ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানের কারণে গতকাল মঙ্গলবারও রাজধানীর বড় অংশজুড়ে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়েছে নগরবাসীকে। দীর্ঘক্ষণ যানজটে আটকে থেকে অনেকেই হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছায়।
গতকাল নিয়ে চলতি মাসে আওয়ামী লীগ এবং এর ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন ছাত্রলীগের জন্য চার দিন রাজধানীবাসী চরম দুর্ভোগে পড়ল। ৪ জানুয়ারি ছাত্রলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শোভাযাত্রা এবং পরদিন ‘গণতন্ত্রের বিজয় দিবস’ উপলক্ষে আওয়ামী লীগের পৃথক দুটি সমাবেশের কারণে যানজট হয়। ১০ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশের কারণে সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে পড়ে। সে সময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দুঃখ প্রকাশ করেছিলেন।
গতকাল বিকেলে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ছাত্রলীগের পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে সকাল থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে ছোট ছোট মিছিল নিয়ে আসেন সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এ সময় যেসব সড়ক দিয়ে মিছিল এসেছে, সেই সব সড়কের এক পাশ দিয়ে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে ওই সড়কসহ আশপাশের সড়কে যানজট শুরু হতে থাকে। বেলা তিনটার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের চারপাশের সড়কসহ শাহবাগ ক্রসিং, মিরপুর রোডের পূর্ব অংশ, প্রেসক্লাবের সামনের সড়কের এক পাশ, মৎস্য ভবনের সামনের মোড়, অফিসার্স ক্লাবের সামনের সড়ক, দোয়েল চত্বর, কাকরাইল চার্চ ও বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির পাশের কার্পেট গলি দিয়ে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। এতে শাহবাগ, প্রেসক্লাব, সেগুনবাগিচা, পল্টন, গুলিস্তানসহ রাজধানীর দক্ষিণাংশে তীব্র হয় যানজট। ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের নিয়ন্ত্রণকক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সড়কগুলো ১০-১৫ মিনিট বন্ধ ছিল।
আবদুর রহমান নামের এক ভুক্তভোগী বলেন, পুরান ঢাকার দোলাইরপাড় থেকে তিনটার দিকে তিনি গুলিস্তানে আসেন। গুলিস্তান পুরানা পল্টনের দিকের সড়কে সব যানবাহন স্থির দেখতে পেয়ে তিনি হাঁটা শুরু করেন। তিনি বলেন, গুলিস্তান থেকে নাইটিঙ্গেল মোড় পর্যন্ত সব গাড়ি আটকে ছিল। বাধ্য হয়ে তিনি হেঁটে গন্তব্যে গেছেন। মো. সেলিম নামের আরেক ব্যক্তি বলেন, বিকেল চারটার দিকে প্রেসক্লাব থেকে কাকরাইলে যাওয়ার সময় তিনি প্রেসক্লাবের সামনের সড়কের এক পাশ বন্ধ পেয়েছেন। এ সময় সেগুনবাগিচা এলাকায় বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের তীব্র জট ছিল।
রাজধানীর শাহবাগে কথা হয় মোটরসাইকেলচালক সোহাগের সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের আশপাশে যানজট না থাকলেও গুলিস্তানের দিকে অনেকক্ষণ যানজটে পড়ি।’ মেহেদি হাসান নামের একজন পথচারী কারওয়ান বাজার থেকে শাহবাগ হয়ে প্রেসক্লাবের দিকে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তিনি বলেন, ‘আমি আসাদগেটের ওদিকে জ্যামে পড়েছিলাম। রাস্তা বন্ধ থাকায় আমাকে অনেকটা পথ ঘুরে আসতে হয়েছে। এখন হেঁটে যাচ্ছি।’
জানতে চাইলে ঢাকা মহানগর ট্রাফিক পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (দক্ষিণ) মফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেন, যানজট পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। ভিভিআইপি মুভমেন্টের কারণে কিছু সড়ক অল্প সময়ের জন্য বন্ধ থাকায় কিছু সড়কে যানজট হয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যেই তা আবার স্বাভাবিক হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাফিক পুলিশের এক কর্মকর্তা বলেন, দক্ষিণাংশের যানজটের প্রভাব রাজধানীর উত্তরাংশেও পড়েছে। তবে এর তীব্রতা কম ছিল। সন্ধ্যায় পুনর্মিলনী অনুষ্ঠান শেষ হওয়ার পরও যানজট কমেনি।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.