শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ জানিয়েছেন, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত এবার গতবারের চেয়ে ২ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ২৭৩টি বই বেশি ছাপা হচ্ছে। এবার মোট ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫ কপি বই ছাপানো হচ্ছে।
রোববার রাজধানীর মাতুয়াইল এলাকায় বিনামূল্যের পাঠ্যপুস্তক ছাপার কাজ সরেজমিনে পরিদর্শন করতে গিয়ে সাংবাদিকদেরকে এসব তথ্য জানান তিনি।
মন্ত্রী বেলা ১১টায় মতিঝিলের এনসিটিবি থেকে রওয়ানা হয়ে প্রথমে মাতুয়াইলের মৌসুমী অফসেট প্রেস পরিদর্শন করেন। পরে তিনি ব্রাইট প্রিন্টিং প্রেস ও আনন্দ প্রিন্টার্স প্রেস পরিদর্শন করেন। নুরুল ইসলাম নাহিদ এসময় প্রেসের কর্মকর্তা-কর্মচারিসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেন এবং কাজের অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন।
এ সময় মন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষাসচিব মো. সোহরাব হোসাইন, অতিরিক্ত সচিব মুফাদ চৌধুরী ও রুহী রহমান, এনসিটিবির চেয়ারম্যান নারায়ণ চন্দ্র সাহা, এনসিটিবি’র সদস্য ড. রতন সিদ্দিকী, এনসিটিবি’র সচিব (পাঠ্যপুস্তক) ড. মিয়া ইনামুল হক সিদ্দিকী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, প্রথমবারের মতো প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক স্তরের দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে ব্রেইল বই ছাপছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। এ ছাড়া পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ের শিশুদের নিজেদের মাতৃভাষায় প্রথমবারের মতো বই দেওয়া হচ্ছে।
আগামী ১৫ দিনের মধ্যেই স্কুল পর্যায়ে সব নতুন বই পৌঁছে যাবে বলে জানিয়ে নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ইতোমধ্যে ৭০-৮০ ভাগ বই স্কুল পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। আশা করছি, আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সব বই পৌঁছে যাবে। বিগত কয়েক বছরের মতো এবারও নির্ধারিত ১ জানুয়ারি দেশব্যাপী বই বা পাঠ্যপুস্তক উৎসব পালিত হবে।
তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কারণে প্রতিবছরই শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঝড়ে পড়া কমছে। যার ফলে প্রতিবছরই বইয়ের সংখ্যা বাড়ছে। গতবছর বই বিতরণ করা হয়েছিল ৩৩ কোটি ৩৭ লাখ ৪৭ হাজার ৯৭২টি। আর এবার বিতরণ করা হবে ৩৬ কোটি ২১ লাখ ৮২ হাজার ২৪৫টি বই।
শিক্ষামন্ত্রী এসময় আরও বলেন, বইয়ের কাগজের মান সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মাধ্যমে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে। বইয়ে ব্যবহৃত কাগজগুলো পরীক্ষা করে প্রেসে এনে রাখা হয়েছে। এর বাইরে কোনো কাগজ ব্যবহার করতে যেন না পারে, সেজন্য খেয়াল রাখা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিশ্বব্যাংক ও এডিবির সঙ্গে চুক্তি থাকায় প্রাথমিক স্তরের বইয়ের ৩টি কাজ বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হয়েছে। বাকি সব বই দেশীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমেই ছাপা হচ্ছে।
এনসিটিবির কর্মকর্তারা বাসস’কে জানিয়েছেন, এবার ব্রেইল বই দেওয়া হচ্ছে ৯ হাজার ৭০৩ জন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীকে। আর পাঁচটি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর প্রায় ২৪ হাজার শিক্ষার্থীকে বই দেওয়া হবে।
এ সম্পর্কে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, এবার হয়তো তথ্যের অভাবে সব দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীকে বই দেওয়ার নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না। তবে এ বিষয়ে আমাদের জরিপ কাজ চলছে। সে অনুযায়ী পরে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.