বেশকিছু দিন আগেও অনেকটা নীরব ভূমিকা পালন করেছেন জনপ্রিয় মডেল অভিনেত্রী এ্যানি খান। কোনো বিজ্ঞাপন, নাটক কিংবা টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় তেমন কাজ করেননি তিনি। তবে সে অবস্থা এখন নেই তার। আবারো সরব হয়েছেন এ্যানি। নিয়মিত অভিনয় করছেন নাটকে। নতুন নতুন সব বিজ্ঞাপনে কাজ করছেন। সঙ্গে থাকছেন টিভি অনুষ্ঠান উপস্থাপনায়ও। এখানেই শেষ নয়, খুব শিগগিরই আরও কিছু নতুন কাজ নিয়ে স্বরূপে হাজির হবেন এই মডেল-অভিনেত্রী। বর্তমান ব্যস্ততা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে এ্যানি বলেন, এ মুহূর্তে পাঁচটি ধারাবাহিক নাটকে অভিনয়, দুটি অনুষ্ঠানের উপস্থাপনা ও বেশ কয়েকটি বিজ্ঞাপনের কাজ করছি। অনেকদিন কাজের মধ্যে তেমন ছিলাম না বললেই চলে। অবশ্য আমি আশাহত হইনি। অপেক্ষায় ছিলাম। যেহেতু এই মিডিয়ার সঙ্গে আত্মার একটি সম্পর্ক হয়ে গেছে তাই অবশ্যই কাজে ফিরবো। নিজেকে স্বরূপে দর্শকের সামনে হাজির করবো। এমন বিশ্বাস সবসময়ই ছিল। আর সেটা বিফলে যায়নি। এখন মনের মতো কিছু ভালো কাজ হাতে পেয়েছি। আবারও লাইট ক্যামেরা অ্যাকশনের মাঝে ফিরেছি। সত্যিই বেশ ভালো লাগছে। এ মুহূর্তে প্রচার চলতি চ্যানেল নাইনের ‘আগুন আল্পনা’, এসএ টিভির ‘পরম্পরা’ ধারাবাহিক দুটিতে অভিনয় করছেন এ্যানি। এছাড়া ওয়ালিদ হাসানের ‘জলে ভেজা রঙ’, ‘অন্ধকারে অন্তরালে’ এবং কায়সার আহমেদের ‘ফুলকি’ নামের নতুন ধারাবাহিকগুলোর কাজ শুরু করেছেন তিনি। পাশাপাশি স্বপন কিবরিয়ার নির্দেশনায় একটি ডিটারজেন্ট পাউডারের বিজ্ঞাপনের শুটিংও শেষ করেছেন এ্যানি। আরও কিছু নতুন বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং হাতে রয়েছে বলে জানান তিনি। অন্যদিকে এশিয়ান টিভির সেলিব্রিটি শো ‘টি টাইম ব্রেক’ ও এসএ টিভির রূপচর্চা বিষয়ক অনুষ্ঠান ‘শাইন অন’-এর সঞ্চালনার দায়িত্ব পালন করছেন এ্যানি। ক্যামেরার সঙ্গে তার সখ্য সেই ছোটবেলা থেকে। ক্লাস থ্রিতেই ফু ওয়াং ফুডসের একটি বিজ্ঞাপনে মডেল হন এ্যানি। এরপর একাধিক ছোটদের বিজ্ঞাপনে মডেল হয়ে আলোচনায় উঠে আসেন। তখন অবশ্য আলোচনার ব্যাপারটি হয়তো তেমন বুঝতে পারতেন না তিনি। সময়ের পরিক্রমায় মিডিয়ার বিভিন্ন কাজের সঙ্গেই বেড়ে উঠেছেন এ্যানি। বড় হয়ে প্রথম বিজ্ঞাপন করেন বিশিষ্ট অভিনেতা ও নির্মাতা তারিক আনামের সঙ্গে। তখন এসএসসিতে পড়ছিলেন। হুইল সাবানের একটি বিজ্ঞাপনের মডেল হয়ে নিজেকে ভালোভাবেই মেলে ধরেন। এর পরপরই পুষ্টি আটা, বাংলালিংক, প্রাণ ক্যান্ডি, প্রাণ চিপস, সুপার এনার্জি বাল্ব, তালুকদার প্লাস্টিক, সুরেশ সরিষার তেল, পিএইচপি এরাবিয়ান হর্সসহ একাধিক বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হয়েছেন এ পর্দাকন্যা। ক্লাস সেভেনে পড়াকালীন ‘অব্যক্ত আপন’ নামের একটি টিভি নাটকে শিশুশিল্পী হিসেবে অভিষেক হয় এ্যানির। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ছোটবেলা থেকেই নাচ, অভিনয় আমাকে চুম্বকের মতো টানত। তাছাড়া সে সময় থেকে কাজ করতে করতে এখন মিডিয়া আমার নেশা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাশাপাশি আমার মা খুবই সাহায্য করতেন। আমার ইচ্ছা-অনিচ্ছার গুরুত্ব দিতেন। অভিনয়ের গল্প তার এখানেই শেষ নয়। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যস্ততা বেড়ে যায় নাটকে অভিনয়ে। ‘সাদা শাড়ি লাল পাড়’ নামে একটি নাটকের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ হয় তার। এরপর ‘রমিজের আয়না’, ‘চরাচর’সহ বেশ কয়েকটি নাটকে অভিনয় করে নিজের ক্যারিয়ার আরও একটি ধাপ উন্নীত করান। টিভি নাটক ও বিজ্ঞাপনের পাশাপাশি একটি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেন তিনি। ‘ভালোবাসার রংধনু’ নামের ছবিটির কাজ শেষ হওয়ার কয়েক বছর পরও মুক্তির দেখা নেই। তাই চলচ্চিত্র নিয়ে খুব একটা উচ্ছ্বাস নেই এ্যানির মাঝে। তিনি বলেন, সেই কবে ছবিটির কাজ করেছি। মুক্তির আশা ছেড়েই দিয়েছি। আর আমার এখন আর কোনো ইচ্ছা নেই। তাছাড়া নায়িকা হতে এখন আর শিল্পীর প্রয়োজন হয় না। অভিনয় না জানলেও নায়িকা হওয়া যায়। আমি নিজেকে অনৈতিক পথে পরিচালনা করতে পারবো না। তাই চলচ্চিত্র নিয়ে এত উচ্ছ্বাসও নেই। মিডিয়ায় এখন নিয়মিত কাজ করলেও অনেকটা অস্বস্তিতেই রয়েছেন এ্যানি। আর সেটা তার বিয়ে নিয়ে। বিয়ের জন্য পাত্র খুঁজছেন। কিন্তু উপযুক্ত কাউকে পাচ্ছেন না। আবার সব মিলে গেলে দেখা যায় মিডিয়ার মেয়ে বলে অনেকে পিছিয়ে যান। বিয়ে প্রসঙ্গে এ্যানি বলেন, বিয়ে বিয়ে করে বেশ ঝামেলা যাচ্ছে বাসায়। এই বিয়ে নিয়ে খুব মুশকিলে পড়েছি। উপযুক্ত পাত্র পাচ্ছি না। আবার সব ঠিকঠাক থাকলে দেখা যায় মিডিয়ার মেয়ে বলে পিছিয়ে যায়। মিডিয়ার মেয়েরা কি মানুষ না! বিয়ের ব্যাপারটি নিয়ে চিন্তায় আসলে আর কিছুই ভালো লাগে না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.