বাংলাদেশের বিতর্কিত লেখিকা তসলিমা নাসরিন জানিয়েছেন, তিনি আশা করেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় আসার পর পরিস্থিতির উন্নতি হবে এবং তার কলকাতায় ফেরা সহজ হবে। কিন্তু তার উপলব্ধি, তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো এ ব্যাপারে বাম সরকারের থেকেও কঠোর। আর তাই তসলিমা মনে করছেন, তিনি আসলে ভোটব্যাংক রাজনীতির শিকার। তিনি জানিয়েছেন, রাজনীতিবিদরা যে দলেরই হোন না কেন, তার সম্পর্কে সবার দৃষ্টিভঙ্গি একই। নয়াদিল্লির গোপন আস্তানা থেকে টেলিফোন সাক্ষাৎকারে ভারতের জাতীয় সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে এ কথা জানিয়েছেন তিনি। তসলিমা স্পষ্ট করে বলেছেন, আমার ব্যাপারে সব রাজনীতিবিদ একই প্ল্যাটফর্মে অবস্থান করছে। এর কারণ হলো মুসলিম মৌলবাদকে খুশি করতে পারলে ভোট পাওয়া সহজ হবে। তার মতে, এটাই প্রমাণ করে গণতন্ত্র কতটা দুর্বল এবং রাজনীতিবিদরা একজন লেখককে নিষিদ্ধ করে ভোট প্রত্যাশা করে। পশ্চিমবঙ্গে ঠিক এটাই ঘটছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তসলিমা বলেছেন, তার ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গ সরকার ভয়ঙ্কর রকম বিরোধী। কলকাতায় না থাকা সত্ত্বেও তার বই ‘নির্বাসন’-কে প্রকাশ করতে দেয়া হয়নি। তার লেখা একটি টিভি ধারাবাহিককে পর্যন্ত সম্প্রচার করতে দেয়া হয়নি মুসলিম মৌলবাদীদের আপত্তির কারণে। আর পশ্চিমবঙ্গে তো তাকে ঢুকতেই দেয়া হচ্ছে না। ১৯৯৪ সালের পর থেকে তসলিমা বাংলাদেশের বাইরে রয়েছেন। প্রথমে ইউরোপের দেশে থাকলেও ২০০৪ সাল থেকে ভারতে রয়েছেন তিনি। একসময় কলকাতাতেই স্থায়ীভাবে থাকার চিন্তাভাবনা করলেও ২০০৭ সালে মুসলিম মৌলবাদীদের একাংশের আন্দোলনের মুখে বামফ্রন্ট সরকার তাকে কলকাতা থেকে বহিষ্কার করেছিল। এরপর থেকেই তিনি নয়াদিল্লিতে অজ্ঞাত স্থানে অবস্থান করছেন। তসলিমা জানিয়েছেন, তার কলকাতায় ফেরার ব্যাপারে তিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লিখেও কোনো সাড়া পাননি। এমনকি একটি বাংলা দৈনিকে মমতার ব্যাপারে সদর্থক প্রবন্ধ লিখেও তার দৃষ্টি আকর্ষণে ব্যর্থ হয়েছি। তাকে আর লিখে যে কোনো লাভ নেই তসলিমা সেই সত্যে পৌঁছে গিয়েছেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.