নোয়াখালী উপকূলে গভীর সমুদ্রে জেগে উঠা এক রহস্যময়ী দ্বীপ ‘নিঝুম দ্বীপ’। সাগরের উত্তাল ফেনিল তরঙ্গ, নীল আকাশ আর ছেঁড়া ছেঁড়া মেঘেরা সেখানে নিত্য মাতামাতি করে। নীরবে নিভৃতে সাগরের গর্ভ থেকে ধীরে ধীরে এ দ্বীপটি জেগে উঠেছে। এখন সে পূর্ণ যৌবন প্রাপ্ত সবুজ অরণ্যের নেকাবে ঘেরা লাস্যময়ী সাগর দুহিতা। তার শান্ত স্নিগ্ধ রূপ ছড়িয়ে পড়ছে চতুর্দিকে। দেশ বিদেশের মানুষ কৌতূহলী হয়ে উঠছে এ দ্বীপকে ঘিরে।
নিঝুম দ্বীপের জন্ম:
নোয়াখালী দক্ষিণে সাগর বেষ্টিত হাতিয়া দ্বীপ। তারও দক্ষিণে অথই নীল সমুদ্র। শত শত বছর ধরে হাতিয়া দ্বীপ এক সমৃদ্ধশালী জনপদে পরিনত হয়। এখানের অনেকেই বংশ পরম্পরায় অবস্থাপন্ন কৃষক ও মৎস্যজীবি। অনেকে ছিলেন বনেদী ব্যাবসায়ী। উত্তাল সাগরের সাথে হেসে খেলে এদের বেড়ে উঠা। সাম্পান আর বড় বড় বজরা নিয়ে এরা যুগ যুগ ধরে সাগরে মাছ ধরতে যেতেন।পঞ্চাশের দশকের দিকে হাতিয়ার জেলেরা দক্ষিণে দূর সমুদ্রে দেখতে পেলেন সাগরের মধ্যখানে একটি বিশাল ভূখন্ড জেগে উঠছে। তাদের জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে তারা দেখে আসছেন সমুদ্রের এসব অঞ্চলে মাঝে মাঝে এরকম ভাসমান দ্বীপ ভেসে উঠে আবার তীব্র স্রোতে হারিয়েও যায়। তারা ভেবেছিলেন এরকমই হয়তো কোন দ্বীপ এটি। কিন্তু দেখা গেলো ধীরে ধীরে সে ভূখন্ড চিক চিক করে আরো বেশী দৃশ্যমান হচ্ছে দিন দিন। এক সময় সত্যিই সেটি একটি রুপময় দ্বীপে রুপ নিলো। এ দ্বীপের একটি বৈশিষ্ট্য হলো, এ দ্বীপের মাটি চিকচিকে বালুকা ময়। জেলেরা নাম দিলেন ‘বাল্লারচর’ বা বালুর চর। জেলেরা দূর সমুদ্রে যাবার পথে একটি বিশ্রাম আর আশ্রয়ের জায়গাও খুঁজে পেলেন। শুকনো মৌসুমে তাঁরা সে বালুর মধ্যে মাছ শুকানোর কাজও শুরু করলেন। ধীরে ধীরে সে চরে নল খগড়া উড়ি আর বুনো ঘাস জমাতে লাগলো। হাতিয়ার মহিষের বাথানিয়ারাও যাওয়া আসা শুরু করলেন সে দ্বীপে। ওসমান মিয়া নামে এক বাথানিয়াও তরঙ্গ বিক্ষুদ্ধ সাগর ডিঙ্গিয়ে তার বাথানের শত শত মহিষ গুলো নিয়ে গেলেন সে দ্বীপে। তার নামেই সে দ্বীপের নাম হয় চর ওসমান। সরকারী দলিল দস্তাবেজে চর ওসমান হিসাবে এটি এখন লিপিবদ্ধ আছে। ধীরে ধীরে দ্বীপটির আয়তন বাড়তে থাকে। কিছু কিছু গাছ গাছালী জন্ম নিলো। ফুটে উঠলো তার শান্ত স্নিগ্ধ রূপ। দ্বীপের পরিবেশ হলো নীরব নিঝুম তার চতুর্দিকে ফেনীল সাগরের ছন্দময় খেলা।
নিঝুম দ্বীপের নাম করণঃ
সত্তর দশকে হাতিয়ার সংসদ সদস্য ছিলেন আমিরুল ইসলাম কালাম। তিনি দেশী-বিদেশী পর্যটকদের নিয়ে গেলেন সে দ্বীপে। অবাক বিস্ময়ে মুগ্ধ দৃষ্টিতে সবাই অবলোকন করলেন এর শান্ত স্নিগ্ধ রূপ। তিনি এ দ্বীপের নাম দিলেন ’নিঝুম দ্বীপ। সে থেকে নিঝুম দ্বীপ হিসেবেই এর খ্যাতি ছড়িয়ে পড়ে। কিছু জেলে আর বাথানিয়া সেখানে অস্থায়ীভাবে আবাস গড়ে তুলেছিলেন। ৭০ এর ১২ নভেম্বর প্রলয়ঙ্কারী ঘূর্ণিতে সব নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। বিরান হয়ে যায় সে জনপদ। স্বাধীনতা পর বন বিভাগ এর দায়িত্ব নেয়। শুরু করে বনায়ন। এক সময়ের নিঝুম নীরব নিথর জনপদ মানুষের পদচারনায় এখন ধীরে মুখরিত হয়ে উঠছে। গড়ে উঠছে জনবসতি। গবাদি পশুর খামার। দ্বীপ সংলগ্ন চতুর্দিকে বিপুল মৎস্য ভান্ডার আর দুর্লভ খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ নিঝুম দ্বীপ সম্ভাবনার এর উজ্জ্বল দিগন্ত উন্মোচিত করছে।
জনবসতিঃ
১৯৭৪ সনের বাংলাদেশ পরিসংখ্যান বুরো কর্তৃক প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী তখন এর জনসংখ্যা ছিলো ৪৫জন। পুরুষ ২৩ জন ও মহিলা ২২জন। স্বার ছিলো ৭জন। এরা সবাই বিভিন্ন যায়গা থেকে এখানে এসে বসতি স্থাপন করেছিলেন। ভোলা, মনপুরা, রামগতি থেকেও অনেকে এখানে চলে আসেন। ১৯৮৮ সনে সরকারি ভাবে ৯টি গুচ্ছগ্রাম সৃষ্টিকরে ৫শ ৪৬টি পরিবারকে বসতির ব্যাবস্থা করা হয়। এই গুচ্ছগ্রাম গুলো হলো, বসুন্ধরা, বাতায়ন, আনন্দ, আগমনি, ছায়াবীথি, ধানসিঁড়ি, যুগান্তর, সূর্যদয় ও পূর্বাচল। এখানে প্রতিটি পরিবারকে দেয়া হয় দুই একর করে জমি। যাতে রয়েছে, বাড়ী ৮ ডিসিমেল ও কৃষি জমি ১ একর ৯২ ডিসিমেল করে। একটি বড় দীঘির চতুর্দিকে বাড়ী গুলো করা হয়েছে। এছাড়াও এ দ্বীপে বর্তমানে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার অধিবাসী বসবাস করছে। দিন দিন এ সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে।
আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রঃ
একটি আকর্ষণীয় লাভজনক পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে নিঝুম দ্বীপ এক স্বর্গ ভূমিতে পরিনত হতে পারে। দ্বীপের দক্ষিণ বৃত্তাকার প্রায় ১২ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে সী-বীচ। চিকচিকে মোটা বালুকারময় এ সৈকত ঢালু হয়ে চলে গেছে সমুদ্রের অভ্যন্তরে। ভাটায় জেগে উঠে দীর্ঘ বেলাভূমি। সে বেলাভূমিতে সাগরের ফেনিল ঊর্মিমালা আছড়ে পড়ার অপূর্ব দৃশ্য কাউকে আলোড়িত না করে পারে না। চন্দ্রালোকে জোয়ার ভাটায় এর মনোমুগ্ধকর দৃশ্য এক স্বর্গীয় অনুভূতি সৃষ্টি করে। জোৎস্নার আলোয় ফেনিল ঊর্মিমালার শীর্ষে শীর্ষে যেন এক একটি মনি মুক্তা জ্বল জ্বল করে জ্বলতে থাকে। দ্বীপের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে একই জায়গায় দাঁড়িয়ে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত অবলোকন করা যায়।
নিঝুম দ্বীপকে একটি পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছিল । ১৯৭৪ সনে বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশন এ দ্বীপকে একটি পূর্ণাঙ্গ পর্যটন কেদ্র করার পদক্ষেপ নিয়েছিলো। বর্তমানে এ দ্বীপকে পর্যটন দ্বীপ হিসাবে গড়ে তোলার জন্য সরকারী ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। বর্তমানে সেখানে কয়টি সরকারি বেসরকারি রেস্ট হাউজ করা হয়েছে। একটি বেসরকারি পর্যটন প্রতিষ্ঠান সেখানে পর্যটকদের জন্য হাতি ঘোড়া ইত্যাদির ব্যাবস্থা করেছে। অনেকের ধারনা এ দ্বীপের বালুকাবেলায় কোন অবকাঠামো গড়ে তুললে সমুদ্রের জোয়ারে তা ভেঙ্গে পড়তে পারে। তবে বিকল্প ব্যবস্থায় পি-ফেব্রিকেটেড কটেজ নির্মাণ করে পর্যটন মৌসুমে এর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। বন বিভাগে একটি নির্দিষ্ট এলাকাকে চিহ্নিত করে অভয়ারণ্য হিসাবে ঘোষণা করে এর ভিতর ছোট ছোট চ্যানেলে পর্যটকদের জন্য দৃশ্য অবলোকনের ব্যবস্থা করতে পারে। যেভাবে দেশী বিদেশী বিভিন্ন পর্যটক এ দ্বীপের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠছে, এ আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে এখানে গড়ে উঠতে পারে অত্যন্ত আকর্ষণীয় পর্যটন জোন। এ থেকেও আমাদের দেশ উপার্জন করতে পারে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা।
সমুদ্রের কলতান, মায়াবী হাতছানি:
সমুদ্রের ডাক শুনতে সবাই ছুটে যায় কক্সবাজার। সমুদ্র সৈকত বলতে বুঝায় কক্সবাজার টেকনাফ এবং স¤প্রতিক কুয়াকাটা। অথচ নিঝুম দ্বীপের বিস্তীর্ণ সমুদ্রতট ও তার মায়াবী হাতছানি এখনো অনেকের আড়ালে রয়ে গেছে। অদ্ভুত এক নির্জনতা নিঝুম দ্বীপকে ঘিরে রেখেছে এর সৈকতে দাঁড়ালে গভীর সমুদ্র থেকে তরঙ্গে ভেসে আসে সমুদ্রের মায়াবী আহ্বান। হৃদয়ে বেজে উঠে অপূর্ণ সুরের মূর্ছনা।তনুমন তখন তন্ময় হয়ে হারিয়ে যায় সুদূর দিগন্তে। যেন সাগরের নীলে দাঁড়িয়ে আকাশের নীলকে ছুঁয়ে দেখা। সমুদ্রের হৃদপিন্ডে বসে সমুদ্রের শব্দ শোনা। আর মনের সাধ মিটিয়ে বেড়াতে চাইলে নিঝুম দ্বীপ হচ্ছে আদর্শ স্থান। সমুদ্রের গানের সাথে নিজ হৃদয়ের সুর মিলিয়ে একাকার হয়ে যাওয়া, দূরনীলিমায় আকাশ রাঙানো দিগন্তের ফুলসজ্জায় সূর্য আর সাগরের অপূর্ব মৈথুন উপভোগ করা। পরীক্ষণেই উর্মিলা সাগরের জলদ শরীরে লাল সূর্যের হারিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে যে কারো রোমান্টিক হৃদয়টাকেও নিরুদ্দেশ করে দেবে।
নিঝুম দ্বীপ/ Nijhum Dweep
১. ঢাকা থেকে কিভাবে যাওয়া যায়? ২. লঞ্চে গেলে কিভাবে/বাসে গেলে কিভাবে? লঞ্চ ছাড়ার ডিটেইল সময়সূচি ৩. যাতায়াত ভাড়া কেমন পরবে? ৪. কোন ঋতুতে গেলে কি কি সুবিধা/অসুবিধা? ৫. খাওয়া-দাওয়ার ব্যবস্থা আর খরচ? ৬. দর্শনীয় স্থান গুলোর লিস্ট ৭. রাতে থাকার ব্যবস্থা কোথায়,কিভাবে, খরচ? ৮. ক্যাম্পিং এর সুবিধা আছে কি নাই? ৯. কি কি জিনিস সাথে নেয়া প্রয়োজন?
1) ঢাকা থেকে নিঝুমদীপে ২ ভাবে যাওয়া যায় – * সদরঘাট থেকে লঞ্চে করে এবং * বাসে নোয়াখলী হয়ে।বাসে করে গেলে প্রথমে ‘বিলাস’ বাসে যেতে হবে নোয়াখালির সোনাপুরে, সেখান থেকে লোকাল বাস বা সিএনজিতে করে (৪০০-৪৫০টাকা) নামতে হবে চরজব্বার ঘাটে। সেখান থেকে সি-ট্রাক ও ট্রলার ছারে হাতিয়ার উদ্দেশ্যে, ট্রলার যাত্রীদেরকে নামাবে হাতিয়ার নলচিরা ঘাটে, সেখান থেকে বাসে (৪০ টাকা) বা বেবিটেক্সিতে (৪০০-৫০০) করে যেতে হবে জাহাজমারা বাজারে। জাহাজমারা বাজার থেকে নিঝুমদীপ ঘাটে, সেখান থেকে ট্রলারে আধাঘন্টা লাগবে নিঝুমদীপের “উঁচার বাজারে” পৌছতে। জাহাজমারা থেকে “মেঘভাষাণ” হয়েও যাওয়া যায়, সেক্ষেত্রে ট্রলার নামাবে “নিচার বাজারে”, এক্ষেত্রে সময় লাগবে ১০ মিনিট…
২) লঞ্চে গেলে ঢাকার সদরঘাট থেকে যেতে হবে – ঢাকা থেকে হাতিয়ায় যাওয়ার জন্য মোট ২ টা লঞ্চ বরাদ্দ রয়েছে” – এর পরে একটার নাম “টিপু ৫” অন্যটা “পানামা”। এদের মধ্যে প্রতিদিন ১টা করে লঞ্চ হাতিয়ার উদ্দেশ্যে সদরঘাট থেকে বিকেল সাড়ে ৫টায় ছেড়ে যায়। সেটি হাতিয়ার তজুমদ্দিন ঘাটে পৌঁছবে পরদিন সকাল সাড়ে ৯ টায়। তজুমদ্দিন ঘাট থেকে বাসে (৩০ টাকা), বেবি টেক্সিতে (৩৫০ টাকা) বা মটর সাইকেলে (৬০০-৭০০ পার হেড) জাহাজমারা বাজার যেতে পারেন। **এম.ভি টিপু৫ এর টিকেট বুকিং নম্বর – 01711348813। এম.ভি ফারহান ৩- ০১৭৮৫৬৩০৩৬৬। এম.ভি ফারহান ৪- ০১৭৮৫৬৩০৩৬৯, ০১৭৮৫৬৩০৩৭০
৩) লঞ্চে গেলে ভাড়া পড়বে- ডেকে ৩৫০টাকা (আনুমানিক) কেবিন (৫০০/সিঙ্গেল, ১০০০/ডাবল, ১৫০০/ভিআইপি)—- হাতিয়া পর্যন্ত, এরপর জাহাজমারা ও নিঝুমদীপের জন্য আবার মানিব্যাগে হাত দিতে হবে।
৪) বর্ষাকালে গেলে পুরা হাটু সমান কাদা পাবেন + পুরা দ্বীপের এমাথা ও মাথা আপনাকে হেঁটে পার হতে হবে, রাস্তায় কিছু চলতে পারবেনা, কাদাতে দেবে যাবে। তবে মাছ খেতে পারবেন প্রচুর, ইলিশ তো হাতের এপিঠ ও পিঠ…শীত কালে গেলে রাস্তাঘাট সব ভালো পাবেন, খালের মধ্যে পানি কম পাবেন, ফলে বনের মধ্যে যেকোনো জায়গায় যেতে পারবেন, বিকেলে হরিণের পাল দেখতে পারবেন, সি-বিচ টা অনেক শুকনো পাবেন, সাগর নীল পাবেন — সমস্যা একটাই তখন খাবারের দাম অনেক বেড়ে যাবে।শরতকাল আর বসন্তকাল বেস্ট…
৫) খাওয়া দাওয়ার জন্য নিঝুমদীপের উঁচার বাজারে কয়েকটা হোটেল আছে – প্রচুর দাম রাখবে, প্রচুর বলতে ভয়াবহ একটা ইলিশ মাছের টুকরো ১২০ টাকার বেশী
(৬) দর্শনীয় যায়গা বলতে নিঝুমদীপের আশে পাশে কয়েকটা দ্বীপ আছে, একটার নাম কমলার দ্বীপ, সেখানের কমলার খালে অনেক ইলিশ মাছ পাওয়া যায় এছাড়াও আশে পাশের দ্বীপগুলো সুন্দর পুরো দ্বীপটা হেঁটে হেঁটে ঘুরে আশা যায়, মন ভরে যাবে…
** একটা নৌকা ভাড়া করে চৌধুরী খালে চলে যাবেন। সেখানে নেমে ঘন্টা খানেক হাঁটলেই বনের মধ্যে হরিন এর পালের দেখা পেতে পারেন। **চোয়াখালি বলে একটা সুন্দর বিচ আছে। ** ম্যানগ্রোভ বন…।
৭) রাতে থাকার জন্য সরকারী রেস্ট হাউজ আছে, ভাড়া পরবে পার নাইট ৮০ টাকা (বেশীও হতে পারে) ! এছাড়াও কিছু হোটেল মনে হয় খুলেছে, ২০০/৪০০ এর মধ্যে থাকা যাবে বলে মনে হয়।
** অবকাশ (নিঝুম রিসোর্ট, নামার বাজার) এ থাকা ভাল (অনেকেই সাজেস্ট করে)। ** নামার বাজার এর কাছে রফিক এর রিসোর্ট। মোবাইলঃ ০১৭২৪১৪৫৮৬৪। ঢাকা অফিসঃ ০১৭১১১৭৩৪৩৪
৮) ক্যাম্পিং এর সুবিধা ভরপুর পুরা দ্বীপে যেখানে মন চায় সেখানেই তাঁবু টাঙ্গানো যাবে, জন্তু জানোয়ারের কোনো ভয় নাই, শুধু বুনো মহিষ থেকে সাবধান। সবচাইতে ভালো যায়গা হলো উঁচার বাজারের পাশের খাল পার হয়ে সাগর পাড়ের বিশাল (৫/৬ মাইল) খোলা ঘাসের মাঠটা…
৯) তেমন কিছুই নেয়া লাগবে না, সব-ই পাওয়া যাবে, এরপরও যদি কিছু লাগে তাহলে জাহাজমারা বাজারে পাওয়া যাবে।
১০) টিপস : হরিণ খাইয়েন না, হরিণ বনের সম্পদ, আমাদের দেশের সম্পদ…
আরও কিছু প্রশ্নঃ ১) ঢাকায় বাস কোথা থেকে ছাড়ে?
ঢাকায় বাস ছাড়ে মিরপুর ১০ (বিলাস), গাবতলী ও সায়েদাবাদ থেকে। মিরপুর থেকে রাত ১০.৩০, গাবতলী থেকে রাত ১০ টা ও সায়েদাবাদ থেকে প্রায় সবসময়ই।
২) নোয়াখালির অন্য কোন বাস সার্ভিসে যাওয়া যায় কিনা?
নোয়াখালীর অনেক বাস রয়েছে – শাহী, হানিফ, শ্যামলী, বিলাস ছাড়াও আরো অনেক… সায়েদাবাদে একটু খুজলেই নতু ন নতুন বাস আবিষ্কার করা যাবে
৩) বাস এ ঢাকা থেকে নোয়াখালির সোনারপুর যেতে কত সময় লাগে আর ভাড়া কত?
বাসে গেলে ঢাকা থেকে সোনাপুর যেতে ৫/৬ ঘন্টা সময় লাগবে, সকালে (ভোরে ভোরে যাওয়াই ভালো)। ভাড়া নিবে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে।
৪) সোনারপুর থেকে চর জব্বার যাওয়ার লোকাল সার্ভিস কোথায় পাওয়া যাবে, যেতে কত সময় লাগবে আর ভাড়া কত?
সোনাপুর বাসস্ট্যান্ডেই চরজব্বার এর গাড়ি পাওয়া যাবে। সোনাপুর থেকে চরজব্বারে যেতে মিনিমাম আড়াই ঘন্টা লাগবে।
৫) সোনারপুর থেকে সিএনজি তে চর জব্বার যেতে কত সময় লাগে?
সিএনজিতে গেলে প্রায় ২ ঘন্টা লাগার কথা, রাস্তা খুবই ভালো। (২০০৯-এ ছিলো)
৬) চর জব্বার এ সী ট্রাক বা ট্রলার এর টাইম সিডিউল আছে কিনা? রিজার্ভ করা যায় কিনা? লোকাল ভাড়া কত? রিজার্ভ করলে কত? কত সময় লাগে?
সি-ট্রাক জোয়ার ভাটার উপরে নিরভর করে ছাড়ে, বেস্ট টাইম হলো দুপুর ১২.৩০ থেকে ২.৩০ পর্যন্ত। সোনাপুরে নেমে একটু কস্ট করে জেনে নিতে হবে যে আজকে সি-ট্রাক কখন ছাড়বে। এছাড়া ট্রলার প্রতি ২ ঘন্টা পর পর ছাড়ে, বিকাল ৫ টার পর আর কোনো ট্রলার যায় না। সি-ট্রাক এবং ট্রলারে করে গেলে নামতে হবে হাতিয়ার একেবারে উত্তর মাথায় – নলচিরা ঘাটে। ট্রলার রিজার্ভ করা যাবে, ভাড়া শিউর জানি না তবে পার পারসন প্রায় ৬০ – ৮০ টাকার মত নিবে…ট্রলারে করে গেলে ৩ ঘন্টার মতন লাগে আর সি-ট্রাকে গেলে আড়াই ঘন্টা।
আরো কিছু তথ্য:
হাতিয়া তমরদ্দী ঘাটে লঞ্চ থেকে নেমে সরাসরি ট্রলার ভাড়া করে নিঝুম দ্বীপ এর উচার বাজারে চলে যাওয়া যায়, ভাড়া ১২০০-২০০০, এছাড়া লঞ্চে মাছ তুলে দেয়ার জন্য মাছ নিয়ে ট্রলার আসে এ সময়ে নিঝুম দ্বীপ থেকে , সেই ট্রলার ঠিক করে নিঝুম দ্বীপ যাওয়া যায় এতে ঝামেলা ও কম হয়।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.