেন ও রাশিয়ায় ব্যবসা করেছেন। সেখানে তার সঙ্গে যোগসূত্র রয়েছে এমন কয়েকজন ব্যক্তি আগে থেকেই ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির (এনএসএ) নজরদারিতে ছিলেন। এনএসএ’র সন্দেহ ছিল তাদের সঙ্গে রাশিয়ার ফেডারেল সিকিউরিটি সার্ভিসের সম্পর্ক রয়েছে। ম্যানাফোর্ট হলেন ট্রাম্প শিবিরের অন্তত তিনজন উপদেষ্টার একজন যাদের সঙ্গে রাশিয়ার সম্ভাব্য যোগসূত্র তদন্ত করা হচ্ছে। অন্য দুজন হলেন কার্টার পেইজ ও রজার স্টোন। প্রথম জন একজন ব্যবসায়ী ও ট্রাম্প শিবিরের বিদেশ নীতিবিষয়ক উপদেষ্টা। দ্বিতীয় জন রিপাবলিকান পার্টির কর্মী। তদন্তের নেতৃত্বে রয়েছে এফবিআই। সহায়তা করছে এনএসএ, সিআইএ ও রাজস্ব মন্ত্রণালয়ের আর্থিক অপরাধ ইউনিট। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে তদন্ত কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো অপরাধের অকাট্য প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, নজরদারিতে ধরা পড়া কিছু বার্তার ভিত্তিতে একটি গোয়েন্দা রিপোর্ট তৈরি করে হোয়াইট হাউজকে দেয়া হয়েছে। তবে রাশিয়ার কোনো কর্মকর্তা তদন্তের আওতায় রয়েছেন বা বিশেষ কোনো বার্তা আমেরিকান গোয়েন্দাদের সন্দেহ বাড়িয়েছে তা নিয়ে স্পষ্ট কিছু জানা যায়নি। ট্রাম্প ট্রানজিশন টিমের মুখপাত্র হোপ হিকস বলেছেন, কোনো ধরনের তদন্তের তথ্য বা তদন্তের ভিত্তি সম্পর্কে আমাদের কোনো ধারণা নেই। বৃহষ্পতিবার এক ইমেলে ম্যানাফোর্ট দাবি করেছেন, তার বিরুদ্ধে রাশিয়া সরকারের সঙ্গে জড়িত থাকার যে অভিযোগ, তা ডেমোক্রেটিক পার্টির নোংরা চাল এবং সম্পূর্ণ মিথ্যা। তার বক্তব্য, রাশিয়া সরকার বা কোনো কর্মকর্তার সঙ্গে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.