চীনের সাথে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে বাংলাদেশে চীনের শ্রমঘন শিল্প কারখানা স্থানান্তরের প্রস্তাব করেছেন কুংমিং সফররত শিল্পমন্ত্রী আমির হোসেন আমু।
আজ সোমবার চীনের ইউনান প্রদেশের কুংমিং শহরে ওয়ান্ডা ভিস্তা হোটেলে শিল্প উৎপাদন দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা বিষয়ক আন্তর্জাতিক ফোরামে বক্তৃতাকালে শিল্পমন্ত্রী এ প্রস্তাব দেন। মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
চতুর্থ চীন-দক্ষিণ এশিয়া প্রদর্শনী এবং ২৪তম চীনা কুংমিং আমদানি-রপ্তানি পণ্য মেলার পাশাপাশি এ ফোরাম আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ ও চীনের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করেছে। এর মধ্যে বাংলাদেশ চীনে এক বিলিয়ন ডলারেরও কম রপ্তানি করছে। দ্রুত বাণিজ্য প্রসার ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির মাধ্যমে চীন বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদারে পরিণত হয়েছে।’
মন্ত্রী বলেন, “চীন সরকারের গৃহিত ‘বহির্বিশ্বে ছড়িয়ে পড়’ নীতির আলোকে চীনা উদ্যোক্তারা বাংলাদেশে বিনিয়োগে এগিয়ে আসতে পারে। ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ অধিকাংশ পণ্য শুল্ক ও কোটামুক্ত প্রবেশাধিকার পাচ্ছে। এ ছাড়া, বাংলাদেশে স্বল্প মজুরিতে বিপুল দক্ষ শ্রমিক এবং বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য আকর্ষণীয় ইনসেনটিভ সুবিধা রয়েছে। চীনা বিনিয়োগকারীরা এ সুবিধা কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশে কম দামে গুণগতমানের পণ্য উৎপাদন করে তা নিজেদের দেশে রপ্তানির সুযোগ নিতে পারে।”
আমির হোসেন আমু বলেন, ‘উচ্চ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগকারীদের জন্য একশটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছে। চীনা উদ্যোক্তাদের জন্য চট্টগ্রামে একটি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলা হচ্ছে। চীনা উদ্যোক্তাদের তৈরি পোশাক শিল্পের পাশাপাশি চামড়া, জাহাজ নির্মাণ, হালকা প্রকৌশল, এসএমই, আইসিটি, টেলিকম, প্লাস্টিক, সিরামিক, অটোমোবাইল, ওষুধ, অবকাঠামো উন্নয়ন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও কৃষিপণ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পে বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।’
এ ছাড়া দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য প্রবৃদ্ধির ধারা অব্যাহত রাখতে বাংলাদেশের উচ্চ প্রযুক্তি স্থানান্তর, অবকাঠামো উন্নয়নসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে চীনের অংশীদারত্ব বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।
চীন সরকারের জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক বিভাগ আয়োজিত এ ফোরামে সংশ্লিষ্ট বিভাগের ভাইস চেয়ারম্যান নিং জি, ইউনান প্রদেশের গভর্নর চেন হাউ, আফগানিস্তান, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মন্ত্রী, শিল্প উদ্যোক্তা, আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও বিশেষজ্ঞরা আলোচনায় অংশ নেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.