সৌদি আরবে শিরশ্ছেদের প্রতীকী ছবি। ছবি : রয়টার্স
সৌদি আরবে চলতি বছরেই শতাধিক শিরশ্ছেদ করা হয়েছে্। সৌদি কর্তৃপক্ষের বরাত দিয়ে গতকাল শনিবার বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানায়। এর আগে গত শুক্রবার খুনের দায়ে এক সৌদি নাগরিকের শিরশ্ছেদ করে বলে জানিয়েছিল সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। ওই দিনই দেশটির সরকারি সংবাদ সংস্থা এসপিএ সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার বরাতে শতাধিক মানুষের শিরশ্ছেদের খবর জানায়।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে এসপিএ আরো জানায়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে সৌদি নাগরিক মুবারাক বিন মুহাম্মদ আল দুসারিকে গুলি করে হত্যার জন্য ফাহাদ আবদুল হাদি আল দুসারিকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আর এর শাস্তি হিসেবে রিয়াদে গত শুক্রবার জুমার নামাজের পর তাঁর শিরশ্ছেদ করা হয়।
এদিকে সৌদি আরবে ক্রমবর্ধমান মৃত্যুদণ্ড অবিলম্বে স্থগিত করার জন্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সৌদি কর্তৃপক্ষ হত্যা, মাদকপাচার, সশস্ত্র ডাকাতি, ধর্ষণ এবং ধর্মত্যাগের জন্য মৃত্যুদণ্ড দিয়ে থাকে। এ ছাড়া বেশির ভাগ লোকের মৃত্যুদণ্ড তলোয়ার দিয়ে দেহ থেকে মাথা বিচ্ছিন্ন করে কার্যকর করা হয়।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, মুসলমানদের সিয়াম সাধনার মাসে কোনো শিরশ্ছেদ করা হয়নি। ঈদুল ফিতরের পর গত শুক্রবার খুনের দায়ে এক সৌদির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের মধ্য দিয়ে আবার শাস্তি প্রদান শুরু হলো।
এদিকে অ্যামনেস্টির মিডল ইস্ট অ্যান্ড নর্থ আফ্রিকা বিভাগের প্রধান ফিলিপ লুথার বলেন, সৌদি আরব ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিষ্ঠুর ও অমানবিক শাস্তিকে দ্রুত কাজে লাগাচ্ছে। এ হার চলতে থাকলে শিগগিরই দেশটিতে শিরশ্ছেদের ঘটনার সংখ্য গত বছরের সমান বা এর চেয়ে বেশিতে গিয়ে দাঁড়াবে।
অ্যামনেস্টি জানিয়েছে, সৌদি আরবে গত বছর ১৫৮ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ইরান ও পাকিস্তানের পর সৌদি আরবেই বেশি লোকের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
ফিলিপ লুথার আরো বলেন, সৌদি আরবের কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই আনুষ্ঠানিকভাবে দ্রুত শিরশ্ছেদ এবং মৃতুদণ্ড প্রদানের জঘন্য প্রথা বিলোপ করতে হবে।
সৌদি আরবে হত্যা ও মাদকপাচারের জন্য বেশির ভাগ শিরশ্ছেদ করা হয়। তবে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে একদিনেই সন্ত্রাসবাদের দায়ে ৪৭ ব্যক্তির শিরশ্ছেদ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে শিয়া ধর্মীয় নেতা নিমর আল নিমরও ছিলেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইরানি বিক্ষোভকারীরা সৌদি দূতাবাসে হামলা চালায়। এতে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সংকট সৃষ্টি হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.