দেশের চিকিৎসাব্যবস্থার অভিযোগের অন্ত নেই। বিশেষায়িত চিকিৎসার জন্য রাজধানী ঢাকা ছাড়া গত্যন্তর নেই। আবার বেসরকারি হাসপাতাল বা প্রাইভেট কিনিকে চিকিৎসা নেওয়ার সামর্থ্য সবার নেই। বাধ্য হয়েই অনেককে সরকারি হাসপাতালের শরণাপন্ন হতে হয়। বিশেষ করে স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে এর কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু এখানেও সাধারণরা অসহায়। গতকাল আমাদের সময়ের প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়Ñ দেশের সবচেয়ে বড় সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কর্মচারীরাই চিকিৎসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছেন। গত শুক্রবার বিপ্লব ম-ল নামে এক রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। স্টেথোসকোপ গলায় ঝুলিয়ে বাইরে থেকে আসা এক সুইপার তার চিকিৎসা করছিলেন। এ ঘটনা সেখানে নতুন নয়। হাসপাতালের ওয়ার্ডবয়-সুইপাররাও অহরহই এখানে চিকিৎসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। যথাযথ ব্যবস্থাপনার জন্য হাসপাতালজুড়ে সিসিক্যামেরা লাগানো হয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো ফল আসেনি। বাইরের যারা এখানে বয়, সুইপার ও আয়ার কাজ করেন তাদের বলা হয়ে থাকে ‘স্পেশাল কর্মচারী’। হাসপাতালের কর্মচারীদের সঙ্গে মৌখিক চুক্তির ভিত্তিতে এরা এখানে কাজ করে থাকেন। ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এমন স্পেশাল কর্মচারীর সংখ্যা অন্তত ৩০০।
দেশে অন্যান্য পেশায় যেভাবে জবাবদিহি থাকে, এখানেও একই রকম জবাবদিহি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। ভুল চিকিৎসা, অবহেলা ও অন্যান্য কারণে কোনো রোগীর মৃত্যু হলে প্রচলিত আইনে যে শাস্তির বিধান রয়েছে, চিকিৎসককেও তা পেতে হবে। যাদের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে এসব হাসপাতাল গড়ে তোলা হয়েছে, তারাই সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আবার অনেক হাসপাতালে চিকিৎসা সরঞ্জাম নষ্ট করে রাখারও অভিযোগ আছে। সরকারি চিকিৎসাসেবা সাধারণ মানুষের জন্য নিশ্চিত করতে হবে। তার জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা অবশ্যই নিতে হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.