আজ বৃহস্পতিবার (২৬ জানুয়ারি) বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের জন্মদিন। ১৯৪৭ সালের এই দিনে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। নিজের ৭১তম জন্মদিনের প্রথম প্রহরেই দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র নেতাদের শুভেচ্ছায় সিক্ত হয়েছেন ঢাকা কলেজের সাবেক এই শিক্ষক। বিএনপি চেয়ারপারসনের মিডিয়া উইংয়ের কর্মকর্তা শায়রুল কবির খান বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন, রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয় থেকে প্রতিদিনের কাজ শেষে রাত ১২টার দিকে বাসার উদ্দেশ্যে ফেরার মুহূর্তেই ফখরুল অভিনন্দিত হন। শায়রুল কবির জানান, জন্মদিনের প্রথম প্রহরেই বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আসাদুজ্জামান রিপনসহ উপস্থিত সবাই মির্জা ফখরুলকে শুভেচ্ছা জানান। মির্জা ফখরুল গত বছর বিএনপির মহাসচিব হিসেবে নির্বাচিত হন। এর আগে তিনি বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। ২০১১ সালের মার্চে দলের মহাসচিব খন্দকার দেলওয়ার হোসেন মৃত্যুবরণ করলে তিনি দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব হন। টানা পাঁচ বছর তিনি এই দায়িত্ব পালন করেন। মির্জা ফখরুল এর আগে কৃষি, পর্যটন ও বেসরকারি বিমান চলাচলবিষয়ক প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন এবং ঠাকুরগাঁও-১ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রি অর্জন করেছেন তিনি। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। তিনি তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্র ইউনিয়নের (পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন) সদস্য ছিলেন এবং সংগঠনটির এস এম হল শাখার সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানের সময়ে তিনি সংগঠনটির ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ছিলেন। ছাত্রজীবনের রাজনীতিতে সক্রিয় থাকলেও মির্জা ফখরুলের কর্মজীবন শুরু হয় শিক্ষকতায়। একাধিক সরকারি কলেজে অধ্যাপনা করেছেন তিনি। ১৯৮০’র দশকে তিনি মূলধারার রাজনীতিতে আসেন। এর আগে মির্জা ফখরুল ১৯৭০’র দশকের শেষে তৎকালীন উপ-প্রধানমন্ত্রী এস এ বারির ব্যাক্তিগত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ওই পদে তিনি ১৯৮২ সাল পর্যন্ত বহাল ছিলেন। ছাত্রজীবনে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকার পর শিক্ষকতার মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু মির্জা ফখরুলের। পরে ঠাকুরগাঁও পৌরসভায় নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে বিএনপিতে যোগ দেন তিনি। রাজনীতিতে তার এই ফিরে আসা প্রসঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনকে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, তার পরিবারের রাজনৈতিক ঐতিহ্যই এ ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা রেখেছে। তার দাদা, বাবা ও দুই চাচার সবাই রাজনীতি করেছেন। এ কারণেই তিনি ছাত্র রাজনীতিতে সক্রিয় হন। পরে দেশের উত্তরাঞ্চলের সংগঠন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধেও অংশ নেন তিনি। তিনি আরও বলেছিলেন, ১৯৭০ সালে পাবলিক সার্ভিস কমিশনে শিক্ষকতার জন্য পরীক্ষা দিয়েছিলেন তিনি। তাতে উত্তীর্ণ হন তিনি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে, এমন ধারণা করেছিলেন তিনি। সেই প্রেক্ষিতে শিক্ষকতাকেই উপযুক্ত পেশা হিসেবে বেছে নেন। কিন্তু দেশের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের কারণে শেষ পর্যন্ত ১৯৮৮ সালে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার নির্বাচনের মাধ্যমে ফিরে আসেন রাজনীতিতে। তার পরের বছরই তিনি যোগ দেন বিএনপিতে। ব্যক্তিগত জীবনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বিবাহিত এবং দুই মেয়ের জনক। তার স্ত্রী রাহাত আরা বেগম কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রিধারী। তার বড় মেয়ে মির্জা শামারুহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা শেষে সেখানেই শিক্ষকতা করেছেন। বর্তমানে তিনি অস্ট্রেলিয়ায় পোস্ট ডক্টরাল ফেলো হিসেবে কর্মরত আছেন। ছোট মেয়ে মির্জা সাফারুহও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করেছেন। তিনি বর্তমানে ঢাকার একটি স্কুলে শিক্ষকতা করছেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.