২০২১ সাল পর্যন্ত প্যাকেজ মূল্য সংযোজন করের (ভ্যাট) প্রস্তাব করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। একই সঙ্গে ২০২১ সালের পর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ ভ্যাটকে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র ব্যবসায় তিন শতাংশ, মাঝারি ব্যবসায় পাঁচ শতাংশ ও বৃহৎ ব্যবসার ক্ষেত্রে সাত শতাংশ করার প্রস্তাব দিয়েছে ডিসিসিআই।
আজ সোমবার সচিবালয়ে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ প্রস্তাব দেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি হোসেন খালেদ।
হোসেন খালেদ বলেন, ‘দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিষয় বিবেচনা করে ২০২১ সাল পর্যন্ত প্যাকেজ ভ্যাট বহাল রাখা প্রয়োজন। ২০২১ সালের পর প্রস্তাবিত ১৫ শতাংশ ভ্যাটকে অতিক্ষুদ্র ও ক্ষুদ্র ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ৩ শতাংশ, মাঝারি ব্যবসায় ৫ শতাংশ ও বৃহৎ ব্যবসার জন্য ৭ শতাংশ করার প্রস্তাব করছি।’
হোসেন খালেদ, ঢাকা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনে বিদ্যমান ভ্যাট ১৪ হাজার টাকার স্থলে ১৫ হাজার টাকা করা, ব্যাক্তিগত করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে তিন লাখ করা, করপোরেট করের হার ৪৫ শতাংশ থেকে ৩৫ শতাংশ করা ও মার্চেন্ট ব্যাংকের করপোরেট করের হার সাড়ে ৩৭ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করেন।
রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রা পূরণে দেশব্যাপী করের আওতা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়। এ ছাড়া আবাসান খাতে বিদ্যমান মন্দা কাটাতে রেজিস্ট্রেশন ফি ও স্ট্যাম্প ডিউটি প্রত্যাহার করে ট্রান্সফার ফি প্রবর্তনসহ ভ্যাট ১ থেকে ২.৫ শতাংশ পুনর্নির্ধারণ করার প্রস্তাব করেন ডিসিসিআইয়ের সভাপতি।
ডিসিসিআইয়ের সভাপতি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি হতে প্রাপ্ত লভ্যাংশ আয় ২৫ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত করমুক্ত করা। ব্যাংক বহির্ভূত চ্যানেলের মাধ্যমে লেনদেন ৫০ হাজার টাকার পরিবর্তে এক লাখ টাকা করার প্রস্তাব করেন।
হোসেন খালেদ আরো বলেন, ‘বার্ষিক টার্নওভার এক কোটি টাকার কম হলে ২ শতাংশ হারে টার্নওভার কর প্রদানের সুপারিশ করছি। তা ছাড়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের উন্নয়নে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির ক্ষেত্রে বিদ্যমান রেওয়াতি শুল্কহার আগামী অর্থবছরেও বজায় রাখার প্রস্তাব করা হয়।’
হোসেন খালেদ আরো বলেন, ‘পাট পণ্য রপ্তানি খাতে ডিউটি ড্র ব্যাক পদ্ধতি সহজীকরন, আমদানি বিকল্প শিল্প গড়ে তোলা, স্থানীয় শিল্পের সংরক্ষণ এবং সম্প্রসারণের লক্ষ্যে চূড়ান্ত পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শুল্ক হার আরোপ ও সম্পূরক শুল্ক আরোপেরও প্রস্তাব করেন। বসতবাড়িতে ব্যবহারের জন্য বর্তমানে বিদ্যমান গ্যাসের পাইপ লাইনের মাধ্যমে এলপিজি গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থা চালু করার প্রস্তাব করেছি।’
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বলেন, ‘স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ দারিদ্র্য বিমোচনে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি সাধন করেছে।’ তিনি বেসরকারি খাতকে অধিক হারে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে সরকারের সাথে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানান।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ‘বাংলাদেশের মতো ঘনবসতিপূর্ণ দেশে কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলন বেশ কষ্টসাধ্য। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনে অধিক হারে গ্যাস ব্যবহার করতে হচ্ছে। সরকার ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলোতে চাহিদা মাফিক গ্যাস সরবরাহ করার জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’
ডিসিসিআই ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি হুমায়ুন রশিদ, সহসভাপতি খ. আতিক-ই-রাব্বানী, পরিচালক এ কে ডি খায়ের মোহাম্মদ খান, কামরুল ইসলাম, মামুন আকবর, মোক্তার হোসেন চৌধুরী, ওসমান গনি, রিয়াদ হোসেন, সেলিম আকতার খান এবং ডিসিসিআই মহাসচিব এ এইচ এম রেজাউল কবির এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.