স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম থেকে: চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মো. মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গত রোববার রাত দেড়টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আব্দুর রব হলের সামনে থেকে তাকে আটক করে হাটহাজারী থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। মামুন চসিক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের অনুসারী। রহস্যজনকভাবে মৃত্যু হওয়া কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহ সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর সঙ্গেও সখ্য ছিল তার। দিয়াজের মৃত্যুকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড দাবি করে তার অনুসারীদের করা চলমান আন্দোলনে নেতৃত্ব দিচ্ছিল সে। দিয়াজের সঙ্গে টেন্ডারের চেক নিয়ে মামুনের বিরোধ তৈরি হয়েছিল বলে কিছুদিন আগে সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ করেছিলেন চবি ছাত্রলীগের সভাপতি আলমগীর টিপু। তবে পুলিশ বলছে, অন্য দুটি মামলায় আসামি হওয়ায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে তারা। মামুনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি স্বীকার করে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি তায়েফুল হক তপুকে কুপিয়ে জখম ও সাংগঠনিক সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন অভিকে মারধর করার পর দায়ের করা মামলার অন্যতম প্রধান আসামি মামুন। তাই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই দুই মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে কোর্টে চালান দেয়া হয়। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের আরেক সহ-সভাপতি মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, দিয়াজ ভাইয়ের হত্যার বিচার চেয়ে মাঠে সরব থাকায় মামুনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এর মাধ্যমে তাকে হয়রানি করা হচ্ছে। আমরা দ্রুত তার মুক্তি দাবি করছি। পারিবারিক সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সম্পাদক দিয়াজ ইরফান চৌধুরীর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনায় ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন তার মা জাহেদা আমিন চৌধুরী। আবেগ তাড়িত কণ্ঠে তিনি লিখেছেন, আমাকেও একটি মাত্র গিঁট দিয়ে ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে দেখিয়ে দিন, মোটা চাদর দিয়ে এভাবে গলা কাটে কিনা, সারা দেশের মানুষ দেখুক। ছাত্রলীগ নেতা দিয়াজের মৃত্যুর ২৭ দিন পর সম্প্রতি তার মায়ের নিজ হাতে লেখা একটি চিঠি ছবি আকারে ফেসবুকে দেয়া হয়। সেখানে তিনি নিজের পুত্র আত্মহত্যা করতে পারেন বলে বিশ্বাস করতে না পারার কথা তুলে ধরেন। গত ২০শে নভেম্বর রাতে চবি’র দুই নং গেইট এলাকার নিজ বাসা থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় দিয়াজের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে যায় পুলিশ। এরপর গত ২৩শে নভেম্বর দিয়াজের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে ‘আত্মহত্যা’ উল্লেখ করা হলে পরিবারের পক্ষ থেকে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়। তারা দাবি করেন দিয়াজকে ৯৫ কোটি টাকার টেন্ডারের ভাগ-বাটোয়ারার জের ধরে প্রতিপক্ষের লোকজন হত্যা করেছে। দিয়াজের পরিবারের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট তার আত্মীয়স্বজনরা জানান, প্রতিদিনই পুত্রের শোকে বাসায় বিলাপ করে কান্নাকাটি করেন তার মা ও ভাইবোনেরা। এতে পুরো পরিবারে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.