প্রচণ্ড খরতাপে এখন সাধারণ জ্বরকে হিটস্ট্রোক মনে করে ভিড় বাড়ছে শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তারদের চেম্বারে। তবে অতিরিক্ত গরমে বাইরের পরিবেশে শিশুদের না নিয়ে বেরনোই ভালো। কারণ, মাত্রাতিরিক্ত গরমে বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুদেরও হিটস্ট্রোক, ডি–হাইড্রেশন হওয়ার প্রবল আশঙ্কা থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে সেটাকে আবার অনেকে সংক্রমণ মনে করে ভুল করেন। তবে যে সব শিশুর মস্তিষ্কে সমস্যা বা ব্রেন ডিসঅর্ডার রয়েছে, তাদের শরীরের তাপমাত্রা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে যায় বলে মত চিকিৎসকদের। অনেক অভিভাবকরা জ্বর মনে করে উদ্বিগ্ন হয়ে ছুটছেন বিশেষজ্ঞদের কাছে।
শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, সাধারণত মানুষের শরীরের তাপমাত্রা ৯৮.৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট। এখন বাইরের তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মতো। শরীরের তাপমাত্রা এবং পরিবেশের তাপমাত্রা মিলে খুব স্বাভাবিকভাবেই শরীরের তারপমাত্রাও বেড়ে যায়। ১০০ বা তার একটু বেশি মাত্রায় বাড়লেও মনে রাখতে হবে বাড়তি যে মাত্রা সেটি তার শরীরের ডিগ্রি ফারেনহাইট। এরকম অবস্থায় অনেকেই ভয় পেয়ে যান। বিশেষ করে যে সব শিশুর ব্রেন ডিসঅর্ডার রয়েছে, তাদের শরীরের তাপমাত্রা খুব তাড়াতাড়ি বেড়ে যায়। কারণ, মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস গ্রন্থি শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। তখন বাবা–মায়েরা উল্টে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এরকম অবস্থায় শিশুদের কোনো ঠাণ্ডা জায়গায় নিয়ে বসাতে হবে। ভালো করে গোসল করাতে হবে এবং বেশি করে বারে বারে পানি পান করাতে হবে। কিন্তু অনেক বেশি পরিমাণে তাপমাত্রা বেড়ে গেলে যেমন ১০৫, ১০৭ ডিগ্রি হয়ে গেলে সেটি অবশ্যই চিন্তার কারণ। শিশুদের ক্ষেত্রে অতি সাবধানী হওয়া প্রয়োজন বলে মত চিকিৎসকদের। গরমে ডি–হাইড্রেশন, হিট স্ট্রোকের মতো সমস্যা, ত্বকে অ্যালার্জি প্রভূত দেখা যায়। গরমে শরীরে সোডিয়াম, পানির মাত্রাও কমে যায়। তাই গরমে কী করতে হবে তা নিয়ে চিকিৎসকদের দেয়া কিছু পরামর্শ—
বেশি করে পানি খাবেন। বারে বারে নুন–চিনির পানি খাওয়া প্রয়োজন।
তেল–ঝাল–ভাজা–মশলা জাতীয় খাবার বোতলবন্দী পানীয় এড়িয়ে চলুন।
সবুজ শাকসবজি খাবেন। দুপুরে হালকা–পাতলা মাছের ঝোল খাওয়া যেতে পারে। তবে বেশি মাংস, ডিম খাবেন না।
অযথা রোদে বেরোবেন না।
হালকা সুতির ঢিলেঢালা পোশাক পরবেন।
ছাতা, রোদচশমা ব্যবহার করুন।
ভাল করে নাক–মুখ কাপড় দিয়ে ঢেকে বেরবেন। সরাসরি রোদের তাপ শরীরের ত্বকে যাতে না লাগে, খেয়াল রাখবেন।
টকদই, পানি জাতীয় ফল যেমন আঙুর, তরমুজ, শশা, বাঙ্গি প্রভৃতি খাবেন।
দিনে অন্তত দুবার গোসল করবেন। বারবার ভিজে নরম কাপড় দিয়ে গা মুছবেন।
বাইরে থেকে এসে চট করে এ সি–তে প্রবেশ করবেন না। সঙ্গে সঙ্গে ঠাণ্ডা পানি খাবেন না।