কতটুকু ত্যাগ করলে একজন নারী মা হতে পারে তার অনন্য দৃষ্টান্ত আমার মা । আমার প্রথম শিক্ষক, আমার সর্বকালের চিকিৎসক । প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার ডজন ডজন সনদ আমার মায়ের নেই বটে কিন্তু মাতৃত্বের মাপকাঠিতে আমার মায়ের সাথে প্রতিযোগিতা করবে এমন সাধ্য কার ? নিজে না খাইয়ে যে মানুষটি থালার সবটুকু খাবার আমার মুখে তুলে দিয়েছে, আমার অসুস্থাতায় রাতের পর রাত জেগে যিনি চোখের পানি জড়িয়ে সুস্থতার প্রার্থণা করেছেন সেই মহীয়সী আমার মা । এই মা-ই আমার দুনিয়ার জান্নাত এবং পরকালের জান্নাতে এই মায়ের সাথেই কাটাতে চাই ।
বাংলা বর্ণমালার একটি শব্দ দিয়ে গঠিত শব্দ মা । এ এক স্বার্থক বাক্য, পরিপূর্ণ ইতিহাস । মা ডাক ডেকে ক্লান্তি আসেনি কখনো বরং আরও অজস্র কোটিবার ডাকতে পারলে যেন তৃপ্তি পেতাম । মা ডাক যেন অমৃতের সুধা ।
তীব্র রোদে চলতে গিয়ে যিনি তার আঁচল আমার মাথায় মুড়িয়ে দিয়ে তার মাথাকে রোদে পুড়েছেন, প্রচন্ড শীতের রাতে আমার প্রস্রাব যখন বিছানা ভাসিয়ে দিয়েছে তখন সেই ভেজা যায়গায় যিনি তার পিঠ চেপে রেখে আমাকে তার বুকে পরম মমতায় আগলে রেখেছে তিনিই আমার মা । পৃথিবীতে আমার জন্য একটি মাত্র আদালত আছে যেখানে বিচারের আগেই আমি নির্দোশ প্রমাণিত হয়েছি বারবার; এটাও আমার মায়ের আদালত ।
এ জীবনে আমি আমার প্রতি আমার মায়ের ঋণের ভগ্নাংশও শোধ করতে পারবো না জানি । আমার মা ভালো থাকুক পৃথিবীর সবটুকু ভালোর মিলনে । প্রার্থণা করি, তিনি একালে যেমন আমার জন্য জান্নাত হয়েছেন তার বিনিময়ে পরকালে যেন খোদার জান্নাত তার হয়ে যায় ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.