তথাগত বুদ্ধ কোশাম্বীতে ভিক্ষু-সংঘসহ অবস্থান করার সময় বিনয়ধর পন্থী ভিক্ষু ও সূত্রধর পন্থী ভিক্ষুর মধ্যে বিনয় সম্পর্কিত একটি বিষয় নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। এ বিষয় নিয়ে উভয় পন্থী ভিক্ষুদের মধ্যে মতদ্বৈততা চরম আকার ধারণ করলে তথাগত বুদ্ধ তাঁদের বিবাদ মীমাংসা করার প্রচেষ্টা করেন। কিন্তু উভয় পক্ষ তাঁদের স্ব স্ব মতের পক্ষে অবস্থান গ্রহণ করেন; ফলে বিবাদ মীমাসা করা সম্ভব না হওয়ায় বুদ্ধ কোশাম্বী ত্যাগ করে পারিলেয়্য নামক বনে গমন করেন এবং দশম বর্ষাবাস সেখানে পালন করেন। পারিলেয়্য বনে বর্ষা যাপন কালে একটি একাচারী হাতি প্রতিদিন বুদ্ধের সেবা করত; বনের ফল সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করত। এ সময় বনের একটি বনর হস্তীরাজ কর্তৃক বুদ্ধকে সেবা করতে দেখে তারও বুদ্ধকে পূজা করার ইচ্ছা জাগে। ভাদ্র পূর্ণিমাতে সে একটি মৌচাক সংগ্রহ করে বুদ্ধকে দান করেন। মৌচাকে মৌমাছির ছানা ও ডিম থাকায় বুদ্ধ প্রথমে মধু পান করলেন না।বানর তা বুঝতে পেরে মৌচাকটি নিয়ে ছানা ও ডিম পরিস্কার করে পুনরায় বুদ্ধকে দান করলে এবার বুদ্ধ মধু পান করেন। পারিলেয়া বনে হস্তিরাজ কর্তৃক ভগবান বুদ্ধের সেবাপ্রাপ্তি ও বানরের মধুদানের কারণে এ দিনটি বৌদ্ধদের কাছে স্মরণীয় ও আনন্দ-উৎসবমুখর পুণ্যময় একটি দিন।
এ দিনটি উপলক্ষে বৌদ্ধ সম্প্রদায় বুদ্ধ পূজা, সীবলী পূজা, শীল গ্রহণ, সংঘদান, মধু ও ভেষজ দান, বাতি প্রজ্বলন, ভিক্ষু সংঘকে পিণ্ডদানসহ নানা ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে থাকে। মধু পূর্ণিমাকে কেন্দ্র করে বৌদ্ধদের দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করে থাকে।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.