যমুনা টিভি ও যুগান্তরের যৌথ উদ্যোগে গতকাল যমুনা ফিউচার পার্কের জারা-নেহা কনভেনশন সেন্টারে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের জন্য এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। কৃতী ছাত্রছাত্রী ও তাদের অভিভাবক এবং দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে এ অনুষ্ঠান এক কথায় ছিল বর্ণাঢ্য ও চিত্তাকর্ষক। কিশোর-তরুণ সমাজের অতি প্রিয় ব্যক্তিত্ব ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আআমস আরেফিন সিদ্দিক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধুরীসহ অন্যরা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি প্রকৃতপক্ষে তারুণ্যের উচ্ছলতা ও পরিপক্ব বুদ্ধিজীবীদের জ্ঞানগর্ভ কথার সংমিশ্রণে এক অপূর্ব মিলনমেলায় পরিণত হয়েছিল। আমন্ত্রিত বিশিষ্টজনরা একদিকে শুনিয়েছেন আশার কথা, উদ্দীপনার কথা, সর্বোপরি দেশপ্রেমের কথা। অন্যদিকে কৃতী ছাত্রছাত্রীরা বলেছেন তাদের নিজস্ব চিন্তাভাবনার কথা, এ দেশকে আরও উন্নত করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে তাদের দৃপ্ত অঙ্গীকারের কথা। ছাত্রছাত্রীরা পিনপতন নিস্তব্ধতার মধ্যে মুগ্ধ হয়ে শুনেছেন তাদের রোল মডেলদের কথা, শুনে উজ্জীবিত হয়েছেন, বুকে ধারণ করেছেন নতুন প্রত্যয়, নতুন প্রেরণা। সত্যিই তো, অতিথিরা যেমনটা বলেছেন- এ দেশে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বর্তমানে সাড়ে চার কোটি, যা এ বিশ্বের ৬০টি দেশের লোকসংখ্যার চেয়ে বেশি। এই সম্ভাবনাময় বিপুলাকার জনগোষ্ঠী যদি প্রকৃত শিক্ষার আলোকে আলোকিত হতে পারে, তাহলে এ জাতির অগ্রযাত্রা আর কে থামাতে পারে? অতিথিরা প্রকৃত শিক্ষা কী, তা-ও বলেছেন। তারা বলেছেন, একুশ শতকের শুরুতেই বলা হয়েছে, এই শতকের শ্রেষ্ঠ সম্পদ হল জ্ঞান। এই জ্ঞান যত বাড়বে, একটি দেশের সম্পদের ভাণ্ডার ততই সমৃদ্ধ হবে। আবার জ্ঞান শুধু মুখস্থবিদ্যা নয়, নয় নিছকই তথ্য, এর সঙ্গে যুক্ত হতে হবে সৃজনশীলতা, কল্পনাশক্তি। অনুষ্ঠানে সবচেয়ে মূল্যবান যে কথা উঠে এসেছে তা হল, শিক্ষার উদ্দেশ্য শুধু ব্যক্তিজীবনের সমৃদ্ধি ঘটানোই নয়, পরিবার-সমাজ-রাষ্ট্র, সর্বোপরি বিশ্বসভ্যতায় অবদান রাখাও এর লক্ষ্য হওয়া উচিত। আরও এক চমৎকার কথা বলেছেন ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার নিজ জীবনের অভিজ্ঞতা থেকে। তিনি বলেছেন, অন্যের জন্য কিছু করার যে আনন্দ, সেই আনন্দের কোনো তুলনা হয় না।
কৃতী ছাত্রছাত্রীরা অনুষ্ঠানে শুধু সম্মানসূচক সার্টিফিকেট ও ক্রেস্টই পাননি, পেয়েছেন একগুচ্ছ উপদেশ, যা তাদের পরবর্তী জীবনে বড় ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে আমরা বিশ্বাস করি। অনুষ্ঠানে তাদের প্রত্যয়দীপ্ত চেহারা দেখে তেমনটাই মনে হয়েছে। বিশেষত তারা যখন আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে তাদের ভবিষ্যৎ চিন্তার কথা বলছিলেন, তখন মনে হয়েছে অনুষ্ঠানটি সফল হয়েছে সর্বতোভাবে। অনুষ্ঠানে আগত শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গকে আমরা আবারও জানাই অভিনন্দন।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.