দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থা বা সার্কভুক্ত দেশগুলোকে পর্যটনে আকৃষ্ট করতে চায় ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। এ কারণে এসব দেশের সঙ্গে উত্তরবঙ্গের বিমান যোগাযোগ স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে উত্তরবঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক মানের বাসস্ট্যান্ডও করা হবে।
আজ বুধবার উত্তরবঙ্গে এক প্রশাসনিক বৈঠকে রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসব কথা জানান।
মমতা বলেন, ‘উত্তরবঙ্গের বাগডোগরা থেকে সার্কভুক্ত বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মতো দেশগুলোর সঙ্গে আকাশপথে যোগাযোগ তৈরি হলে প্রচুর পর্যটক লাভবান হবেন। বাগডোগরা বিমানবন্দরে নাইট ফ্লাইট চালুর ব্যাপারেও দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের পরিবহন সচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে উত্তরবঙ্গের প্রতিটি বিমানবন্দরের অবস্থা সম্পর্কে জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। পরিবহনসচিব রিপোর্ট তুলে ধরার পরেই সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করার নির্দেশ দেন মমতা। উত্তরবঙ্গের তোর্সা নদীর স্রোত যাতে বিমান ওঠানামার ক্ষেত্রে সমস্যার কারণ হয়ে না দাঁড়ায় তাই এই নদীর স্রোত প্রয়োজনে অন্যদিকে ঘুরিয়ে দেওয়া যায় কি না তাও খতিয়ে দেখতে বলেছেন তিনি। উত্তরবঙ্গের বিমানবন্দরগুলোকে সংস্কার করে কীভাবে আরো ভালো করা যায় সে ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেবকে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন।
উত্তরবঙ্গের বাগডোগরা ছাড়াও পাহাড়ি অঞ্চল কোচবিহার বিমানবন্দর থেকে যাতে ৪২ সিটের বিমান চালু করা যায় সেই বিষয় নিয়ে এই বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর ছাড়পত্র পাওয়ার পরেই আলোচনা শুরু হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ।
জানা গেছে, সার্কভুক্ত দেশগুলোর সঙ্গে উত্তরবঙ্গের বিমান যোগাযোগ সাবলীল করতে শিলিগুড়ির বাগডোগরা বিমানবন্দরের আমূল সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে মমতা সরকার। এই বিমানবন্দর থেকে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানে বিমান চলাচল করবে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে খুব শিগগির রাজ্যের পক্ষে এই বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হবে।
বৈঠকে মমতা আরো বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের উত্তরবঙ্গের ‘তেনজিং নরগে’ বাসস্ট্যান্ডটিকে ইন্টারন্যাশনাল বাসস্ট্যান্ডে পরিণত করা হবে। কারণ এই অঞ্চল দিয়ে ইন্দো-বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটান রাস্তা হবে।
তাই এই তিনটি দেশের সঙ্গে আমাদের সুসম্পর্ক তৈরি হবে। দেশগুলোর মধ্যে বিভিন্ন পরিষেবা চালু হবে। পর্যটকরা আসবেন। এতে রাজ্য সরকারের রাজস্ব বাড়বে।’
পশ্চিমবঙ্গের পাহাড়ি অঞ্চল উত্তরবঙ্গে রয়েছে প্রচুর দর্শনীয় স্থান। পাহাড় জঙ্গলে ঘেরা অপরূপ এই প্রকৃতির টানে দেশ-বিদেশের বহু পর্যটক আসেন এই এলাকায়। দেশের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদের স্বার্থে মূলত মমতা সরকারের এই উদ্যোগ।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.