জাপানিরা একে তারার উৎসবও বলে থাকে।
কথিত আছে, আকাশগঙ্গা (মিল্কি ওয়ে) নামের এক নক্ষত্রপুঞ্জ তারার এক ‘প্রেমিকযুগল’কে বহুকাল আগে আলাদা করে দিয়েছিল এবং তখন বছরে শুধু একটি মাত্র দিনে তাদেরকে দেখা করার অনুমতি দেয়া হয়। আর সেই দিনটি হল সপ্তম চন্দ্র মাসের সপ্তমদিন, যা তানাবাতা নামে পরিচিত।
জাপানের সকল অঞ্চলে অবশ্য তানাবাতা একই দিনে উদযাপন করা হয়না, তবে জুলাই মাসের ৭ তারিখ থেকেই শুরু হয় তানাবাতা উদযাপন। অগাস্ট মাসেও চলে এই উৎসব আয়োজন।
সেন্দাই শহর তানাবাতা উদযাপনের জন্য বিখ্যাত, এখানে সপ্তাহব্যাপী চলে অনুষ্ঠান। এ সময় সেন্দাই সেজে উঠে সম্পূর্ণ নতুন সাজে। পুরো শহরকে বাহারি রঙের কারুকাজ করা কাগজে মোড়ানো হয়। কারুকাজ করা রঙ্গিন কাগজে ঢাকা থাকে থাকে দোকানপাট, রাস্তাঘাটও।
রাস্তায় বসে অস্থায়ী খাবার ও খেলনার দোকান। দূরদূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের পদচারনায় মুখর হয়ে উঠে সবকিছু, এ যেন এক ভিন্ন শহর!
দিনগুলোকে জাপানি প্রেমিক যুগলরা ভালোবাসা দিবস হিসাবে উদযাপন করে। জাপানি ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরে শপিং মল আর রেস্তোরাঁয় ঘুরে বেড়ায় অনেকে। একারণে এসব যায়গায় চোখে পড়ে উপচে পড়া ভিড়। দোকান ও রেস্তোরাঁগুলোতে আবার থাকে মূল্যছাড়।
এই উৎসবের বিশেষ আকর্ষণ হচ্ছে ‘হানাবি’ বা আতশবাজি। অনুষ্ঠানের কোন একটি সন্ধ্যায় নদীর ধারে ২ ঘন্টা ধরে চলে আতশবাজির খেলা। আকাশ ছেয়ে যায় আলোকসজ্জায়। বজ্রপাতের মত প্রচন্ড শব্দের আতশবাজির সঙ্গে ছেলেবুড়ো সকলে মিলে চিৎকার চেচামেচি আর হৈ-হুল্লোড়ের মাঝে আনন্দ উদযাপন করে।
এই শান্ত দেশের শান্ত শহরগুলোর এমন হঠাৎ করেই পরিবর্তিত রূপ দেখে বাংলাদেশের চিরাচরিত অনুষ্ঠান উদযাপনের কথা মনে করিয়ে দেয় বারবার।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.