তুরস্কে বিয়ের অনুষ্ঠানে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় ১২ থেকে ১৪ বছর বয়সী একটি শিশু। এ কথা বলেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান। তিনি বলেছেন, এ হামলার নেপথ্যে থাকতে পারে আইএস। আর এই হামলায় নিহতদের বেশির ভাগই শিশু। অনলাইন ইন্ডিপেন্ডেন্ট, ফক্স নিউজ, বিবিসি, এবিসিসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় এ খবর দেয়া হয়েছে। খবরে বলা হয়, দেশটির গাজিয়ানটেপ এলাকায় একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে আত্মঘাতী বোমা হামলার ঘটনা ঘটে। এই হামলায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৪ জন। হামলাকারী নিজেকেও উড়িয়ে দেয়। প্রেসিডেন্ট এরদোগান বলেছেন, ওই আত্মঘাতী হামলাকারীর বয়স প্রায় ১২ থেকে ১৪ বছর। তিনি ইস্তাম্বুল সিটি হলে জাতীয় টেলিভিশনে সরাসরি সম্প্রচারিত বক্তব্যে বলেন, হামলাকারীর বয়স ১২ থেকে ১৪ বছরের মধ্যে। তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে, দায়েশের (আইএস) মতো সংগঠন রয়েছে গাজিয়ানটেপে। অথবা তারাই সাম্প্রতিক সময়ে এমন হামলা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ খুঁজেছে। তারা এ যাবত মারাত্মক সব অপারেশন চালিয়েছে এবং চালাচ্ছে। অবশ্যই আমাদের নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী শক্তি দিয়ে এর বিরুদ্ধে তাদের উদ্যোগ আরও বৃদ্ধি করবে। এ সময় তিনি শনিবারের এ হামলার নেপথ্যে আইএস থাকতে পারে বলে মন্তব্য করেন। প্রসিকিউটররা বলেছেন, হামলাস্থল থেকে তারা ধ্বংস হয়ে যাওয়া একটি আত্মঘাতী ভেস্ট উদ্ধার করেছেন। আর এখনও পর্যন্ত হামলাকারীর পরিচয় জানা যায়নি। তুরস্কের হুরিয়েত সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়েছে, হামলাকারীর পরিচয় জানতে ডিএনএ পরীক্ষার ফলাফলের জন্য অপেক্ষা করছেন তুর্কি কর্তৃপক্ষ। তারা জানিয়েছেন, এই হামলায় ব্যবহৃত বোমার ধরন এর আগে কুর্দিদের ওপর চালানো হামলায় ব্যবহৃত বোমার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ। শনিবার যখন ওই বিয়ের অনুষ্ঠানে হলুদ সন্ধ্যা শেষ হয়ে এসেছিল তখনই হামলা হয়। তখন অনেক পরিবারই চলে গেছেন অনুষ্ঠান থেকে। এমন সময় সেখানে বিস্ফোরণ হয়। এতে নিহতদের বেশির ভাগই নারী ও শিশু। শুরুতে হামলায় ৩০ জন মারা গেলেও শনিবারই নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫১ জন। আহতদের অনেকের অবস্থাই ছিল আশঙ্কাজনক। এর মধ্যে গতকাল সকালেই মারা গেছেন আরও তিন জন। এখন হাসপাতালে আহত অবস্থায় ভর্তি রয়েছেন ৬৬ জন। তাদের মধ্যে ১৪ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে খবর দিয়েছে তুরস্কের দোগান বার্তা সংস্থা। নিহত ৫৪ জনের মধ্যে ২৯ জনেরই বয়স ১৮ বছরের নিচে। একজন তুর্কি কর্মকর্তা জানিয়েছেন, এর মধ্যে ২২ জনেরই বয়স ১৪ বছরের নিচে। ওই হামলায় বর-কনে আহত হলেও তাদের জীবন শঙ্কামুক্ত। তবে কনের এক বোন ও চাচা নিহত হয়েছেন। হামলার একজন প্রত্যক্ষদর্শী ২৫ বছর বয়সী ভেলি ক্যান। তিনি বলেন, ওই দিনের অনুষ্ঠান যখন শেষের দিকে, তখনই ওই বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। সবাই মিলে যেখানে নাচছিল সেখানেই বিস্ফোরিত হয় বোমাটি। তখনই এক বিভীষিকাময় দৃশ্যের অবতারণা হয়। ভেলি বলেন, ‘চারপাশে তখন কেবলই রক্ত আর মানুষের ছিন্নবচ্ছিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ।’
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.