নিহত দুই বোন সুস্মিতা ও পুষ্পিতা। ছবি : জিনিউজ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বীরভূমে মুহাম্মদবাজারে দুই বোনের খুনের ঘটনায় মাসহ চারজনকে আটক করেছে স্থানীয় পুলিশ। আটককৃত পুরুষরা নিহত দুই বোনের মায়ের প্রেমিক বলে পুলিশের দাবি।
মুহাম্মদবাজার পুলিশ ফাঁড়ির কর্মকর্তা বিদ্যাধর ঝা-র বরাত দিয়ে জিনিউজ জানায়, নিহতদের মায়ের মোবাইল ফোনে কথোপকথনের সূত্র ধরে এই তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। গত শুক্রবার রাতে একজনকে কলকাতা এবং বাকি দুজনকে বীরভূম থেকে আটক করা হয়।
এরপর আজ শনিবার সকালে নিহত দুই বোনের মাসহ চারজনকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দিয়েছেন আদালত। এরই মধ্যে তাঁদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উদ্ধার করা হয়েছে বলে আদালতকে জানিয়েছে পুলিশ। এ ছাড়া পুলিশ জানায়, হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় এর আগে নিহত দুই বোনের চাচা ও চাচিকে আটক করা হয়েছিল।
গত বৃহস্পতিবার রাতে বীরভূমের মুহাম্মদবাজারের নিজের বাড়ি থেকে দুই বোন সুস্মিতা (১৫) ও পুষ্পিতার (১২) গলা কাটা দেহ উদ্ধার করা হয়। পরিবারের সূত্রে জানা গেছে, নিহত এই দুই বোনের বাবা দেবাশীষ সাধু ওমান থাকেন। হত্যাকাণ্ডের সময় নিহত দুই বোনের মায়ের কয়েকজন পুরুষ বন্ধু ওই বাড়িতে ছিলেন বলে জানিয়েছেন নিহত দুই বোনের পরিবারের সদস্যরা।
এদিকে নিহতদের মা অপর্ণা সাধুর দাবি, গত বৃহস্পতিবার বিকেলে তিনি বাইরে গিয়েছিলেন। রাতে বাড়ি ফিরে মেয়েদের গলা কাটা দেহ পড়ে থাকতে দেখেন মা। পুলিশের কাছে নিহতের মায়ের দাবি, বাড়ি ফিরে তিনি বিছানার ওপর ছোট মেয়ের গলা কাটা দেহ দেখতে পান।
কিন্তু প্রতিবেশীরা জানান, ঘরের দরজার সামনেই পড়ে ছিল বড় মেয়ে সুস্মিতার লাশ। কেন মা তার খোঁজ করেননি, সে প্রশ্নেরও সঠিক জবাব মেলেনি। এসব প্রশ্নের উত্তর মিললেই, জট অনেকটা কাটবে বলে মনে করছে পুলিশ।
সুস্মিতার দেহের পাশেই পড়েছিল একটি বঁটি। তাই দিয়েই সুস্মিতার গলা কাটা হয়েছে বলে সন্দেহ পুলিশের। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পেশাদার খুনি সাধারণত খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র ঘটনাস্থলে ফেলে যায় না।
এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর নিহত দুই বোনের মা অপর্ণা সাধুর দাবি ছিল, তাঁর মেয়েদের খুনের নেপথ্যে দেবর ও তাঁর স্ত্রীর হাত রয়েছে। সেই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে অপর্ণার দেবর জয়দেব ও তাঁর স্ত্রী সংযুক্তাকে আটক করেছিল পুলিশ। পুলিশ জানতে পেরেছে, একই বাড়িতে থাকলেও সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে ২০১১ সাল থেকে দুই পরিবারের মধ্যে মুখ দেখাদেখি প্রায় বন্ধ।
এ ছাড়া প্রথমে আটক করা হলেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে নিহত দুই বোনের দাদি, চাচাতো ভাই, গৃহশিক্ষক এবং বড় বোন সুস্মিতার প্রেমিককে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.