বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের অভিমত
ধর্ষণের শিকার নারীর মেডিকেল পরীক্ষায় ‘টু ফিঙ্গার’ পদ্ধতি অপ্রয়োজনীয় বলে হাইকোর্টে অভিমত দিয়েছেন পাঁচ ফরেনসিক মেডিকেল বিশেষজ্ঞ। তারা মৌখিকভাবে আদালতে বলেছেন, এ পদ্ধতি সেকেলে। যৌন নির্যাতনের পরীক্ষার আধুনিক অনেক পদ্ধতি আবিষ্কার হয়েছে। ‘টু ফিঙ্গার’ পদ্ধতি অনৈতিক।
তবে আদালত বলেছেন, ‘টু ফিঙ্গার’ পদ্ধতি বাদ দিলে প্রকৃত দোষী ব্যক্তি বেরিয়ে যায় কিনা সেটা ভেবে দেখতে হবে। আপনারা বিশেষজ্ঞ। সুতরাং আপনাদের ভেবেচিন্তে মতামত দিতে হবে।
বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে মঙ্গলবার চিকিৎসক ও আদালতের মধ্যে এ কথপোকথন হয়েছে।
শুনানিতে বিশেষজ্ঞরা লিখিত মতামত দেয়ার জন্য আদালতের কাছে ৩ মাস সময় চেয়েছেন। এ অবস্থায় পরবর্তী শুনানির জন্য ৫ সেপ্টেম্বর দিন রেখেছেন আদালত।
হাইকোর্টে যারা মতামত দিয়েছেন তারা হলেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সাবেক প্রধান ডা. হাবিবুজ্জামান চৌধুরী, একই হাসপাতালের ন্যাশনাল ফরেনসিক ডিএনএ প্রোফাইল ল্যাবরেটরির প্রধান ডা. সাফিউর আখতারুজ্জামান, মিরপুরের ডেল্টা মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল ডা. জাহিদুল করিম আহমেদ, বারডেম হাসপাতালের ফরেনসিক মেডিসিনের প্রফেসর ডা. গুলশান আরা এবং ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাসোসিয়েশন অব ল’, মেডিসিন অ্যান্ড সায়েন্সের ভাইস প্রেসিডেন্ট মুজাহিরুল হক।
৭ আগস্ট এক আদেশে ৫ চিকিৎসককে ১৬ আগস্ট আদালতে উপস্থিত থাকতে বলা হয়। এ নির্দেশে নির্ধারিত দিনে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকরা আদালতে হাজির হন। আদালত তাদের মতামত জানতে চান। এ সময় তারা মৌখিকভাবে তাদের মতামত দেন।
এ সময় আদালত বলেন, আইনগতভাবে পদ্ধতিটি আপাতত দৃষ্টিতে বৈধ বলে মনে হবে। তবে এ পদ্ধতিটিওতো এক ধরনের ধর্ষণ কিনা সেটা চিন্তা করতে হবে।
আদালত বলেন, এ পদ্ধতিতে ভিকটিমের স্বাস্থ্য পরীক্ষা পুরুষ চিকিৎসক নাকি নারী চিকিৎসক করছেন সেটা দেখার বিষয়। তবে যতদূর জানা যায়, সারা দেশে অধিকাংশ পরীক্ষাই করেন পুরুষরা। এটা আরও উদ্বেগের। এজন্যই বিশেষজ্ঞ হিসেবে আপনাদের (চিকিৎসক) সুনির্দিষ্ট মতামত প্রয়োজন। এ সময় সংশ্লিষ্ট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এসএম নাজমুল হক উপস্থিত ছিলেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.