১ থেকে ১৪ই সেপ্টেম্বর আজারবাইজানের বাকু শহরে অনুষ্ঠিত হবে দাবা অলিম্পিয়াড। ওপেন বিভাগে চার গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ, জিয়াউর রহমান, আবদুল্লাহ আল রাকিব ও এনামুল হোসেন রাজীব এবং আন্তর্জাতিক মাস্টার মিনহাজুদ্দিন আহমেদ সাগরকে নিয়ে গঠিত দল দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে এই আসরে। অলিম্পিয়াডের ৪২তম আসরের জন্য মহিলা দল গড়া হয়েছে দুই আন্তর্জাতিক মাস্টার রানী হামিদ ও শামীমা আক্তার লিজা এবং তিন ফিদে মাস্টার শারমীন সুলতানা শিরিন, নাজরানা খান ইভা এবং জাকিয়া সুলতানাকে নিয়ে। এদের নিয়ে আগামী শুক্রবার আজারবাইজান যাচ্ছে বাংলাদেশ। পৃষ্ঠপোষক শূন্যতায় কেবল এবারই নয়, বিশ্ব দাবার সর্ববৃহৎ আসরে বরাবরই টেনেটুনে দল পাঠাতে হয় বাংলাদেশকে। ফলে দলটির প্রস্তুতির দিকেও দৃষ্টি দেয়া সম্ভব হয় না। প্রস্তুতি ছাড়া খেলতে যাওয়া দলের সদস্যরা নর্মও করতে পারছেন না। নেই ব্যক্তিগত সাফল্যও এবার অপ্রস্তুত দল পাঠানোর কারণ অবশ্য ভিন্ন হিসেবেই উল্লেখ করলেন দাবা ফেডারেশন সহ-সভাপতি গাজী সাইফুল তারেক। ‘নির্বাচনে নতুন কমিটি দায়িত্ব গ্রহণের পর হাতে খুব বেশি সময় ছিল না। এ কারণে ইচ্ছে থাকার পরও অলিম্পিয়াডের আগে দলের প্রস্তুতির দিকে দৃষ্টি দেয়া সম্ভব হয়নি’- গতকাল বলছিলেন গাজী সাইফুল তারেক। অতীতে এই অলিম্পিয়াড থেকেই বাংলাদেশি দাবাড়ুরা গুরুত্বপূর্ণ নর্ম, খেতাব লাভ করেছেন; অর্জন করেছেন রেটিং। এছাড়া ব্যক্তিগত বিভিন্ন সাফল্যও ছিল। ১৯৮৮ সালে গ্রিস অলিম্পিয়াডে সৈয়দ তাহমিদুর রহমান এবং ইয়াসমিন বেগম স্বর্ণ পদক লাভ করেন। ১৯৯২ সালে ম্যানিলা অলিম্পিয়াডে রোকসানা গুলশান নিক্কন রৌপ্য ও সৈয়দা শাবানা পারভীন নীপা পেয়েছেন ব্রোঞ্জপদক। একই অলিম্পিয়াডে জিয়াউর রহমান আন্তর্জাতিক মাস্টারের একটি নর্ম অর্জন করেন। ১৯৯৮ সালে মস্কো অলিম্পিয়াডে আবদুল্লাহ আল রাকিব সরাসরি আন্তর্জাতিক মাস্টার খেতাব লাভ করেন। ২০০২ সালে স্লোভেনিয়া অলিম্পিয়াডে গ্র্যান্ডমাস্টার নর্ম অর্জন করেন এনামুল হোসেন রাজীব। পরবর্তীতে তিনজনই গ্র্যান্ডমাস্টার খেতাব লাভ করেন। অতীতে অলিম্পিয়াডে জাকিয়া সুলতানা আন্তর্জাতিক মাস্টারের একটি নর্ম অর্জন করেন। এছাড়া বিভিন্ন অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশি দাবাড়ুরা ফিদে মাস্টার, ক্যান্ডিডেট মাস্টার খেতাব ও রেটিং লাভ করেছেন। অলিম্পিয়াডে সর্বশেষ উল্লেখ করার মতো বিষয় ছিল ২০০৮ সালে, মিনহাজুদ্দিন আহমেদ সাগর নর্ম করার কাছাকাছি পৌঁছেছিলেন। ০.৫ পয়েন্টের কারণে তা হয়নি। ২০১২ সালে ১৫৩ দেশের মধ্যে ৩৩ তম হয়েছিল পুরুষ দাবা দল। তবে গেল দুই বছর বলার মতো কোনো সফলতা পায়নি বাংলাদেশ দল। এবারও ভালো কিছুর প্রত্যাশা করা যাচ্ছে না। ‘একজন বিদেশী কোচের জন্য আমরা অনেক চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু স্বল্প সময়ে যোগাড় করতে পারিনি, কেউ এলেও মাত্র একমাস আগে আসতে পারবে। তাই আমরা বিদেশি কোচ বাদ দিয়ে আবাসিক ক্যাম্পের ব্যাবস্থা করেছিলাম অলিম্পিয়াডের জন্য। এ কারণেই তেমন প্রত্যাশা কম বলে জানান ফেডারেশন সাধারণ সম্পাদক শাহাবুদ্দীন শামীম। ফেডারেশনের সহ-সভাপতি ও অলিম্পিয়াডের টিম লিডার রুহুল আমিন তরফদার বলেন, মাত্র আড়াই মাস সময়ে আমরা রেটিং টুর্নামেন্টসহ দাবার অনেক সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। সামনে আরো অনেক উদ্যোগ আপনারা দেখতে পাবেন। খেলাটাকে ঢাকার বাইরে ভালোভাবে ছড়িয়ে দেয়ার যে চিন্তা আছে, সেটা সামনে রেখেই আমরা কাজ করছি। দাবাড়ু নিয়াজ মোরশেদের মতে ভালো ফলাফলের প্রত্যাশা করতে হলে যে বছর অলিম্পিয়াড থাকে সে বছর যেন আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট বেশি খেলার সুযোগ পায় সেটার দিকে খেয়াল রাখা উচিত।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.