গাইছেন শিল্পী লাকী আখান্দ্। তাঁকে ঘিরে রেখেছেন ফাহমিদা নবী, সামিনা চৌধুরী ও শম্পা রেজা l
‘আগে যদি জানতাম/ তবে মন ফিরে চাইতাম’—হুইলচেয়ারে বসে গাইলেন লাকী আখান্দ্। টপ টপ করে জল ঝরতে দেখা গেল সামিনা চৌধুরীর চোখ থেকে। চোখের জল মুছতে মুছতে করতালি দিতে লাগলেন সবাই। পাঁচ তারকা হোটেলের মিলনায়তনভর্তি দর্শক, সেখানে তখন অন্য রকম পরিবেশ। তারকার মিলনমেলা বললেও ভুল হবে না। শিল্প-সংস্কৃতি অঙ্গন ছাড়াও ছিলেন ব্যবসায়ী সমাজের প্রতিনিধিরা। সমাজের স্বনামধন্য সব ব্যক্তির উপস্থিতিতে ঘোষণা করা হয়েছিল কিংবদন্তি শিল্পী লাকী আখান্দের নাম। হুইলচেয়ারে করে তাঁকে তোলা হয়েছিল মঞ্চে। জীবনের পুরোটা সময় যাঁর কেটেছে সংগীতের সঙ্গে, মঞ্চে উঠে তিনি গাইবেন না, তা হয় না! গতকাল শনিবার দুপুরে রাজধানীর গুলশানের একটি পাঁচ তারকা হোটেলে যাত্রা শুরু করে ‘শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশন’। সেই আয়োজনে গেয়েই সবাইকে কাঁদিয়েছেন শিল্পী লাকী আখান্দ্। ‘স্বাধীনতা তোমাকে নিয়ে’ গানটিও গেয়ে শোনান তিনি। তাঁর সঙ্গে কণ্ঠ মেলান মিলনায়তনে উপস্থিত আরও কজন শিল্পী। গানটির স্মৃতিচারণা করতে গিয়ে লাকী বলেন, ‘একদিন আমি শহীদ মিনারের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। ভাবলাম, আমি তো প্রেমের গানসহ অনেক ধরনের গান গেয়েছি, সুর করেছি—স্বাধীনতা নিয়েও আমার কাজ করা উচিত। স্বাধীনতা নিয়ে বেশ কিছু কাজ করলাম।’ শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশনের উদ্যোক্তা ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র আনিসুল হক। স্বাগত বক্তব্যে তিনি বলেছেন, ‘বাংলাদেশের শিল্পীরা চিরকাল আমাদের ভালোবাসা, আমাদের গৌরব। বিশ্বের বুকে তাঁরাই আমাদের প্রতিনিধি। শিল্পীরা ভালো না থাকলে সমাজের পক্ষে ভালো থাকা সম্ভব না। এখন থেকে আর কোনো শিল্পীর সাধনা যেন বাধাগ্রস্ত না হয়, সেদিকে নজর রাখবে এই ফাউন্ডেশন।’ ফাউন্ডেশনের পক্ষে বক্তব্য দেন ট্রাস্টি সদস্য অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ। তিনি বলেন, ‘শিল্পীরা ভিখারি নন, তাঁরা যেন মর্যাদা নিয়ে বাঁচতে পারেন, সেটা নিয়ে আনিসুল হকের সঙ্গে কথা বলি। শিল্পীদের মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকলে তাঁদের কারও কাছে হাত পাততে হবে না। এ ধরনের উদ্যোগে সবারই এগিয়ে আসা উচিত।’ শিল্পীর পাশে ফাউন্ডেশনে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে দেশের বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। যাত্রা শুরুর দিনে অসুস্থ তিন শিল্পী লাকী আখান্দ্, আলাউদ্দীন আলী ও শাম্মী আখতারকে চিকিৎসা–সহায়তা দেয় প্রতিষ্ঠানটি। তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয় যথাক্রমে ৪০, ২০ ও ১০ লাখ টাকার চেক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুস্তাফা মনোয়ার, ফেরদৌসী রহমান, সালাউদ্দিন জাকী, নাসির উদ্দীন ইউসুফ, খুরশীদ আলম, রফিকুল আলম, আবুল খায়ের, ইমদাদুল হক মিলন, সাদিয়া আফরিন মল্লিক, শম্পা রেজা, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায়, ফেরদৌস ওয়াহিদ, আনিসুল হক (কথাসাহিত্যিক), আইয়ুব বাচ্চু, হামিন আহমেদ, মাকসুদ, শিবলী মহম্মদ, শামীম আরা নীপা, ইলিয়াস কাঞ্চন, আবিদা সুলতানা, কনকচাঁপা, ফেরদৌস আরা, ফাহমিদা নবী, সুজিত মোস্তফা, মুনমুন আহমেদ, ফেরদৌস, এস আই টুটুল, অদিতি মহসিন, ইমন সাহা, কোনাল, কানিজ আলমাস খান প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আলাউদ্দীন আলীও গান গেয়ে শোনান।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.