নতুন বছর নিয়ে অনেক উৎসাহ-উদ্দীপনা থাকে। এর সঙ্গে নিজের ও পরিবারের সুস্বাস্থ্য নিয়ে নতুন কিছু প্রত্যয় আর চিন্তাভাবনা থাকলে কেমন হয়? গেল বছরটা না হয় ছিল যেনতেন রকমের। যা যা এখনো করা হয়ে ওঠেনি বা শুরুই করা হয়নি করব করব বলে, সেগুলো না হয় নতুন বছরেই শুরু করলেন।
নতুন খানাপিনা
আমাদের উৎসব, আনন্দ, সামাজিকতার অনেকটা জুড়ে রয়েছে খানাপিনা। যেকোনো উদ্যাপনে বিরিয়ানি খেতে চাই, পরীক্ষার ফল বেরোলে কি শুভ সংবাদে মিষ্টিমুখ করি। কিন্তু ভেবে দেখুন, সময় পাল্টাচ্ছে। স্বাস্থ্যসচেতেনতা বাড়ছে। এবার বরং নতুন কিছু ভাবা যাক। কারও বাড়িতে বেড়াতে গেলে মিষ্টি দইয়ের হাঁড়ি নিতে হবে, এমন দিব্যি কে দিয়েছে? ও বাড়িতে হয়তো কেউ ডায়াবেটিসের রোগী, কেউ হয়তো ওজন কমাতে চাইছেন। তার চেয়ে বরং এক ব্যাগ ফলমূল নিয়ে যেতে পারেন। অতিথি আপ্যায়নে সব সময় পোলাও-রোস্ট-রেজালাই করতে হবে, নয়তো সম্মান থাকে না—তা কে বলল? ভাত, রুটি, মাছ, সবজি, ভর্তা, ডাল করেই দেখুন না অতিথিরা কেমন তৃপ্ত হয়ে খাচ্ছেন। দোকান থেকে আনা কোমল পানীয়র বদলে বাড়িতে তৈরি ফলের রস, লেবুর শরবত দিয়ে আপ্যায়ন করলে আন্তরিকতাও বাড়ে। মেহমান এলে পরিবেশন করুন ফলমূল, বাদাম বা বাড়িতে তৈরি ছোলামুড়ি-চটপটির মতো নাশতা। তবু হাঁটুন গেল বছর হাঁটাচলাটা নিয়মিত করা হয়ে ওঠেনি। নতুন বছরে চরম ব্যস্ততার মধ্যেও প্রতিদিন নিজের জন্য কেবল ২০ মিনিট সময় বের করুন। হয় হাঁটুন, নয়তো ঘরে বসে খানিকটা ফ্রি হ্যান্ড এক্সারসাইজ বা পরিশ্রম হয় এমন কোনো শখ, যেমন বাগান করা বা ব্যডমিন্টন খেলা শুরু করে দিন। অফিস থেকে বেরিয়ে খানিকটা হেঁটে তারপর রিকশা বা বাস নিন, লিফট বাদ দিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠুন। ঘরের কাজে হাত মেলান। ঘর গোছানো, জিনিসপত্র ঝাড়া, বাসনপত্র ধোয়ার কাজেও অনেক ক্যালরি ক্ষয় হয়। শিশুদেরও ঘরের কাজে উৎসাহিত করুন। পড়ার চাপে ওদের খেলাধুলায় নিরুৎসাহিত করবেন না মোটেও। কেননা স্বাস্থ্য নষ্ট হলে যে সবই মাটি। নিজের জন্য ব্যয় মধ্যবিত্তের সংসারে উটকো খরচ কষ্টকর বৈকি। তবে ভেবে দেখুন, হঠাৎ অসুস্থ হলে অনেকগুলো টাকা পানির মতো বেরিয়ে যাবে। তার চেয়ে সুস্থ থাকার জন্য কিছু বিনিয়োগ করা ভালো। এ বছর নিজের দু-একটা স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে নিন। ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, রক্তে চর্বির আধিক্য আজকাল কম বয়সেই আকসার হচ্ছে। এগুলো পরে হৃদরোগ, মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ (স্ট্রোক), দৃষ্টিহীনতা, কিডনি অকার্যকারিতার ঝুঁকি বাড়ায়। তাই আগেই সতর্ক হওয়া ভালো। আর হ্যাঁ, বছরের প্রথম দিনে নিজেকে কথা দিন, আর কখনোই ধূমপান করবেন না।
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Save my name, email, and website in this browser for the next time I comment.