শিক্ষাক্ষেত্রের সব পর্যায়ে অন্য জাতিগোষ্ঠীকে ছাপিয়ে গেছেন বৃটেনে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা। কিন্তু তারা বৃটেনে শীর্ষ স্থানীয় পদগুলোতে কাঙ্ক্ষিত চাকরি পাচ্ছেন না। ম্যানেজার বা পেশাগত শীর্ষ পদগুলোর জন্য তাদের লড়াই চালিয়েই যেতে হচ্ছে। এর কারণ কর্মক্ষেত্রে বৈষম্য। এ ধারা শুধু বাংলাদেশিই নয়, এশিয়ার অন্য দেশের শিক্ষার্থীরাও একই অবস্থার শিকার। নতুন এক গবেষণায় এ কথা বলেছে লন্ডনের সোশাল মবিলিটি কমিশন। এটি বৃটিশ সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান। এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য গার্ডিয়ান। এতে বলা হয়েছে, শিক্ষার সব ক্ষেত্রেই বাংলাদেশি ও পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত ছেলেমেয়ে অন্য জাতিগোষ্ঠীকে ছাপিয়ে যাচ্ছেন। দ্রুততার সঙ্গে তারা শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নতি করছেন। কিন্তু শ্বেতাঙ্গদের তুলনায় তারা ভালো চাকরি পাচ্ছেন কম। এসব ক্ষেত্রে তারা বৈষম্যের শিকার হচ্ছে, বিশেষ করে এমন বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন মুসলিম নারীরা। বুধবার এ বিষয়ে ওই কমিশনের একটি রিপোর্ট দেয়ার কথা রয়েছে। এ কমিশনের চেয়ারম্যান অ্যালান মিলবার্ন। তিনি বলেছেন, অশ্বেতাঙ্গ গ্রুপের মানুষের জন্য সমান ক্ষেত্র তৈরিতে বৃটেনকে অনেকটা পথ যেতে হবে। এ ক্ষেত্রে যেসব বাধা আছে তা ভেঙে দিতে জরুরি পদক্ষেপ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি। তিনি বলেন, কঠোর শ্রমকে পুরস্কৃত করতে হবে। স্কুল পর্যায়ে যেসব ছেলেমেয়ে খুব ভালো করছে কর্মক্ষেত্রে তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। বিস্তৃত পরিসরে মিলবার্ন গ্রুপের পক্ষে এ গবেষণা রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে। তাদের জন্য এটি সম্পাদন করেছেন এলকেএমকো এবং এডুকেশন ডাটাল্যাব। এতে অন্য জাতিগোষ্ঠী ও সামাজিক গ্রুপের বিষয়ে কড়া সতর্কতা দেয়া হয়েছে। তারা আরো দেখতে পেয়েছে অতি দরিদ্র ও তার থেকে উন্নত পরিবারের শিক্ষার্থীদের পারফরমেন্সের মধ্যে বিরাট ব্যবধান আছে। সব স্কুলে শ্বেতাঙ্গ শ্রমজীবী শিক্ষার্থীদের চেয়ে ইংরেজি পরীক্ষা অনেক ভালো করছে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের শিক্ষার্থীরা। জিসিএসই পরীক্ষায় নিচের সারিতে অবস্থান করছে বৃটেনের শ্বেতাঙ্গ টিনএজাররা। তাদের মধ্যে প্রতি ১০ জনে একজন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে যায়। এক্ষেত্রে প্রতি ১০ জন বাংলাদেশির মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার সংখ্যা ৫ জন। ক্যারিবীয় অঞ্চলের কৃষ্ণাঙ্গদের মধ্যে এ হার প্রতি ১০ জনে তিনজন। চীনের বেলায় ১০ জনে ৭ জন। এক্ষেত্রে বৃটিশ শ্বেতাঙ্গদের অনেক পিছনে ফেলেছেন এসব স্থানের শিক্ষার্থীরা। ওই রিপোর্টে কৃষ্ণাঙ্গ পরিবারগুলোকে সতর্ক করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে এ গ্রুপের ছেলেমেয়েরা স্কুলে গিয়ে মোটামুটি একটি মানের পড়াশোনা করছে। কিন্তু তারা জিসিএসই পরীক্ষায় সবচেয়ে বাজে পারফরমেন্স করছে অংকে। জিসিএসই পরীক্ষায় অংকে সি পায় শতকরা ৬৩ ভাগ শিক্ষার্থী। জাতীয় পর্যায়ে এ হার শতকরা ৬৮। এ লেভেলে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিতে অবস্থা আরো খারাপ। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, কৃষ্ণাঙ্গ শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের পড়ালেখা থেকে ড্রপআউট বা পড়াশোনা বাদ দেয়ার হার শতকরা ১১ ভাগ। চীনাদের মধ্যে শতকরা ৫ ভাগ। এশিয়ার অন্য দেশ ও শ্বেতাঙ্গ আন্ডারগ্র্যাজুয়েটদের মধ্যে এ হার শতকরা ৭ ভাগ।