আরও একটি টুর্নামেন্টের ফাইনাল। আরও একবার ম্যাচ গড়াল অতিরিক্ত সময়ে। কিন্তু এবার রোনালদো-ঝলকে উৎসবে ভাসল রিয়াল মাদ্রিদ! পর্তুগিজ ফরোয়ার্ডের হ্যাটট্রিকে জাপানের কাশিমা অ্যান্টলার্সকে ৪-২ গোলে হারিয়ে কাল ফিফা ক্লাব বিশ্বকাপ জিতল জিনেদিন জিদানের দল। তিন বছরের মধ্যে ট্রফিটা রিয়াল জিতল দ্বিতীয়বার। চ্যাম্পিয়নস লিগ ও উয়েফা সুপার কাপের পর বছরে যা লস ব্লাঙ্কোদের তৃতীয় ট্রফি। মজার ব্যাপার, আগের দুটিতেও ফাইনাল গড়িয়েছিল অতিরিক্ত সময়ে। ৪-২? স্কোরলাইনটা কত ভুলই না বোঝাচ্ছে! রিয়াল ম্যাচটা নিজেদের করে নিয়েছে তো অতিরিক্ত সময়ে ছয় মিনিটের রোনালদো-ঝড়ে। তার আগে ৯০ মিনিটজুড়ে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নদের সঙ্গে সমানতালে লড়ে গেছে কাশিমা, ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনালে ওঠা এশিয়ার প্রথম দল। এতটাই অভাবিত তাদের ফাইনালে ওঠা, কাল ইয়োকোহামা স্টেডিয়ামের অনেক দর্শকের হাতের স্কার্ফে রিয়ালের সঙ্গে লেখা ছিল টুর্নামেন্টপূর্ব আরেক ফেবারিট ‘অ্যাটলেটিকো ন্যাসিওনালে’র নাম। ফাইনালে ওঠা নিয়েই যেখানে এত সংশয়, কাশিমা যে রিয়ালের সঙ্গে লড়াই করবে সেটিই বা কে ধারণা করেছিল! ম্যাচের নবম মিনিটেই রিয়ালের সামনে কাশিমার উড়ে যাওয়ার শঙ্কাটা আরও জেঁকে বসে। বক্সের বাইরে থেকে লুকা মডরিচের শট ফিরিয়ে দেন কাশিমা গোলকিপার সোগাহাতা, কিন্তু তা পড়ে বেনজেমার পায়ে। ফাঁকা পোস্টে বল জড়িয়ে দিতে সমস্যা হয়নি ফ্রেঞ্চ স্ট্রাইকারের। কিন্তু ম্যাচটা বদলে গেল এরপরই, যা জিদানের মোটেও পছন্দ হওয়ার কথা নয়। গোলটা করেই রিয়াল দিল ‘ঘুম’, অন্যদিকে কাশিমা যেন জেগে উঠল। ফ্লিক, ব্যাক হিল, ডামিতে নিজেদের ফুটবল দক্ষতাকেও ফুটিয়ে তুলছিল। সমতায়ও ফেরে ৪৪ মিনিটে, পুরো ম্যাচে দুর্দান্ত খেলা শিবাসাকির গোলে। বিরতিতে রিয়ালের সঙ্গে সমতায় কাশিমা, এমন বিস্ময়ের ঘোর তখনো অনেকের কাটেনি। বিরতির পরপরই আবার ধাক্কা। আবার শিবাসাকির দুর্দান্ত গোল! তিন ডিফেন্ডারের চ্যালেঞ্জ এড়িয়ে বক্সের বাইরে থেকেই দুর্দান্ত শটে ফাঁকি দিলেন রিয়াল গোলকিপার নাভাসকে। কাশিমা ২, রিয়াল ১! তবে রিয়াল-ভক্তদের সৌভাগ্য, পিছিয়ে পড়েই হুঁশ ফেরে রিয়ালের। জেগে ওঠে আভিজাত্যবোধ। জেগে ওঠেন রোনালদো! প্রথমার্ধে বেশির ভাগ সময়ই বল নিয়ে কারিকুরি করতে গিয়ে উল্টো বল হারিয়েছেন, কখনো হয়তো তাঁর কারণেই থিতিয়ে গেছে আক্রমণ! কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে নিজের ভুল শুধরে নেন পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড। ৫৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে প্রথম গোলটি করে রিয়ালকে সমতায়ও ফেরান। এরপরই হলো সবচেয়ে দুর্দান্ত ফুটবল। কাশিমা আক্রমণে যায়, তো তেড়েফুঁড়ে আসে রিয়ালও। কিন্তু গোলমুখে ধারটা বেশি ছিল রোনালদোদেরই। বিতর্কও ছিল তাঁদের ঘিরে। একটা ফাউল করার পর সার্জিও রামোসকে হলুদ কার্ড দেখাতে যান রেফারি, পকেটে হাতও চলে গিয়েছিল তাঁর। কিন্তু আগেই এক হলুদ কার্ড দেখা রিয়াল অধিনায়ককে পরে কার্ডটি আর দেখাননি। সেটি ম্যাচের ভাগ্য হয়তো বদলে দিতে পারত। তা হয়নি। অবশ্য রোনালদো ঠিক করেই রেখেছিলেন, আলোটা নিজের দিকেই টেনে নেবেন। ৯৮ মিনিটে বেনজেমার পাস থেকে করেন নিজের দ্বিতীয় গোল, ছয় মিনিট পর ক্রুসের পাস থেকে হ্যাটট্রিক। তাতেই নিশ্চিত রিয়ালের জয়। নিজের চতুর্থ ব্যালন ডি’অর জিতে সপ্তাহটা শুরু করেছিলেন। টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে করেছিলেন ক্লাব ফুটবলে নিজের ৫০০তম গোল। কাল সপ্তাহটা শেষ করলেন ক্লাবকে বিশ্বসেরার স্বীকৃতি এনে দিয়ে। সপ্তাহটা মন্দ কাটেনি রোনালদোর! সূত্র: নিও স্পোর্টস। এক নজরে গোল্ডেন বল ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো সিলভার বল লুকা মডরিচ ব্রোঞ্জ বল গাকু শিবাসাকি ফেয়ার প্লে অ্যাওয়ার্ড কাশিমা অ্যান্টলার্স ২৩ আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সবচেয়ে বেশি ট্রফি রিয়াল মাদ্রিদের। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২২টি বার্সেলোনার। ৪০ কাশিমার বিপক্ষে গতকালের হ্যাটট্রিকটি ছিল রিয়াল মাদ্রিদের ৪০তম
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.