ভালোবেসে ভুল করেছি। আগে জানা ছিল না পরিণতি এমন হবে। যার জন্যে ঘর ছেড়েছি সে-ই আমার সঙ্গে প্রতারণা করবে কখনো ভাবতে পারিনি। প্রেম করে বিয়ে করেছি অথচ স্ত্রীর অধিকার পাচ্ছি না। এখন পথে পথে ঘুরতে হচ্ছে আমাকে। কলকাতা ছেড়ে দেশে এসে স্বামীর দেখা পেয়েছি। কিন্তু সে আমাকে কোনোভাবেই মেনে নিচ্ছে না। আমার মতো এমন দশা যেন আর কারো না হয়।’
শিপ্রা মজুমদার নামে এক গৃহবধূ এভাবে হতাশা ব্যক্ত করেন। শিপ্রা জানান, চিলতামারী উপজেলার হাড়িয়ারঘোপ গ্রামের মৃত অরুণ মজুমদারের কন্যা তিনি। প্রায় আড়াই বছর আগে একই উপজেলার পঙ্গাশিয়া গ্রামের বিমল মণ্ডলের পুত্র বিপ্লব মণ্ডলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তাদের প্রেমের বিষয়টি দুই পরিবারে জানাজানি হলে কেউই মেনে না নেয়ায় শিপ্রা ও বিপ্লব দুজন ভারতে পালিয়ে যায়। সেখানে গিয়ে শিপ্রা তার মামার বাড়িতে আশ্রয় নেয়। বিপ্লবও কাছাকাছি স্থানে অবস্থান করে।
এ অবস্থায় দু’জনে নিয়মিত যোগাযোগ রাখে। বিয়ের করে ঘর বাঁধার স্বপ্নও দেখে তারা। তাদের সম্পর্কের বিষয়টি শিপ্রার মামার বাড়ির লোকজন জানতে পেরে বিপ্লবকে বিয়ে করতে বললে সে শিপ্রাকে বিয়ে করতে রাজি হয়। তাদের দুজনার সম্মতিক্রমে শিপ্রার মামার বাড়ির লোকজনের হস্তক্ষেপে এ বিয়ে সম্পন্ন হয়।
তারা বিয়ের পর কলকাতা শহরে একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস শুরু করে। বিয়ের কিছুদিন পর বিপ্লব একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরি নেয়। এ সময় মোটামুটি ভালোই চলছিল তাদের সংসার। এক সময় বিপ্লব চাকরিতে বদলি হয়ে কলকাতার বাইরে গুজরাটে চলে যায়। এরপর সে শিপ্রার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। এ পরিস্থিতিতে শিপ্রা বিপাকে পড়ে। নিজের ভরণ-পোষণ জোগাতে বিউটি পার্লারে কাজ শুরু করে। এরপরও আশায় থাকে বিপ্লব তার কাছে ফিরে আসবে।
কিন্তু, বিপ্লব আর ফিরে না আসায় হতাশ হয়ে পড়ে সে। এমনকি বিপ্লব ফোনেও শিপ্রার সাথে যোগাযোগ বন্ধ রাখে। এ পরিস্থিতিতে শিপ্রা জানতে পারে কয়েকদিন আগে বিপ্লব ভারত থেকে বাংলাদেশে তার গ্রামের বাড়িতে চলে এসেছে। এ খবর পেয়ে শিপ্রা কলকাতা থেকে রওনা দিয়ে গত শুক্রবার বিপ্লবের খোঁজে তার বাড়িতে এসে হাজির হয়। এ সময় বিপ্লব তাকে দেখে ক্ষেপে যায়। বিপ্লবের স্ত্রী হিসাবে পরিচয় দিলে ওই বাড়ির কেউ তাকে মেনে নিচ্ছে না বলেও অভিযোগ করে শিপ্রা।
গত দু’দিন সে অনাহারে আছে বলেও জানায়। স্ত্রী হিসাবে তাকে যতক্ষণ মেনে না নেয়া হবে সে অনশন চালিয়ে যাবার হুমকি দেয়। শিপ্রা তার স্ত্রীর অধিকার ফিরে পেতে প্রশাসন ও এলাকাবাসীর সহযোগিতা কামনা করেছে। এ ব্যাপারে বিপ্লব মণ্ডলের সঙ্গে কথা হলে সে জানায়, শিপ্রার সঙ্গে আগে তার কোনো সম্পর্ক ছিল না। শিপ্রাকে সে নিজের ইচ্ছায় বিয়ে করেনি। তাকে জোর করে বিয়ে করানো হয়েছে। এ বিয়ে সে মানে না। সে পরিস্থিতির শিকার।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.